Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

মার্গে অনন্য সম্মান মিতা দাস বিশ্বাস (সেরা)

maro news
মার্গে অনন্য সম্মান মিতা দাস বিশ্বাস (সেরা)

অনন্য সৃষ্টি সাহিত্য পরিবার

সাপ্তাহিক প্রতিযোগিতা পর্ব - ১০৪ বিষয় - গৃহিনী গৃহিণী কথাটার মধ্যে একটা বিরাট মানে লুকিয়ে আছে।ঘর যে সামলায় সেই তো গৃহিণী।কেউ শুধু গৃহিণী কেউ সুগৃহিনী।তার সে যাই হোক না কেন আমরা মেয়েরাই এই উপাধিটা গ্রহন করি ।সেই ছোট্ট বেলা থেকে মা পড়াশোনার পাশে পাশে ঘরকন্নার কাজটাও মেয়েকে শেখাতে থাকেন।আগে তো ছোটোবেলায় খেলনা বাটি দিয়ে শুরু হতো শিশুবেলা। পড়ালেখা করে বাড়ির এককোনে সংসার পাততাম খেলনা বাটি আর পুতুল নিয়ে। আমার মতো আরো পাঁচটি মেয়ে আসত।তখন থেকেই মাকে নকল করে রান্না করা , পুতুল খেলা সব হোতো।এই করতে করতে বড়োবেলায় কখন যেন পা দিয়ে দি আমরা মেয়েরা। কিছু মেয়ে ছোটো থেকেই উঠোন ঝাঁট দেওয়া ,বাসন ধোয়া,টুকটাক রান্না করা শুরু করে।চৌদ্দ, পনেরো বছরে ওরা সব কাজে একদম চৌকস হয়ে যায়।যখন পাত্র পক্ষ আসে তখন মা বলে আমার মেয়ে সব পারে আপনার সংসারের সুগৃহিনী হবে আমার মেয়ে। পাত্রপক্ষ নিশ্চিন্ত হয়। শ্বাশুড়ি বলে যাক বাবা শান্তি পেলাম। আর বাপের দুলালীরা পড়াশোনা শেখে ।হাতের সুচিশিল্প বা রান্না বান্না তে চৌকস নয় ।ঐ কোনোরকমে ভাতটা ফোটাতে পারে।তার মধ্যে সেদ্ধ আর ডাল। ওরে বাবা উঠতে বসতে খোঁটা খেতে হয় ।বৌমা বাবা,মা কিছুই শেখেনি? তোমাকে ঘরকন্যা শেখাতে আমার জীবন যাবে। মেয়ে হয়ে জন্মেছ যখন বিদ্যাধরি হয়ে লাভ কি ? সংসারের কাজটা তো শিখতে পারতে। চোখের জলে মেয়ের দিন কাটে। একদিন সেও কিন্তু সুগৃহিনী হয়। নিপুণ হাতে ছেলেপুলে সামলায় ,ঘর সামলায় অবশেষে স্বামী সামলায়।গৃহিনীর সংজ্ঞাটা ঠিক কি?একটা মেয়ে দশভুজা হবে। পড়াশোনা, চাকরি করে নিজের একটা পরিচয় থাকলে কিছু কি অপরাধ হয় ? শৃঙ্খলবদ্ধ নারী পরিবারের মন রাখতে রাখতে একদিন চোখ বোজে।ঐ অন্ধকারে ফোঁটা গোলাপটার মতো।গন্ধতে বাড়ি ম ম করছে কিন্তু ফুলটাকে কেউ দেখতে পাচ্ছে না।বেগম রোকেয়ার সুগৃহিনী প্রবন্ধটাতে উনি লিখেছিলেন শৃংখলআবদ্ধ নারী উড়তে দাও ও ডানা মেলুক আকাশে। কিন্তু গেল গেল রব টা সামলাবে কজন।কজন পুরুষ আছে যারা তার স্ত্রীর সাথে হাতে হাত দিয়ে কাজ করে?কজন পুরুষ হাসিমুখে স্ত্রীর সাফল্য এনজয় করে? পুরুষ শাসিত সমাজে নারী অনেক সংগ্রাম করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে। নিজের পরিচয় বানায় । আমার মতে গৃহিনী সেই যে জীবনে সফল।শিক্ষার আলো ঘরে ঢুকেছে তাই মেয়ে তুমি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করো। নিজের পরিচয় তৈরি করো।গৃহিনী নয় শ্রেষ্ঠ নারী হও।যে নারী বাইরে বেরিয়ে কাজ করে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পুরুষের সাথে সে কিন্তু ঘরও সামলায়। কর্মক্ষেত্র থেকে ফিরে সে সন্তান,স্বামী ,সংসার সব দেখে। মুখে ক্লান্তি থাকলেও চোখে আশ বাড়ির সবাই ভালো থাক।এই তো সার্থক গৃহিণী।এই তো দশভুজা। গৃহিণী শব্দটার অপভ্রংশ হয়েছে। গৃহিণী মানে তেল হলুদ মাখা কাপড় ,ঘাড় নীচু করা অবদমিত এক নারী রে কিনা সংসারের সবার কাছে উপেক্ষিত। গৃহিণী বলতে সেই নারী চোখে ভাসে আলতাপড়া রাঙা পা ফেটে গেছে যত্নের অভাবে। মাথা ভর্তি সিঁদুর , কাপড়ে রান্নার গন্ধ,মাছের বেঁচে থাকা অংশটা যার পাতে তাকে ই গৃহিণী বলে বাড়ির কর্তা। কিন্তু আমার প্রশ্ন একটাই গৃহিণী সে নয় কেন যে বন্ধ্যা , গৃহিণী সে নয় কেন যে পঙ্গু স্বামীর সেবা করতে শরীর বেচে , গৃহিণী সে নয় কেন যে স্বামী পরিতক্তা? আসলে সব মেয়েই সংসারের প্রত্যাসী তাই পুরুষ তার নিজের স্বার্থে কতোগুলো শব্দ তৈরি করেছে।আর লিখব না শুধু বলি আমিও গৃহের রানী বা ঋনী যাই বলুক সমাজ কিন্তু আমি পায়ে শিকল পরি নি । নিজের পরিচয় নিজের জগৎ নিজে তৈরি করেছি। হ্যাঁ স্বামী, সন্তান সবাই আছে।ওরা আমার বন্ধন আমার কর্তব্য । তবে কি আমি গৃহিণী নয়?
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register