Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাসে সমীরণ সরকার (পর্ব - ৫১)

maro news
ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাসে সমীরণ সরকার (পর্ব - ৫১)

সুমনা ও জাদু পালক

সুমনা চন্দ্রকান্তার কাছে এগিয়ে এসে জিজ্ঞাসা করল, রাজকুমারী, তোমার হাতে যে লতাটা আছে, ওটাই কি সেই লতা? ------ হ্যাঁ রাজকুমারী রত্নমালা। বহুক্ষণ ধরে তন্ন তন্ন করে খুঁজে তবে এই লতার সন্ধান পেলাম। একসময় তো আমি চিন্তায় পড়ে গেছিলাম যে, হয়তো আমার কথা আমি রাখতে পারব না। সবার কাছে অবিশ্বাসী হয়ে যাব আমি। অবশেষে পাহাড়ের মাথায় একটা বড় প্রস্তরখণ্ডের আড়ালে এই লতাটা খুঁজে পেলাম। ---- বাহ! বানর রাজকুমার সুস্থ হয়ে যাক ,¡এটাই ঈশ্বরের ইচ্ছা । রাজকুমারী চন্দ্রকান্তা, তাহলে আর দেরি করো না ,যাও, রাজকুমারের চোখে ওষুধ প্রয়োগ করে ওকে সুস্থ করে তোলো। ---- অবশ্যই। কিন্তু,..... ------কী? ------ তুমিও আমার সঙ্গে বানররাজের কাছে চলো। ----- কেন? ------ বানররাজ হয়তো আমাকে বিশ্বাস নাও করতে পারেন। হয়তো রাজকুমারের চোখে এই লতার মূলের রস লাগাতে আপত্তি করতে পারেন। ----- হুম । ঠিক আছে। চলো, আমিও তোমার সঙ্গে যাব। সুমনা ও রাজকুমারী চন্দ্রকান্তা বানর রাজকুমারের মাথার কাছে গিয়ে বসতেই মহারানী তারা চোখ খুলে তাকালেন। চন্দ্রকান্তার হাতে শিকড় সমেত লতা দেখে তিনি বললেন, তুমি কি সেই লতা খুঁজে পেয়েছো রাজকুমারী চন্দ্রকান্তা,? ----- হ্যাঁ, আমার হাতে সেই লতাটাই ধরা আছে। ------ আমার রাজকুমার কি তাহলে সুস্থ হয়ে উঠবে? ----- আমি চেষ্টা করব মহারানী তারা, বাকিটা ঈশ্বরের হাতে। ততক্ষণে বানর রাজ মহাগ্রীব ওদের কাছে চলে এসেছে। চন্দ্রকান্তার হাতে ধরা লতাটা দেখে বললেন, "এই লতার মূল তো দেখে মনে হচ্ছে খুব শক্ত। এর থেকে রস বের করতে গেলে তো তোমায় বিশেষ কোনো পদ্ধতির সাহায্য নিতে হবে।" ----- আপনি ঠিকই বলেছেন হে বানর রাজ। ওই মূল থেকে রস বের করার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আমি এনেছি। কিন্তু তার আগে আপনি দয়া করে কাউকে আদেশ করুন যে, রাজপ্রাসাদের অভ্যন্তর থেকে স্বর্ণ নির্মিত অথবা রৌপ্য নির্মিত দুটি পাত্র যেন আমাকে এনে দেয়। ওই দুটি পাত্রের মধ্যে একটিতে কিছুটা পরিষ্কার জল নিয়ে আসতে হবে। ----- বেশ ,আমি এক্ষুনি তার ব্যবস্থা করছি। কথা শেষ করেই বানর রাজ তার ঠোঁটের সামনে হাতের তালু লাগিয়ে একটা অদ্ভুত জোরালো আওয়াজ করলেন। সেই আওয়াজ গুহা অভ্যন্তরে বারবার প্রতিধ্বনিত হতে থাকলো। কিছুক্ষণের মধ্যেই একটি বৃদ্ধ বানর সামনে এসে দাঁড়ালো। বানররাজ তাকে বললেন, তাড়াতাড়ি দুটো স্বর্ণনির্মিত পাত্র নিয়ে এসো। একটি পাত্রে কিছুটা পরিষ্কার জল এনো ।যাও,সত্বর নিয়ে এসো। বৃদ্ধ বানরটি হাতজোড় করে ঈষৎ মাথা ঝুঁকিয়ে দ্রুত পায়ে স্থান ত্যাগ করল । কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই বৃদ্ধ বানরটি দুটি স্বর্ণপাত্র এনে হাজির করল। একটি পাত্রে কিছুটা জল ।বানররাজ পাত্রদুটি বৃদ্ধ বানরটির কাছ থেকে নিয়ে তুলে দিলেন রাজকুমারী চন্দ্রকান্তার হাতে। তাকে রস নিষ্কাশন প্রক্রিয়াটি দ্রুত শুরু করার জন্য অনুরোধ করলেন। রাজকুমারী চন্দ্রকান্তা তার পোশাকের অভ্যন্তর থেকে তিন টুকরো প্রস্তরখন্ড বের করল। দুটি প্রস্তরখণ্ড ছোট হলেও অনেকটা গোলাাকৃতি। একটি প্রস্তরখণ্ড ঈষৎ চ্যাপ্টা। সেটির এক প্রান্ত মোটা হলেও অপর প্রান্ত বেশ পাতলা, ধারালো কুঠারের অগ্রভাগের মত। রাজকুমারী চন্দ্রকান্তা ওই ধারালো পাথরের সাহায্যে মূল লতা থেকে রক্তবর্ণ শিকড় গুলিকে বিচ্ছিন্ন করলেন। পাত্রের জলে সেগুলোকে ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করলেন। তারপর আবার ওই ধারালো প্রস্তরখণ্ডের সাহায্যে রক্তবর্ণ মূলগুলিকে টুকরো টুকরো করলেন। এরপর টুকরো করার শিকড় গুলোর কিছুটা নিয়ে, দুটি প্রস্থের খন্ডের ফাঁকে রেখে ,হাতের তালুর সাহায্যে প্রস্তর টুকরো দুটির উপরে প্রচন্ড জোরে চাপ দিতে শুরু করলেন। ওই প্রচন্ড চাপে শিকড় গুলো থেকে রক্তবর্ণ রস নির্গত হতে শুরু করল ফোঁটা ফোঁটা করে। রাজকুমারী চন্দ্রকান্তা তাড়াতাড়ি শূণ্য স্বর্ণপাত্রে সেই রক্তবর্ণ রস সংগ্রহ করলেন। চলবে
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register