Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

হৈচৈ গল্পে কুণাল রায়

maro news
হৈচৈ গল্পে কুণাল রায়

বৃষ্টির দিন

সকাল থেকেই আকাশের মুখ ভার। নীল আকাশে বাসা বেঁধেছে একরাশ কালো মেঘ। বিদ্যুতের ঝলকানি। গর্জনের শব্দে মাঝে মধ্যেই কেঁপে উঠছে বুক। তবে শ্রাবণের ধারা সৃষ্টি করে এক অনাবিল আনন্দ ধারা। এক ভিন্ন আমেজ। এক সম্পূর্ণ রকমের আলাদা ভালোলাগা। ভালোবাসাতো থাকবেই সেখানে। পড়াশুনোর পালা চুকিয়ে বসার ঘরের জানলার সামনে বসে আছি আমি। পৈতৃক ভিটে। জানলার রড গুলোতে জং ধরেছে। তাতে কিছু আসে যায় না। পছন্দ ও ভালোলাগা সব সময় কোন যুক্তি তর্কের ধারধারে না। যাই হোক সে এক ভিন্ন স্বাদের অনুভূতি। ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। একটু পরেই শুরু হল বৃষ্টি। প্রথমে টাপুর টাপুর। নূপুরের ছন্দে। গানের তালে। সেতারের মূর্ছনায়। কিছু সময় পর মুষল ধারায় নামল বৃষ্টি। প্রকৃতি পেল এক নবীন ভাষা। গাছের পাতার থেকে টপ টপ করে পড়ছে জল। বইছে বাতাস। বাতাসের কাঁধে চেপে বাড়তে লাগল বৃষ্টির তান্ডব! বাড়ির সামনের গলিটা জলমগ্ন। বাড়ির উঠোনে ঢুকে পড়েছে জল। খানিকটা বারান্দায়। কিন্তু ভাঁটা পড়েনি আনন্দে, উল্লাসে। হঠাৎ পেছন থেকে কে যেন ডাকল আমায়? ঘুরে দেখি মা। বিরক্ত। বকাবকি। বেলা হয়ে গেছে। স্নান করেনি কেন? এক প্রকার তাড়া দেওয়া! ভয়ে স্নান করে দুপুরে আহারের পালা। মেনুতে খিচুড়ি, ইলিশ মাছ ও ডিম ভাজা। আজও যেন মুখে লেগে আছে। ওই হাতের স্বাদ কোনোভাবেই ভোলার নয় ! দেখতে দেখতে বৃষ্টির দাপট থামল। মেঘের কোল থেকে উঁকি মারছে রবি কিরণ। আজ সেই দিন অতীত। হারিয়েছি বহু কিছু। পাইনি কিছুই। শুধু পেয়েছি একাকীত্ব, হতাশা ও এক নির্ভেজাল লড়াই , অস্তিত্ব রক্ষার প্রয়োজনে। বৃষ্টি আসে আজও। শ্রাবণের ধারা জাগায় এক শিহরণ আজও। তবে প্রকৃতির মাঝে। এই হৃদয় রিক্ত আজ। কোনো অনুভূতি বা আবেগ সেই ভাবে স্পর্শ করে না আজ। ঘড়ির কাঁটা ঘুরছে। কেটে যাচ্ছে সময় নীরবে। কিছুই করবার নেই নতুন করে। তবে জীবনতো চলবেই। তাই বেঁচে থাকাটা এক অভ্যেস হয়ে গেছে। অন্তর থেকে নেই কোন প্রয়াস! এক অকপট স্বীকারোক্তি!!

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register