Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাসম্পাতে সিদ্ধার্থ সিংহ (পর্ব - ৩২)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাসম্পাতে সিদ্ধার্থ সিংহ (পর্ব - ৩২)

কেমিক্যাল বিভ্রাট

সেই ফোন রাখতে না রাখতেই তৃণার ফোন। বিশ্বজয়ের আত্মতৃপ্তি তাঁর স্বরে। তিনি বললেন, শুনেছিস?

— কী?

— আমার মেয়ে জয়েন্টে প্রথম হয়েছে।

জবালা অবাক। বাবা, এ তো রেয়ার ঘটনা। হ্যাঁ, জয়েন্টে যৌথ ভাবে দু’জন ফার্স্ট হতেই পারে। কিন্তু সেই দু’জনই যে তাঁর অতি ঘনিষ্ঠ দুই বন্ধুর ছেলেমেয়ে এবং সেই দু’টি ছেলেমেয়েকেও যে তিনি চেনেন, এটা সত্যিই খুব কাকতালীয়...

তৃতীয় যে কোনটা এল, সেটা ধরতেই জবালার ভ্রু কুঁচকে গেল। এটা আবার হয় নাকি? তিনি ঠিক শুনছেন তো! লেখনীর ওই হাবাগোবা, প্রতি বছর ক্লাসের মধ্যে সব চেয়ে কম নম্বর পেয়ে, টেনেটুনে, কোনও রকমে ক্লাসে ওঠা ছেলেটাও জয়েন্টে প্রথম হয়েছে! তিনি ঠিক শুনছেন তো!

তিনি যে ঠিক শুনছেন, সেটা তার পরের, তার পরের এবং তারও পরের ফোনটা পেয়েই নিশ্চিত হয়ে গেলেন জবালা। কারণ, যে ক’টা ফোন পেলেন, তাঁরা প্রত্যেকেই জানালেন, তাঁদের ছেলে বা মেয়ে এ বার জয়েন্ট এন্ট্রান্সে ফার্স্ট হয়েছে।

তবু হান্ড্রেড পারসেন্ট কনফার্ম হওয়ার জন্য যিনি কখনও সকালে টিভি খোলেন না, সেই জবালাই এ বি পি আনন্দ খুলে বসলেন। এবং শুনলেন— অভূতপূর্ব ঘটনা। এ বার জয়েন্ট এন্ট্রান্সে যে বারো লক্ষ সাতাশি হাজার আটশো বাহান্ন জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় বসেছিলেন, তাঁরা প্রত্যেকেই একই নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছেন। এটা একটা ঐতিহাসিক ঘটনা। কী করে এটা সম্ভব হল, এটা কী সত্যিই হয়েছে, না যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য এই ফলাফল, এটা জানার জন্য আমরা যোগাযোগ করেছিলাম...

না, আর দেখেননি তিনি। এর পর দেখতে গেলে তাঁর স্কুলে যেতে দেরি হয়ে যাবে। তাই টিভি বন্ধ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর মনের ভেতর খচখচ করতেই লাগল, তা হলে কি তাঁর স্বামীর কথা অনুযায়ী সত্যিই ওই দুটো কেমিক্যাল বিভ্রাটের ফলেই এ সব হচ্ছে! শুধু রোগ বা রোগের লক্ষ্মণই নয়, এ রাজ্য থেকে অশিক্ষাও দূর হয়ে গেছে! সবাই একই নম্বর পেয়েছে মানে তো সবাই সমান। তবে কি এ দেশে যথার্থ সমাজতন্ত্র গঠন হতে চলেছে! ভাবতে ভাবতেই স্কুলে যাওয়ার জন্য রাস্তায় পা রাখলেন জবা।

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register