- 4
- 0
দিন ফুরোলে, কাজ ফুরোলে মুক্তির ডানা মেলে একে একে মরণসাগরপারে পাড়ি জমিয়েছে যাঁরা তাঁদের গায়ের ধুলো সুখে অসুখে বা আনন্দের আলোড়নে উত্যক্ত না হয়ে এ আবাসনের আনাচে কানাচে বিষন্নতায় থিতু হয়ে আছে আজও। পাশেই মধুদাদার দোকানে দিনভর হাসিঠাট্টার গমকেও স্থানচ্যুত হয়না সে সব। এজমালি সম্পত্তি, কার একার দায় পড়েছে সেসব ধুলো ঝাড়ার। ইঁট সুরকির ভেতরে অবাধে শেকড় চালানো অশ্বত্থচারার চপলতায় প্রাণ আছে। জানালার শার্সিতে অজস্র রঙীন কোলাজ ধুলোমলিন। তবু কি এক হাস্যকর অন্যমনস্কতার সুযোগে এ আবাসন যেন মহাস্থবির। এক একটা করে ইঁট খুলে নিতে অপহরণকারীরও হাত কাঁপে। একদৃষ্টে সেদিকে চেয়ে থাকতে চোখও কেমন বিপন্ন বোধ করে। মুহূর্তে চূর্ণ হয়ে যায় রাজহংসীর মতো গর্বিত অহং। কর্ণই শুধু উৎকর্ণ হয়ে থাকে হয়তো বা কোন দীর্ঘশ্বাসের শব্দ শোনার জন্য। সুদূর অতীতে প্রতি হৈমন্তী সন্ধ্যার ধূসরতাকে বরণ করে বিদায়ী পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে জ্বলত আকাশপ্রদীপ। শ্যাওলা আগাছা ও মাকড়সার জাল অবয়ব জুড়ে যেন বিশীর্ণ এক ক্লান্তি। মাটির দিকে চেয়ে অজর অমর অক্ষয়ের ভঙ্গী আজ অবনত। ধ্বংসকে রোধ করার পন্থা বংশপরাম্পরায় নিখুঁতভাবে বোধ হয় অজানাই থেকে যায়। তবু তার মাঝে উৎসব আসে, উৎসব যায়, কোজাগরী অমানিশার মতোই। সাতমহলার ভিটেমাটির অদূরে ছোট্ট শান্তির নীড়ে আজও মা সেই দীপাবলির রাতে একমাত্র বংশধরের হাত দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় পূর্বপুরুষদের আঁধারে পথ দেখানোর জন্য চৌদ্দ প্রদীপ।
0 Comments.