Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

T3 || আমার উমা || 26য় সঞ্জিত মণ্ডল

maro news
T3 || আমার উমা || 26য় সঞ্জিত মণ্ডল

বিদেহী

দুগগা নিজেই নিজেকে আর দেখতে পায় না। তাই তার আক্ষেপ আর কিছুতেই যায় না। কিন্তু অন্যেরা যে তাকে দেখতে পায় সে বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে সে। তাকে দেখতে পেয়ে কেউ ভয়ে আঁতকে ওঠে, কেউ বাবা গো মা গো বলে পড়ি কি মরি করে দৌড়ে পালায়, কেউ বা জ্ঞান হারায়। দুগগা ভেবে পায় না, কি এমন করেছে সে, সে তো কাউকে ভয় দেখায় না, তবে তাকে দেখে এমন ভিরমি খায় কেনো লোকে! পুড়ে গিয়ে চেহারাটা নাকি বীভৎস হয়েছে একথা লোকে বলে! তা আর কি করা যাবে, সে তো নিজে নিজে পোড়ে নি তাকে অদ্ভূত কায়দায় পোড়ানো হয়েছে, যন্ত্রণা শুরুর আগেই সে মৃত্যুর মুখে সে ঢলে পড়েছিলো । ভালোবাসার স্বামী আদর করে তার পানীয়ে এমন কিছু মিশিয়ে ছিলো যে আগুন না লাগালে ও মৃত্যু তার অবধারিত ছিল। গভীর প্রেম, ভালোবাসা,কতো আদর, বিয়ে, গয়না হাতিয়ে নেওয়া, তারপর পণের জন্য ক্রমাগত চাপ দেওয়া আর উৎপীড়ন। তার পর এই পরিণতি। আমি জানি দুগগারা হয় নিজে পোড়ে, নয় তাদের পোড়ানো হয়। যদি কেউ অত্যচারের হাত থেকে বেঁচে যায় তবুও তার কঙ্কালসার দেহ দেখলে লোকে ভয় পায়। শোকে দুঃখে অনাহারে অনিদ্রায় বেঁচে থেকেও দুগগারা মরে যায়, কেননা প্রাণ পণে ভালোবাসার দাম চোকাতে মরতে তাদের হবেই। বাপের বাড়ির সাথে সম্পর্ক ছেদ করে পালিয়ে এসে বিয়ের মূল্য তার চোকাতে হয় নিঃশব্দে জীবন দিয়ে। স্বামী অত্যন্ত ভালো মানুষ জানো, মাংস পোড়া গন্ধটা আটকাবার জন্য আদর করে কত যে আতর ঢেলে দিলো, আতরের সেই মন কেমন করা গন্ধে বাতাস ম ম করছিল। তারপর আমার আধপোড়া দেহটাকে পরম যত্নে টুকরো করে কেটে বড় ট্রাঙ্কে তালাবন্ধ করে রান্নাঘরের চোরা কুঠুরিতে তুলে দিল। তোমরাই বলো, মাঝে মাঝে সেখান থেকে আমারও তো বেরোতে ইচ্ছা করে। যখন বেরিয়ে আসি তোমাদের কেউ কেউ মুখোমুখি হও, আতঙ্কে চিৎকার করে ওঠো, নিদারুণ ভয়ে। তোমরা এত ভয় পেলে আমি কি করি বলতো? স্বামী টা যে আর এমুখো হয় না। তোমরা কেউ বলবে তাকে আমার হাড় কখানি গঙ্গায় ফেলে আমাকে মুক্তি দিতে। বড্ডো কষ্ট পাচ্ছি গো আমি। ভালো বাসা আমার মতো দুগগাদের কাছে বড্ডো যে দামী, হাজার হোক সে তো আমার ভালোবাসার স্বামী।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register