Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাসে সমীরণ সরকার (পর্ব - ৮৭)

maro news
ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাসে সমীরণ সরকার (পর্ব - ৮৭)

সুমনা ও জাদু পালক

পরী রানী তার মায়া দণ্ডটিকে আহত উট পাখিটার দিকে ঘুরিয়ে দিলেন। তারপর অদ্ভুত মিষ্টি সুরে গান গাইতে শুরু করলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই মায়া দণ্ড থেকে বিন্দু বিন্দু জলের ধারা বেরিয়ে এলো তীব্র গতিতে। সেই জলের সুমিষ্ট গন্ধে চতুর্দিক আমোদিত হয়ে উঠল ।পরী রানী সবাইকে বিস্মিত করে দিয়ে বললেন, দয়া করে এগিয়ে আসুন হে চন্দ্র দ্বীপের রাজকুমার। বিস্মিত চন্দ্রকান্তা এদিক ওদিক তাকিয়ে বলল, কোথায় চন্দ্রদ্বীপের রাজকুমার? পরী রানী মৃদু হেসে বললেন, ওই তো আমাদের সামনে। ------ মানে? ------- তোমরা যাকে আহত উটপাখি হিসেবে দেখছো, তিনি আসলে চন্দ্রদ্বীপের রাজকুমার দনুজদমন। ওই শয়তান জাদুকর হূডু রাজকুমারকে মন্ত্র বলে উটপাখি বানিয়ে তার পিঠে চড়ে ঘুরে বেড়াতো এতদিন। আসুন রাজকুমার, এগিয়ে আসুন আমার কাছে। উটপাখিটা আস্তে আস্তে এগিয়ে এলো পরী রানীর কাছে । পরী রানী তার হাতের মায়াদন্ড থেকে নির্গত জলের ধারা ছড়িয়ে দিলেন আহত উট পাখিটার ডানার উপরে। কিছুক্ষণের মধ্যেই উট পাখিটার ডানা আবার আগের মত হয়ে গেল। উটপাখিটা দুটো ডানা ঝেড়ে নিল। রাজা রুদ্র মহিপাল বললেন, অপূর্ব! ধন্য ,ধন্য আপনি হে পরী রানী। আপনি মুহূর্তের মধ্যেই আপনার মায়াদণ্ডের সাহায্যে ওই পাখিটিকে সুস্থ করে দিলেন। এবার দয়া করে আরও একটি কাজ করুন। ----কী? ----- আপনি তো বললেন যে, ওই উট পাখিটা নাকি চন্দ্রদ্বীপের রাজকুমার দনুজদমন। ----- হ্যাঁ। ----- তাহলে দয়া করে রাজকুমারকে তার আসল রূপে ফিরিয়ে দিন। ----- আমি দুঃখিত হে মহারাজ রুদ্রমহিপাল। এই অনুরোধ আমাকে করবেন না। ----- কিন্তু কেন? ------- যতক্ষণ না ওই দুষ্টু জাদুকরের হাত থেকে ওর জাদুদণ্ড কেড়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে, ততক্ষণ আমার মায়াদন্ডের সাহায্যে রাজকুমারকে আমি তার আগের রূপে ফিরিয়ে দিতে পারবো না। বৃথা চেষ্টা করতে গেলে জাদুকর ওকে হয়ত আরো কোন বড় শাস্তি দিতে পারে। চন্দ্রকান্তা বলল, তাহলে কি কোন উপায় নেই? অদৃশ্যকন্ঠ বললো, অবশ্যই আছে। সুমনা ও চন্দ্রকান্তা সমস্বরে বলল,কী? ---- যাঁর আশীর্বাদে রাজা রুদ্র মহিপাল এবং রানী মায়াবতী তাঁদের আসল রূপ ফিরে পেয়েছেন, তিনিই তো পারেন সব অসম্ভবকে সম্ভব করতে। সুমনা বলল, তাই তো। এত বড় সত্যটা আমরা কি করে বিস্মৃত হয়েছিলাম? রাজকুমার হিরণ উট পাখিটার উদ্দেশ্যে বললো, আমার সঙ্গে চলুন হে রাজকুমার দনুজদমন। আপনাকে নিয়ে যাই দেব হরিহর এর কাছে। হিরণ কুমারের কথা শেষ হতে না হতেই জাদুকর হূডু প্রায় গর্জে উঠলো, অসম্ভব! আমার উটপাখিটাকে আমি কোথাও নিয়ে যেতে দেবো না। কথা শেষ করেই জাদুকর হূডু আর জাদুদণ্ডটির সাহায্যে উটপাখিটার চারধারে আগুনের বলয় রচনা করলো। প্রখর তাপ সেই জ্বলন্ত অগ্নি বলয়ের। কিন্তু প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই পরীরানী তার মায়া দন্ড থেকে মন্ত্রপুত জলরাশি নিক্ষেপ করে জ্বলন্ত আগুন নিভিয়ে দিল। ক্ষিপ্ত হয়ে উঠল জাদুকর হূডু। এবার সে তার জাদুদন্ড দিয়ে উট পাখিটার চারিদিকে মুহূর্তের মধ্যে লোহার খাঁচা তৈরি করে দিল। সঙ্গে সঙ্গে পরীরানী তাঁর মায়াদণ্ডের সাহায্যে লোহার খাঁচাকে হরিৎ বর্ণ ঘাসে পরিণত করলেন। জাদুকর আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলো। সে তার জাদু দন্ড উট পাখিটার দিকে তাক করে আরো কিছু করতে যাচ্ছিল। মুহূর্তের মধ্যে পরীরাণী তার মায়া দন্ডের সাহায্যে কুয়াশার আবরণ সৃষ্টি করল জাদুকরের সামনে। ও আর কিছু দেখতে পাচ্ছিল না। সেই সুযোগে রাজকুমার রোহন উট পাখিটাকে সঙ্গে নিয়ে দেব হরিহরের মূর্তির দিকে এগিয়ে গেল। চলবে
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register