Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাসে সমীরণ সরকার (পর্ব - ৮৫)

maro news
ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাসে সমীরণ সরকার (পর্ব - ৮৫)

সুমনা ও জাদু পালক

বেশ কিছুক্ষণ এইভাবে লড়াই চলল দুজনের মধ্যে। কখনো যাদুকর হূডু তার হাতের জাদুদন্ড থেকে মায়াবী অস্ত্র প্রয়োগ করছে, পরী রানী সেই অস্ত্রকে ব্যর্থ করছেন। আবার পরমুহূর্তে পরী রানী মন্ত্র পড়তে পড়তে তার হাতের দন্ডটি থেকে বিচিত্র ধরনের অস্ত্র ছুঁড়ে দিচ্ছেন হূডুর দিকে।হূডু চোখের পলক ফেলতে না ফেলতেই সেই অস্ত্রকে ব্যর্থ করে দিচ্ছে। সুমনা লক্ষ্য করলো যে, হূডু যেহেতু তার জাদু মন্ত্রের বলে বিশাল উট পাখিটাকে ওড়ার শক্তি দিয়েছে, পাখিটাও তার প্রভুকে পিঠে নিয়ে সেই শক্তির পূর্ণ সদ্ব্যবহার করছে। আকাশে উড়তে উড়তে পাখিটা মাঝে মাঝেই দিক পরিবর্তন করে হূডুকে লড়াই করতে সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছে। সেদিক থেকে দেখতে গেলে নিচে দাঁড়িয়ে লড়াই করতে বেশ অসুবিধা হচ্ছে পরীরানীর।

হূডুর হাত থেকে জাদু দন্ড কেড়ে না নেওয়া পর্যন্ত ওকে নিরস্ত করা যাবে না। কিন্তু সেটা মোটেই সহজ কাজ নয়। তার আগে হূডুকে মাটিতে নামিয়ে আনতে হবে। হোক না মুখোমুখি লড়াই। তবে তো বোঝা যাবে কার ক্ষমতা বেশি। মানুষের কল্যাণ করার ইচ্ছে নিয়ে শুভশক্তির প্রতীক পরী রানী লড়াই করছেন অশুভ শক্তির বলে বলীয়ান ওই শয়তান হূডুর বিরুদ্ধে।অথচ হূডু মাথার উপরে ভেসে ভেসে লড়াই করার জন্য বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে। এটা চলতে দেওয়া যায় না। কিছু একটা করতে হবে সুমনাকে। হঠাৎ তার মনে পড়ে গেল অদৃশ্য কন্ঠের কথা।সে মনেমনে বলল, হে বন্ধু অদৃশ্য কন্ঠ, আমি তোমার সাহায্য প্রার্থী। আমি পরীরানীকে সাহায্য করতে চাই।ওই হূডু উটপাখির পিঠের উপরে বসে লড়াই করছে বলে বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে। কিন্তু পরীরানীর তো কোন বাহন নেই। যার জন্য পরীরানীর খুব অসুবিধা হচ্ছে। অদৃশ্য কন্ঠ বললো, রাজকুমারী রত্নমালা, তোমার কাছে কিছু দৈব অস্ত্র আছে। সেগুলোর যথাযথ প্রয়োগ করে কিছু সমাধান করা যায় কিনা ভেবে দেখো। অদৃশ্য কণ্ঠের কথা শুনে হঠাৎ সুমনার মনে পড়ে গেল যে, তার কাছে তো দৈত্যরাজের দেওয়া সেই অমোঘ অস্ত্র আছে যা শত্রুকে আঘাত করে আবার ফিরে আসবে তার হাতে। অর্থাৎ সেই অস্ত্র সে আবার প্রয়োগ করতে পারবে।

সুমনা তক্ষুনি চোখ বন্ধ করে দৈত্যরাজকে মনে মনে স্মরণ করে তার দেওয়া অস্ত্র প্রার্থনা করল। মুহূর্তের মধ্যে তার হাতে পৌঁছে গেল এক অদ্ভুত অস্ত্র। অস্ত্রটি আকারে খুব বিশাল না হলেও বেশ ওজনদার এবং যথেষ্ট পোক্ত বলে মনে হলো। ওটা গোলাকৃতি এবং চ্যাপ্টা। দেখতে অনেকটা পিঠার মত। আহা কতদিন মায়ের তৈরি পিঠে খাইনি। সুমনার খুব হাসি পেয়ে গেল নিজের কথা ভেবেই। এই যুদ্ধক্ষেত্রে দাঁড়িয়েও সে মায়ের হাতের পিঠে খাওয়ার কথা ভাবছে। যাক ওসব ভেবে লাভ নেই। এখন অস্ত্রটা প্রয়োগ করতে হবে। জাদু ক্ষমতায় বলীয়ান উট পাখিটাকে ‌ নিচে নামাতে হলে ওর ডানাটাকে ভাঙতে হবে। কিন্তু সেটা কি উচিত কাজ হবে? পাখিটা তো কষ্ট পাবে। চন্দ্রকান্তা এতক্ষন সুমনার কার্যকলাপ দেখছিল। সুমনার হাবভাব দেহে তার মনে হল যে, অস্ত্রটা হাতে পেয়ে রাজকুমারী রত্নমালা যেন কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত। তাই চন্দ্রকান্তা সুমনাকে সাহস দেওয়ার জন্য বলল, কি এত ভাবছো রাজকুমারী রত্নমালা? তাড়াতাড়ি অস্ত্র টা প্রয়োগ কর। তা না হলে দুষ্টু জাদুকরটা জিতে যাবে। আমার মা ,বাবা আমার দেশের লোকজন কেউ অভিশাপ মুক্ত হবে না। তুমি কি সেটা চাও রাজকুমারী রত্নমালা? ------ না, কক্ষনো না। আমি চাই সবাই শয়তান দুষ্টু জাদুকর হূডুর মায়াজাল থেকে মুক্ত হোক। ----- তাহলে এক্ষুনি প্রয়োগ কর তোমার অস্ত্র। ----- বেশ তবে তাই হোক। সুমনা একটু সময় লক্ষ্য স্থির করে হাতের অস্ত্রটা ছুঁড়ে মারল উটপাখিটার ডান দিকের ডানা লক্ষ্য করে।

চলবে

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register