Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

T3 সাহিত্য মার্গ || ১৫০ তম উদযাপন || সংখ্যায় সোনালি

maro news
T3 সাহিত্য মার্গ || ১৫০ তম উদযাপন || সংখ্যায় সোনালি

সমসাময়িক

পিং পিং কাজ করতে করতে চোখটা পাশের দিকে ফেরায় অমিয়। হোয়াটস্যাপের সবুজ আইকন ভেসে আছে মোবাইলের মাথার দিকে।

আঙুল ছোঁয়াতেই মনামির নাম ভেসে ওঠে। বিরক্তিতে ভুরু কুঁচকে চোখ বোলায় অমিয়। নির্ঘাৎ আবার ঘ্যানঘ্যান। হ্যাঁ। যথারীতি।

-- লাঞ্চ করেছিস ? মেডিসিন? মুখ বেঁকায় অমিয়।

এই মিডিলক্লাস ক্লিশে আর পোষায় না।

এটা বন্ধ করে দেওয়া যাক।

-- হ্যাঁ। নতুন ক্লায়েন্ট মিট ছিলো। মহিলা হট এন্ড ইন্টারেস্টিং। দুপুরে লাঞ্চে ইনভাইট করল। খাইয়েছে ভালই।

ডেলিভারির দুটো টিক নীল হয়ে গেল সিন হয়ে। কিন্তু জবাব এলো না কিছু। মানে দেখে ধাক্কাটা ভালই খেয়েছে ক্যাবলা মহিলা। আশা করা যায়, শিগগিরই জ্বালাবে না আর। কিন্ত নাহ। মিনিট পাঁচেক পরেই আবার পিং।

আগে একটা হাসি মুখের ইমোজি। তারপর প্রশ্ন। কি খেলি রে?

এইবার গুছিয়ে ছক্কা মারতে রেডি হয় অমিয়। ঠিক খেলাম না। খাওয়ালো।

কি ?

পাশের ক্যাফেতে পাস্তা ইন হোয়াইট সস আর ভার্জিন মোহিতো। আর তার আগে লিফটে নামতে নামতে, একটা দুর্দান্ত হট, এন্ড নট সো ভার্জিন, চুমু। মহিলা দেখতে ভালো। কনফিডেন্স লেভেলটাও ফাটাফাটি। দারুন একটা মাস্কি পারফিউম ইউজ করে। নাইস।

এক সেকেন্ডে লাইকের কাঁচকলা ভেসে এলো ওদিক থেকে। সঙ্গে জবাব। আজ দিনটা ভালো। আমার সঙ্গেও এই ভদ্রলোকের ডেট আছে। উনিই ডেকেছেন।

বেশি চালাক হবার চেষ্টা করছে মনামি ?

কি রকম একটু উসখুস করতে থাকল ভিতরটা অমিয়র।

পিং

ধারালো সুপুরুষ মুখ। ব্যাকব্রাশ করা কাঁচাপাকা ঘন চুল। সুট পরা হাসি মুখের এক ভদ্রলোকের ছবি পাঠিয়েছে মনামি। পরের ম্যাসেজ এল। গলাটা অসাধারণ ভালো। তাই সন্ধ্যাবেলা যেতে বললেন যখন না করতে পারলাম না।

চিড়বিড় করে ওঠে অমিয়।

হাত চালিয়ে টাইপ করে।

ওহ। তা বেশ। আমি বললে ত কোন দিন সন্ধ্যাবেলা থাকতে পারিসনি। নাকি মা রাগ করবে। কাকি প্রশ্ন করবে। এনার ক্ষেত্রে সে প্রবলেম নেই বুঝি ?

না। বাড়িতে জানিয়েই এসেছি।

আচ্ছা আচ্ছা। মালদার আদমি। বাড়ির সাপোর্ট আছে। তাই বল। ভালো। অল দা বেস্ট।

এরপর যে ইমোজিটা পাঠালো মনামি সেটা আর সিন হল না। মনামি বুঝলো অমিয় আর খুলবে না ওর কথাদের। ম্লান হেসে পাঠানো ছবিটা ডিলিট করে দেয় চ্যাট থেকে।

বিকেলে চেম্বারে দেখা করতে বলেছেন ডক্টর মুখার্জি । বায়োপসি রিপোর্ট বলছে স্টেজ টু। লিভার ক্যান্সার। ফোনে ডাক্তার বলেছেন কেমোথেরাপির ডিটেইলস নিয়ে আলোচনা করতে আসতে হবে ।

ডিজিটাল দুনিয়ায় ভালো থাকা সহজ। এটা মনামি ক্যান্সার সন্দেহ আছে জেনেছে যখন, তখন থেকেই বুঝে গেছে, আর প্রাণপণ প্র‍্যাকটিস করে চলেছে।

খামোখা বেজার মুখ করে থেকে লাভ কি।

অমিয়… ওকে একবার আজ দেখতে বড় ইচ্ছে করেছিল। থাক। মায়া বাড়িয়ে কি হবে। ভালো থাকুক ও ওর মতো। খুব ভালোবাসে ওকে মনামি। ও বিরক্ত হয়। তাও। যাকগে। মনামির ত আর কাউকে কিছু দেবার মত নেই। যাবার আগে একটু ধারালো দাগ কেটে থাকুক না হয় কোথাও ।

অফিস থেকে বেরিয়ে বিকেলের সূর্যটাকে দেখে কেমন মন ভালো হয়ে যায় মেয়েটার। থাকুক না হয় এক চিমটি মন্দ বাসা। মন্দ কি ?

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register