Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

হৈচৈ গল্পে অঞ্জলি দেনন্দী, মম

maro news
হৈচৈ গল্পে অঞ্জলি দেনন্দী, মম

তাল কুড়োতে গিয়ে

ঘরের বিছানায় শুয়ে শুয়ে শুয়ে ছোট আশিস শুনছে বাড়ির পাশের খিরকি পুকুরের পাড়ে ধুপধাপ শব্দে পরছে কত কত কত তাল, একের পর এক। উঠে বস্তা কাঁধে ও হাতে লণ্ঠন নিয়ে গেল ছুটে তাল কুড়োতে। ঘুটঘুটে অন্ধকার। কেউ কোথাও নেই। অমাবস্যার রাত। গিয়ে দেখে কয়েকটা তাল পাড়েই পরে আছে আর কয়েকটা পুকুরের জলে ভাসছে। ও পাড়েরগুলো ফটাফট বস্তায় পুরে নিল। আর দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছে, জলে নেমে সাঁতার কেটে ওই তালগুলিও কি নেবে! নাকি এগুলি নিয়েই বাড়ি ফিরে যাবে! এমন সময় হঠাৎ ওর ঘাড়ে কে যেন সুড়সুড়ি দিল। হাতেও দিল। পায়েও দিল। গালেও দিল। এরপর কে যেন ওকে কাতুকুতু দিতে শুরু করল। কিছুতেই আর সে থামে না। কে? দেখার চেষ্টা করল। কাউকেই তো দেখতে পেল না। এবার আশিস খুব হাসতে শুরু করল; কাতুকুতুতে যে তার বড্ড হাসি পায়। কি আর করে! হেসেই লুটোপুটি করছে। ঠিক এই সময় কে যেন নাকি কণ্ঠে বলল, " আঁরোও তাঁল চাঁই? আঁচ্চা আঁচ্চা আঁমি আঁনচি! দাঁড়া এঁকানে!" এরপর সে শুনলো কে যেন জলে আওয়াজ করে করে করে হাত, পা ছুঁড়ে ছুঁড়ে সাঁতার কাটছে। কিছু তো দেখতে পাচ্ছে না। খানিকটা পরে সাঁতারের শব্দ থেমে গেল। আর ওর বস্তার ভেতরে একগাদা তাল আপনাআপনিই ঢুকে গেল। ওঃ কি ভারী! ভার সামলাতে পারল না। কাঁধ থেকে পরে গেল। কে যেন সেটাকে আবার তুলে নিল। কারণ ওটা যে আশিসের পায়ের ওপরেই পরেছিল। আর তুলতে তাই বুঝতে পারল। এবার অদৃশ্য কন্ঠ আবার শোনা গেল, "তুঁইঁ চোঁল এঁবাঁর! আঁমি তাঁলগোঁলো বোঁয়ে নিঁয়ে গিঁয়ে বাঁড়ি পৌঁছে আঁসচিঁ! আঁয়! আঁয়! আঁয়!" আশিস হেঁটে চলল। আর তালের বস্তাটা শূণ্যে এগোতে লাগলো। কিছু পরে ও বাড়ি পৌঁছল। তালের বস্তাটাও পৌঁছল। উঠোনে বস্তাটা মাটিতে ধপাস করে কে যেন রাখল। আশিস এবার বাড়ির ভেতরে সেটা টেনে টেনে টেনে নিয়ে গিয়ে ঢোকাল। খুব ভারী। এবার হাত, পা ধুয়ে ফের শুয়ে পরল।

সকালে তো বাড়ির সবাই অবাক। ছোট আশিস এতো ভারী বইল কি করে! সকলেই জানে যে আশিস রাতে একাই তাল কুড়িয়ে আনে। তবে এতোগুলো তো সে কখনই আগে আনেনি। ব্যাপারটা জানার জন্য এবার মা এসে আশিসকে ঘুম থেকে ওঠাল। আশিস চোখ রগড়াতে রগড়াতে উঠে বসল। মা জিজ্ঞাসা করল, " হ্যাঁ রে আশিস! তুই অতো ভারী তালের বস্তাটা বয়ে নিয়ে এলি কি করে রে? " সে উত্তর দিল, " আমি তো বই নি। ওটা নিজে নিজেই বাড়ির উঠোন পর্যন্ত এসেছিল। আমি শুধু টেনে এনে ভেতরে রেখেছিলাম। " সকলেই আশ্চর্য হয়ে গেল।

এরপর আশিস, মা, বাবা, দিদি, ঠাকুরমা, ঠাকুরদা সবাই মিলে তাল খেল।

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register