Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

মার্গে অনন্য সম্মান সুচন্দ্রা বসু (সেরার সেরা)

maro news
মার্গে অনন্য সম্মান সুচন্দ্রা বসু (সেরার সেরা)

অনন্য সৃষ্টি সাহিত্য পরিবার

সাপ্তাহিক প্রতিযোগিতা পর্ব - ১৩২ বিষয় - ভোকাট্টা

ভোকাট্টা কাঞ্চি

সত্য রঞ্জন গায়ক লেখালেখিও করেন, বইও বেরিয়েছে,ছবিও আঁকেন। একবার তিনি কেরালায় একটি রোড শো করতে যান।সেখানে সাফল্য পান। মিডিয়ায় তার নাম ছড়িয়ে পড়ে। সেই সূত্রে কাঞ্চি তার নাম জানতে পারেন।স্লোভেনিয়া থেকে তিনি কেরালায় বেড়াতে আসেন।খুব সুন্দর তার কন্ঠস্বর। রাস্তার যেখানেই তিনি সেখানেই ভিড়। গানের মোহে সবাই সেখানে। তারপর যে যেমন পারে তার গান শুনে খুশি হয়ে কিছু অর্থ সত্যর হাতে তুলে দেয়। সেই রোড শোতে কাঞ্চিও তার গান শুনতে আসেন। কাঞ্চিও গান অনুরাগী হওয়ায় সত্যকে পছন্দ করেন।তার গানে মুগ্ধ হয়েই তিনি তার সঙ্গী হয়ে পড়েন। এই তাদের প্রথম দেখা। এরপর কাঞ্চি তার আর নিজের দেশে ফিরে যায়নি। দুজনের পিছুটান না থাকায় একসাথে ঘুরে বেড়িয়েছেন ভারতের বিভিন্ন অঙ্গ রাজ্যে, ভারতের বিভিন্ন শহরে।

সত্য সাধারণ মানুষের মত নয়। তার জীবন যাপন, চিন্তাধারা অন্য ধরনের।তাই তার প্রেমটাও ছিলো গতানুগতিক ধারার বাইরে। সত্য ২৬/২৭ বছরের যুবক হয়েও প্রেমে পড়লেন প্রায় ৭০ বছরের একজন বিদেশিনীর। যারা তাদের নিজের চোখে দেখেছে তারা জানে স্বয়ং বিধাতা যেন তাদের এক করে দিয়েছিলো। দেশ, জাতি, ধর্ম, বর্ন, ভাষা সব ছিলো দুজনের আলাদা। তাদের একমাত্র লক্ষ্য ছিলো ভালোবেসে শুধু একজন অপরজনকে প্রবলভাবে আগলে রাখা।

বিয়ে করে সত্য ও কাঞ্চির সময়টা সুন্দর কেটে যাচ্ছিল। নিজের গ্রামের বাড়িতে ফিরে ‘মহানন্দালয়’ নামে একটি খামার প্রতিষ্ঠা করেন তারা। দুজন মিলে সেখানে কাজ করেন।বেশ আনন্দেই ছিলো তারা। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন কাঞ্চি। প্রথমে তার হৃদযন্ত্রের সমস্যা ধরা পড়ে।

চিকিৎসা চলছিল কাঞ্চির। এরপর তার কিডনির সমস্যা ধরা পড়ে, তারপর ধরা পড়ে নার্ভের অসুখ,জানা যায় ফুসফুসেও জল জমেছিল।

স্ত্রীর দীর্ঘ ও ব্যয়বহুল চিকিৎসার খরচ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন।চিকিৎসার খরচ যোগাতে 'মহানন্দালয়' খামারবাড়ি বেচে দেন। তাতেও যখন চিকিৎসার খরচ কুলোচ্ছিল না,তখন ফেসবুকে পোষ্ট করলেন তিনি, স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য রাস্তায় রাস্তায় গান গাইবেন। সত্যর ডাকে বিপুল সাড়া পাওয়া গেল। ভিন্ন দেশের বিভিন্ন শহরে প্রেমিকার জন্য গান গাইলেন। সমব্যাথীরা সত্যর পাশে থেকে কাঞ্চির জন্য সমবেদনা ও অর্থ সাহায্য করল। তার চিকিৎসার জন্য বিভিন্নভাবে আর্থিক সহায়তাও এসেছিল ঠিকই কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাঁচানো গেল না তাকে। মরদেহ ভোরে শ্মশানে দাহ করা হয়েছিল।

শেষ পর্যন্ত মৃত্যুই যেন তৈরি করে দিল দুজনার আলাদা পথ। কাঞ্চি ভোকাট্টা হয়ে না ফেরার দেশে সত্য রইলেন পড়ে ইহজগতে।

সত্য এবার ঠিক করেছে কাঞ্চিকে নিয়ে একটা বই লিখবেন।আমরা সত্যর অনুরাগীরা তার অপেক্ষায় আছি।

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register