Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাসম্পাতে সিদ্ধার্থ সিংহ (পর্ব - ৯)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাসম্পাতে সিদ্ধার্থ সিংহ (পর্ব - ৯)

কেমিক্যাল বিভ্রাট

অথচ আজ! অভিমন্যু একেবারে হতবাক। তার খেয়ালই ছিল না এটা ওর স্কুল থেকে ফেরার সময়। এমনিই বড় রাস্তার মুখের মিষ্টির দোকান থেকে টক দই কিনতে যাচ্ছিল সে। বাড়ি থেকে বেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে পাড়ার শেষ বাঁকটা ঘুরতেই হঠাৎ দেখে গলির মুখ আগলে দাঁড়িয়ে আছে ওদের স্কুলবাস। ও নামছে।

ও নামতেই ওদের কাজের মাসি ওর কাছ থেকে বইয়ের ঢাউস ব্যাগটা নিয়ে ফিরে আসছিল পাড়ার ভেতরে। ওদের বাড়ির দিকে। সঙ্গে ও-ও। না-দেখার ভান করে অভিমন্যু মাথা নিচু করে পাশ দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিল। আচমকা খেয়াল হল, না। দু’জন নয়, তার পাশ দিয়ে একজন হেঁটে যাচ্ছে। একজন! হ্যাঁ, একজনই তো! মাটিতে পড়া লম্বা ছায়া তো সে কথাই বলছে। কিন্তু সেই একজনটা কে! ও! নাকি ওদের কাজের মাসি! তাই যদি হয়, তা হলে ও কোথায়!

চোখ তুলতেই বুঝতে পারল, বাস থেকে নামার পর কাজের মাসির সঙ্গে সঙ্গে হাঁটলেও, তার কাছাকাছি এসে কোনও এক অজ্ঞাত কারণে হাঁটার গতি কমিয়ে ইচ্ছে করেই দু’পা পিছিয়ে গেছে ও। কিন্তু কেন! ভাবার আগেই দেখল, তার পাশ দিয়ে যাবার সময়, গোল্লা পাকানো একটা কাগজের দলা টুক করে ছুড়ে দিল তার পায়ের সামনে।

ও ওটা ছুড়ে দিতেই ওর চোখের দিকে সরাসরি তাকাল সে। আর তখনই চোখের ইশারায় সুস্মিতা বলল, ওটা তুলে নিতে।

সে তুলল ঠিকই। কিন্তু বুঝতে পারল না এটা কী! স্যার না-থাকলে বা টিফিনের সময় ওরাও খাতার পাতা ছিঁড়ে এ রকম গোল্লা পাকিয়ে ক্লাসের মধ্যে এর ওর দিকে ছুড়ে মারে। কিন্তু এটা তো ক্লাসরুম নয়। তা হলে!

ভাবতে ভাবতে গলির মুখ দিয়ে বেরিয়ে ডান হাতে মিষ্টির দোকানের দিকে বাঁক নিতেই কী যেন মনে হল তার। সঙ্গে সঙ্গে ওই দলা পাকানো কাগজটা আস্তে আস্তে খুলে টান টান করে সে দেখল, তাতে লেখা রয়েছে— কাক ডিম পাড়ে কোকিলের বাসায় / আমি আছি তোমার চিঠির আশায়।

হ্যাঁ, এর আগে এই লাইনটা সে যেন কোথায় শুনেছে! কিন্তু কোথায়! কিছুতেই মনে করতে পারল না। মনে করতে পারল না, লাইনটা হুবহু এই রকমই ছিল! না, একটা-দুটো শব্দ অন্য রকম ছিল! কে জানে! অন্য রকমও হতে পারে! ও হয়তো নিজের মতো করে পালটে দিয়েছে! হতে পারে! হতেই পারে! সেটা বড় কথা নয়, বড় কথা হল— সে যে এ ধরনের কোনও চিঠি ওর কাছ থেকে কোনও দিন পেতে পারে, এটা তার ধারণাই ছিল না। অভিমন্যু একেবারে তাজ্জব হয়ে গেল। যে-মেয়েটা কোনও দিন তার সঙ্গে কথা বলেনি, একবার ফিরেও তাকায়নি, ইঙ্গিতও দেয়নি কোনও কিছুর, সে আজ একেবারে সরাসরি তাকে এ রকম একটা চিঠি দিয়ে দিল! হঠাৎ কী হল ওর! কী!

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register