Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাসে সমীরণ সরকার (পর্ব - ৭৪)

maro news
ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাসে সমীরণ সরকার (পর্ব - ৭৪)

সুমনা ও জাদু পালক

রাজা রুদ্রমহিপালের নির্দেশমতো এগিয়ে চলল অদৃশ্য সুমনা। রাজপুরীর রন্ধনশালা পেরিয়ে এলো বারান্দায়। সত্যি বিশাল লম্বা বারান্দা, তেমনি প্রশস্ত । দু'পাশে সারিবদ্ধ ঘর। এক পাশে পরপর ঘর, নিরেট দেওয়াল। আলো বা বাতাস ঢোকার কোন জায়গা নেই । কিন্তু বারান্দার অন্যপাশে দুটো করে ঘরের মাঝখানে প্রশস্ত গবাক্ষ। সেই পথে আলো ঢোকায় আলোকিত হয়ে আছে বারান্দা। বারান্দা পেরিয়ে রাজদরবারে এলো সুমনা। অপূর্ব মখমলে মোড়া রৌপ্য ‌‌নির্মিত সুদৃশ্য আসন সাজানো রাজদরবারে। ওই তো দূরে ঘরের এক প্রান্তে উঁচু বেশ প্রশস্ত বেদিকার উপর পাশাপাশি দুটি মূল্যবান রত্নখচিত স্বর্ণ সিংহাসন। সিংহাসনের পিছনে লাল রঙের পর্দা টাঙানো। সুমনা সেই পর্দা সরাতেই দেখতে পেল প্রশস্ত সিঁড়ি উঠে গেছে দোতলার দিকে। দোতলায় উঠে রাজা রুদ্র মহিপালের নির্দেশ মতো বারান্দার শেষ প্রান্তের বড় ঘরটির দিকে এগিয়ে গেল সুমনা। ঘরে ঢুকে বিস্মিত হলো সে। বিশাল বড় ঘরটি হাতির দাঁতের তৈরি নানা রকম সুদৃশ্য খেলনা দিয়ে সাজানো। ঘরের মাঝখানে স্বর্ণ নির্মিত সুদৃশ্য পালঙ্কের উপর দুগ্ধফেননিভ শয্যা। ঘরের একটা দেওয়ালের অনেকটা জুড়ে টাঙানো আছে একটি হাতে আঁকা তৈলচিত্র। একটি পুরুষ একটি নারী ও একটি বালকের পূর্ণাঙ্গ দেহের তৈলচিত্র। পুরুষটির চিত্র দেখে সহজেই রাজার রুদ্রমহিপাল বলে সনাক্ত করতে পারল সুমনা। নারীটি সম্ভবত রানী মায়াবতী। অপূর্ব সুন্দরী। কিছুক্ষণ আগে নিচে বিকৃত দেহ বামন আকৃতি যে বৃদ্ধা মহিলাকে সুমনা দেখেছে সুমনা, তার সঙ্গে ছবির মহিলার কোন মিল নেই। ছবির ছেলেটি সম্ভবত রাজপুত্র হিরণ কুমার। কিন্তু অনেক ভেবেও একটা রহস্য সমাধান করতে পারছিল না সুমনা। দুষ্টু জাদুকর পুষ্পনগর রাজ্য দখল করার পরে মন্ত্র বলে রাজা ও রানী কে বিকৃত দেহ করে নিজের দাস দাসীতে পরিণত করেছিল। রাজকুমারকে বন্দী করে কোথাও লুকিয়ে রেখেছে। কিন্তু তাদের ছবি এভাবে নিজের শয়ন কক্ষে কেন টাঙিয়ে রেখেছে? তৈলচিত্রটার কাছে এগিয়ে যায় সুমনা। ভালো করে পর্যবেক্ষণ করে ছবিটা। না , ছবিটার গায়ে কোথাও এক ফোঁটা ধুলোও নেই। তার মানে কি এই ছবিটা নিয়মিত ভাবে পরিষ্কার করা হয়। কিন্তু কেন? হঠাৎ ছবিটার নিচের দিকের কোণে একটা জায়গায় চোখ পড়ল সুমনার। ওই জায়গায় একটা গোলাকৃতি অংশের রঙ যেন পুরো ছবিটার রঙের থেকে একটু আলাদা। সুমনা জায়গাটা ভালোভাবে পরীক্ষা করে দেখলো ,ওই গোলাকৃতি জায়গাটায় এক টুকরো মোটা কাপড় রঙ করে সুকৌশলে লাগানো আছে। অল্প চেষ্টাতেই সুমনা সেই কাপড়ের টুকরোটা তুলে ফেলতেই জায়গাটায় একটা ছিদ্র তৈরি হলো। সেই ছিদ্রে চোখ লাগাতেই সুমনা দেখতে পেল ফটোটার পিছনে একটা ছোট্ট কুলঙ্গি। আর সেখানে লাল কাপড় দিয়ে কিছু একটা মুড়ে সযত্নে রাখা আছে। কী আছে ওখানে? জাদুকর কি কোন মহার্ঘ বস্তু সযত্নে লুকিয়ে রেখেছে ওই কুলুঙ্গিতে?না, দেখতে হচ্ছে। ঘরের চারিদিকে ভালো করে লক্ষ্য করতেই একটা রৌপ্য নির্মিত কেদারা চোখে পড়ল।সেটায় চেপে সহজে ফটোটা খুলে ফেলল সুমনা। কুলুঙ্গি থেকে লাল কাপড়ে মোড়া জিনিসটা বাইরে বের করে আনলো সুমনা। লাল কাপড় দিয়ে সযত্নে জিনিসটা মুড়ে কাপড়ের দুই প্রান্ত গিঁট দিয়ে বাধা আছে। সুমনা খুব সহজে গিঁটটা খুলে কাপড়ের বাঁধনটা খুলতেই ভেতরের জিনিসটা দেখে চোখ প্রায় ঝলসে গেল সুমনার।

চলবে

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register