Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

মার্গে অনন্য সম্মান রীতা চক্রবর্তী (সেরার সেরা)

maro news
মার্গে অনন্য সম্মান রীতা চক্রবর্তী (সেরার সেরা)

অনন্য সৃষ্টি সাহিত্য পরিবার

সাপ্তাহিক প্রতিযোগিতা পর্ব - ১২৫ বিষয় - সোশ্যাল মিডিয়া

ভাবনারা যখন ভাবায়

বর্তমানে ইন্টারনেটের যুগে আমরা সবাই সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে পরিচিত। হোয়াটস্যাপ, ফেসবুক, টুইটার, ব্লগ - বিভিন্ন নামের সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা নিজেদের পছন্দমতো আলাপচারিতা বা কথোপকথনে যোগদিয়ে থাকি। কখনো ব্যক্তিগত আবার কখনো গ্রুপের মাধ্যমে আমরা নিজেদের অনুভূতির আদান প্রদান করে থাকি। সোশ্যাল মিডিয়ায় এসে কত অপরিচিত মানুষ একে অপরের বন্ধু হয়েছেন। সুখ দুঃখের সাথী হয়েছেন একে অপরের। জনপ্রিয়তার নিরিখে হোয়াটস্যাপ এবং ফেসবুক হল সর্বাধিক ব্যবহার করা সমাজ মাধ্যম। হোয়াটস্যাপে নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা গ্রুপের সাথে যোগাযোগ করা হয় আর ফেসবুক হল দেয়াল লিখনের খোলা পাতা। এখানে সহজেই নিজের মনের কথা ওয়ালে লিখে অনেক পাঠক - দর্শকের কাছে পৌঁছে যাওয়া যায়। বহু স্বজনবন্ধু সেখানে লাইক কমেন্টের মাধ্যমে তাদের মতামত জানিয়ে লেখককে উৎসাহিত করেন। কিছুদিন আগে একটা ওয়ালের লেখা পড়লাম। তাতে একটু অবাক হয়ে গিয়েছিলাম বৈকি। এক ভদ্রলোক একজন বয়স্ক মহিলার ছবি পোষ্ট করেছেন। ছবির পরিচয়পত্র লিখেছেন এরকম - ,"এই ছবিটা আমার মায়ের কিছুদিন আগের তোলা ছবি। মা দীর্ঘদিন ধরে শয্যাশায়ী। কথা বলাও প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। তবে কানে বোধহয় এখনও শুনতে পায়। আমি ঘরের ভেতরে কথা বললে কখনো কখনো চোখ খোলার চেষ্টা করে। হাত পা নড়েচড়ে না বলে বিছানা থেকে উঠতে পারে না। আমি মাঝে মধ্যে খুব কষ্ট করে পাশ ফিরিয়ে দিয়ে ভেজা গামছা দিয়ে গা মুছিয়ে দিই। খাইয়ে দিলে খেতে পারে। তবে সবসময় আমি বাড়িতে থাকিনা বলে সেটা করতে পারিনা। আর মা অন্য কারোর কাছে খায়না। অনেকদিন ধরেই মায়ের এরকম অবস্থা। দুই দিদি এসেছিল। মা'কে শেষ দেখা দেখে গেছে। আত্মীয় স্বজনেরাও সবাই এসে দেখা করে গেছে। অনেকে দু'তিন বারও এসে গেছে। মায়ের অবস্থা কিন্তু এখনো একই রকম আছে। আচ্ছা, মায়ের কি এখনো এইভাবে বেঁচে থাকার কোনও মানে হয় ?" পোষ্টটার কমেন্ট সেকশনটাও দেখলাম।

--" কি আর করবেন দাদা, কটা দিন সহ্য করুন। " ---" সত্যি, এভাবে বেঁচে থাকার কোন হয়?" ---" কি বলব আপনাকে। আপনার নিজের মা তো? " ---" বুঝতে পারছি তোমার খুব কষ্টে দিন কাটছে। তবে উপায় তো নেই ।ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি তিনি তোমার সুদিন ফিরিয়ে দিন।" ---"সবার জীবনে এই দিন আসবে। তৈরি থাকুন। " ---" সত্যি বাবা, আর কিছু বলার নেই। " ---" ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি যাতে উনি তাড়াতাড়ি মুক্তি পান। " --" মুক্তি হোক" --" সাবধানে থাকবেন " ---" দারুণ ছবি " --" দারুণ লাগছে " 🙏🙏🙏(ইমোজী) 👌👌👌(ইমোজী) এগুলোও প্রচুর। এই পোষ্ট আর কমেন্ট দেখে সমাজের কিছু টুকরো ছবি মনের পর্দায় ভেসে উঠল। আগেকার দিনে মায়ের বয়স হয়ে গেলে কাশীতে ছেড়ে দিয়ে আসত ছেলেরা। আজও কত মা'কে বেরাতে নিয়ে যাবার নাম করে বাড়ি থেকে বের করে স্টেশনে ছেড়ে দিয়ে চলে যায় সন্তান। তবে মায়ের মৃত্যু কামনা করে এরকম একটা পোষ্ট ভাবনারো বাইরে ছিল। মনে প্রশ্ন জাগে, " এর পরের ঘটনা কি ঘটবে? অপেক্ষা করা হবে নাকি নিজেরাই....?" ভাবনাটা কিন্তু খুবই ভাবাচ্ছে।

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register