Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

মার্গে অনন্য সম্মান নীলিমা বিশ্বাস পাল (সেরা)

maro news
মার্গে অনন্য সম্মান নীলিমা বিশ্বাস পাল (সেরা)

অনন্য সৃষ্টি সাহিত্য পরিবার

সাপ্তাহিক প্রতিযোগিতা পর্ব - ১১৬ বিষয় - স্বপ্ন

স্বপ্ন বাজ মেয়ে

আজ আমি এমন এক মেয়ের গল্প লিখবো যে সামাজিক পারিবারিক অর্থনৈতিক মানসিক প্রতি কূলতাকে একে একে জয় করে নীরবে নিভৃতে সম্মানের সাথে মাথা উঁচু করে টিকে থাকার জন্য জীবন যুদ্ধটা চালিয়ে যাচ্ছে নিজের মতো করে। বাবা মায়ের প্রথম সন্তান হিসেবে প্রিন্সেসের মতো বেড়ে বেড়ে ওঠে এই মেয়েটি।শৈশব কৈশোরে লেখাপড়া টুকটাক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ছাড়া অন্য কিছুতে মন ছিল না মেয়েটির, জীবনে এম ছিল ডাক্তার হতে হবে। মেয়েটি দুঃখ কি তা জানতো না, কিন্তু পরবর্তীতে জীবন তাকে শিখিয়েছে---- অভাবেই তোমার প্রকৃত স্বভাব সামনে আসবে। এভাবেই তুমি জানবে নিজেকে। জীবন কখনো একভাবে কাটে না কারোর, প্রকৃতি variations পছন্দ করে।মেয়েটির জীবনে ও পরিবর্তন এলো।Early Mariage তার জীবনে অভিশাপ হয়ে ধরা দিল। লেখাপড়া শেষ করাটা একটা মেয়ের জন্য কতোখানি প্রয়োজন? সমাজ তা জেনেও বুঝতে চায় না।কোন মেয়ের বিয়ের সম্পর্কে যদি sound না চলে। হঠাৎ করে যদি স্বামী টি মারা যায়,কোন কারনে মেয়েটিকে একা থাকার সিদ্ধান্ত নিতে হয়,তখন শুধু মাত্র কাগজের সার্টিফিকেট গুলোই পারে মেয়েটিকে এই ভয়ঙ্কর পৃথিবীতে ( অসহায় বেচারি যেহেতু একা সেহেতু Available) প্রভৃতি লেবাস থেকে মুক্ত করে সামনের দিকে এগিয়ে চলার ভরসা দিতে। এই গল্পের মেয়েটি ছিল ভীষন স্বপ্ন বাজ।তার সমস্ত স্বপ্ন ছিল আকাশ ছোঁয়া। জীবন শুরুর আগেই তার স্বপ্ন ভেংগে চুরে শেষ হয়ে যায়। কিন্তু সে জেদ ধরে , নিজেকে তৈরি করবেই তাই চোখকান বন্ধ করে হোস্টেলের রুমে নিজেকে করলো বন্দী। বাইরের জগত বলতে শুধু ই হাসপাতাল, ক্লাস রুম,আর সপ্তাহে এক দিন ছুটে যাওয়া মার বাড়ি সন্তানের মুখ দেখার জন্য। মেয়েটির জীবন যুদ্ধ শুধু নিজের টিকে থাকার জন্য নয়,তার কোল জুড়ে আসা এক দেবশিশু ছিল তার ভাঙচুর হয়ে পড়া জীবনের একমাত্র সাক্ষী এবং জীবনে ঘুরে দাঁড়াতে হবে এই প্রতিজ্ঞায় একমাত্র কারণ---- একা মায়ের জীবন সংগ্রাম ও। হোস্টেলে ই শুরু হলো মা ছেলের ছোট ছোট দুই বেড জোড়া দিয়ে ছোট্ট সংসার দুজন রুমমেটের সাথে। হাসপাতালের সবাই ছিল তার জীবনের এই পর্বের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ইন্টার্নশিপ শেষ করে মেয়েটি Usaid এর একটা প্রোজেক্টে জয়েন করলো আউটডোর মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে। বাচ্চা কে সাথে নিয়ে ই শুরু হলো তার নটা পাঁচটা অফিস। এর মধ্যে বাচ্চাকে স্কুলে ভর্তি করানোর সময় এলো। মেয়েটি চাকরি নিল একটা ডায়বেটিক হাসপাতালে ইনডোর মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে।

মেয়েটি সাহসের সাথে বন জঙ্গলে ঘেরা নিঃশব্দ নির্জন পরিবেশে শূন্য থেকে নতুন জীবন শুরু করলো নিজের পরিচয়ে। শুরু করলো ছেলেকে নিয়ে নিজের একান্ত ঘর সংসার। মেয়েটির নিজের ওপর অগাধ বিশ্বাস ছিল সে পারবেই।আর তাই তো কয়েক বছরের মধ্যেই এলোমেলো হয়ে যাওয়া জীবন টাকে সুন্দর করে গুছিয়ে নিয়ে ডাক্তার হিসেবে মানুষের সেবা করে নিজের ছেলের ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে করতে নিজের স্বপ্নের পেছনেও ছুটে চলেছে সে। এই মুহূর্তে মেয়েটি ভীষন আনন্দিত ‌নিজের বৈচিত্র্যময় জীবন কে নিয়ে। সৃষ্টি কর্তা মেয়েটির জীবন টাকে ঠিক মেয়েটির স্বপ্নের মতো করেই সাজিয়ে দিচ্ছেন।

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register