Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

T3 || স্তুতি || শারদ 26য় সংঘমিত্রা ভট্টাচার্য

maro news
T3 || স্তুতি || শারদ 26য় সংঘমিত্রা ভট্টাচার্য

দুর্গা কথা

মহালয়ার সকাল। রাতের আঁধার ঘোচেনি এখনো। রেডিয়োয় বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের চন্ডীপাঠ শুরু হোলো। আশ্বিনের শারদপ্রাতে বেজে উঠেছে আলোক মঞ্জীর। ধরণীর বহিরাকাশে অন্তরিত মেঘমালা, প্রকৃতির অন্তরাকাশে জাগরিত জ্যোতির্ময়ী জগন্মাতার আগমন বার্তা। হঠাৎ করেই ডাক পড়লো, দুগ্গা ও দুগ্গা। ছাদের চিলেকোঠার ঘরের মেঝেতে চোখ রগড়াতে রগড়াতে একটিএগারো বারো বছরের বালিকা উঠে বসলো। বললো : ডাকছো কেন কর্তা মা? বাড়ির গিন্নী বললো : দু কাপ চা করে নিয়ে আয় তো? আজ মহালয়া কিনা! কচি হাতে গ্যাস ধরিয়ে চা করে ক্লান্তিতে মেঝেতে বসতেই গিন্নী বললো : আর শোন রান্নাঘরের বেসিনের বাসনগুলো মেজে রাখ। আজ একটু সকাল সকাল ই রান্না করবো। দুর্গার মনে পড়লো বাবা সাধ করে নাম রেখেছিলো দূর্গা। বলতো মেয়ে আমার দশভুজা হবে। বেশ আনন্দেই চলছিল দিন। হঠাৎ ই বাবার কারখানায় তালা পড়লো। অভাব ঘিরে ধরলো সপ্তরথীর মতো চারদিক দিয়ে। দুর্গার মা বাড়ি বাড়ি রান্নার কাজ নিল। দুর্গার ঠাঁই হোলো বোসেদের বাড়ি। এখান থেকে মাসে মাসে যে টাকা পায় তা বাড়িতে যায়। এখন দূর্গা দশভূজাই। কিন্তু এ জীবন তো সে চায়নি। হটাৎ ই নিজের অজান্তে দূর্গা কেঁদে উঠলো। বললো : বাবা আমি দশভুজা হতে চাই না। আমি কেবল তোমার মেয়ে হয়েই থাকতে চাই। কিন্তু অভাব অনটনের অসুর কে সে কিভাবে বধ করবে? কে তার হাতে অস্ত্র তুলে দেবে। তার দু চোখে জলের ধারা বয়ে চললো। কচি কচি হাতে সে বাসন ধুতে লাগলো। ভেতর থেকে ডাক এলো দুগ্গা তোর হোলো। চোখ মুছে সে জবাব দিলো : এই আরেকটু কর্তা মা। মহালয়ার ভোরে মানবী দুর্গার মর্তে যে যুদ্ধ শুরু হোলো তার শেষ কোথায় সে উত্তর অধরাই রয়ে গেলো।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register