Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

মার্গে অনন্য সম্মান এস কে হাসমত আলী (সেরা)

maro news
মার্গে অনন্য সম্মান এস কে হাসমত আলী (সেরা)

অনন্য সৃষ্টি সাহিত্য পরিবার

পাক্ষিক প্রতিযোগিতা পর্ব - ২৪ বিষয় - শীতকাল

মনখারাপের পিকনিক

বাৎসরিক ঋতু চক্রে হেমন্তের পরেই আসে শীতকাল। শীতকালে বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি বাজারে পাওয়া যায়। মুল্য মোটামুটি নাগালের মধ্যেই থাকে। শীতে সবথেকে লোভনীয় খাবার নলেন গুঁড়। যখন ভারী শীত পড়ে কিছু মানুষের দূর্দশার ছবি আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে। বিশেষ করে যারা ফুটপাত বাসি। অসংখ্য দরিদ্র পরিবারকে দেখতে পাই রেল স্টেশনে শতছিন্ন নোংরা একটা চাদরে তলায় গুটিশুটি হয়ে শুয়ে আছে। এই সময় মানসিক ভারসাম্যহীন ভবঘুরের সংখ্যা বেড়ে যায়। তাদের কারও কারও ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে কোনো সহৃদয় ব্যক্তির দ্বারা কিছু সাহায্য পেয়ে যায়। স্বয়ংসম্পূর্ণ মানুষের কাছে শীতকাল খুবই আনন্দের। বিভিন্ন ধরনের খাবারদাবারের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের পোশাক পরিচ্ছদ মেলা খেলা পিকনিক নিয়ে মেতে থাকে। এরকমই এক পিকনিকের কথা আমি বলবো যেটা আমি আজও ভুলতে পারিনি। তারিখ ছিল ২০০৯ সালের ২৫ শে ডিসেম্বর। আমরা পাড়া প্রতিবেশী পরিবার নিয়ে ৫০ জনের দল পিকনিকে গিয়েছিলাম টাটা ডিমনা লেকে। ২৪ তারিখে গভীর রাতে গাড়ি ছেড়ে পৌঁছে ছিলাম সকালে। ছোটো ছোটো পাহাড় ঘেরা লেক মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। আমি এবং আমার বন্ধু সম দাদা তাপস বসু দুপুর পর্যন্ত ঘোরাঘুরি করে ক্লান্ত শরীরে ফিরে এসে একটু বিশ্রাম নিয়ে লেকের স্বচ্ছ জলে খুব আনন্দের সঙ্গে স্নান করে আমাদের খাবার জায়গায় এসে উপস্থিত হয়েছিলাম। এসে দেখলাম অর্ধেক সঙ্গি সাথী খেতে বসেছে আমরা বাকি অর্ধেক পরের ব্যাচে বসবো। প্রথম ব্যাচ খেয়ে উঠে যাবার পর আমরা খেতে বসেছি এরকম সময় একদল কচিকাঁচা ছেলে মেয়ে আদুল গায়ে এসে যেখানে আমাদের আগের ব্যাচের বন্ধুরা উচ্ছিষ্টের পাতা গুলো যেখানে ফেলেছিল সেই পাতাগুলো থেকে খাবার খোঁজার চেষ্টা করছে। তাদের সেই ঠেলাঠেলি হুড়োহুড়ি দেখে আমি তাপস দা কে দেখালাম। আমাদের মন খুব খারাপ হয়ে গেল। সারাদিনের আনন্দ এক নিমিষে উড়ে গিয়ে মনে বিষাদের ছায়া নেমে এলো। আমরা দুজন না খেয়ে চুপচাপ বসে থাকলাম।সবাই যখন জিজ্ঞাসা করল আমরা বোললাম তোমরা খেয়ে নাও আমরা পরে খাচ্ছি। সকলের খাওয়া দাওয়া শেষ হয়ে যাবার পর অতিরিক্ত যেসব খাবার ছিল তার সঙ্গে আমাদের খাবার গুলো সেই বাচ্চাদের হাতে তুলে দিলাম। সেই বাচ্চাগুলোর সেই হাসি এখনও স্মৃতির এলবামে বাঁধানো আছে। শুকনো কিছু খাবার খেয়ে আমাদের বাসের পথে পা বাড়ালাম। প্রদীপের নিচে যে অন্ধকার থাকে এই চিরন্তন সত্যের বাস্তব অভিজ্ঞতা নিয়ে সেখান থেকে বাড়ির পথে রওনা হলাম। এখনও কোথাও পিকনিকে তে গেলে সেই বাচ্চা গুলোর মুখ চোখের সামনে ভেসে ওঠে। জানিনা তারা এখন কেমন আছে !
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register