Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

মার্গে অনন্য সম্মান রঞ্জনা মন্ডল মুখার্জি (সেরা)

maro news
মার্গে অনন্য সম্মান রঞ্জনা মন্ডল মুখার্জি (সেরা)

অনন্য সৃষ্টি সাহিত্য পরিবার

পাক্ষিক প্রতিযোগিতা পর্ব - ২২ বিষয় - নারী স্বাধীনতা

স্বাধীনতার মূল্য

এই পৃথিবীর অর্দ্ধেক আকাশ নারী।নারী সমাজে আর সংসারে নিজের যোগ্যতা ও ভূমিকা অনুযায়ী স্বাধীনতা ভোগ করে থাকে। স্বাধীনতার সংজ্ঞা ও পরিধি পাল্টে যায় স্হান- কাল- পাএ ও ব্যক্তিত্ব অনুযায়ী। গল্পের দুই নারী চরিত্র আজ সংবাদপত্রের শিরোনামে। দুই নারীই শিক্ষিত,সুন্দরী, প্রতিষ্ঠিত কিন্তু স্বাধীনতার অর্থ দুজনের কাছে অন্যভাবে ধরা দেয়।
প্রিয়া শহরতলির মেয়ে। গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে শহরে একটা প্রাইভেট ফার্মে চাকরি পেয়েছে। পেইন গেস্ট হিসেবে থাকে।বাড়ি থেকে দূরে শাসনহীন - বাঁধনহীন জীবন।মাঝে মধ্যেই অফিসের কাজ থেকে ফিরতে রাত হয়ে যায়। তার একাকী অবসরের সঙ্গী মোবাইল। কাজ থেকে ফিরে ক্লান্ত শরীর বিছানায় এলিয়ে দিয়ে ফেসবুকে চ্যাটিংএ ডুবে থাকে। ইদানীং ফেসবুকে অনেক নতুন বন্ধু জুটেছে। গল্প আড্ডায় ভালোই সময় কেটে যায়। দীপ,ফেসবুক ফ্রেন্ড।তাদের বন্ধুত্ব বেশ গাঢ় হয়েছে আজকাল। ভিন্ রাজ্যের ছেলে দীপ একটা মাল্টি ন্যাশানাল কোম্পানিতে কাজ করে। বেশ স্মার্ট, সুদর্শন, আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব ও তুখোর বাকক্ষমতা। ধীরে ধীরে প্রিয়া, দীপের প্রেমে পড়ে যায়। অন্ধ আবেগে নির্ভরতা বাড়তে থাকে। ক্রমে বন্ধুত্ব ফেসবুকের পরিধি ছাড়িয়ে সম্মুখ সাক্ষাতে আগ্রহী করে তোলে।কৌতূহল, ঔৎসুক্য, প্রেমের দুর্নিবার আকর্ষণে বেশ কয়েকবার দেখাও হয় দুজনের।ইদানীং অফিস ফেরত সিনেমা দেখে, রেস্টুরেন্টে খেয়ে বা শপিং করে বাড়ি ফেরে দুজনে।দীপ তার গাড়িতে প্রিয়াকে রাতে ড্রপ করে দেয়।ক্রমে অন্তরঙ্গতা - ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে দুজনের।
অন্যদিকে,গল্পের আর এক নারী অপরাজিতা। শিক্ষিতা, চাকুরীরতা, সম্ভ্রান্ত, রুচিশীল আধুনিকা। স্বামী ও মেয়ে নিয়ে সুখের নির্ঝঞ্ঝাট সংসার।উদার ও ব্যক্তিস্বাধীনতা প্রিয়।স্বভাবজাতভাবেই নির্ভীক, প্রতিবাদী ও দৃঢ়চেতা। সংসার ও কর্মক্ষেত্রে সমানভাবে ভারসাম্য রেখে চলেছে। অপরাজিতা মনে করে, সুনিয়ন্ত্রণ স্বাধীনতাই সাফল্যের মাপকাঠি। তাই সংসারের গন্ডিতে থেকেও সে নিজের মত করে স্বাধীন।
জীবন বেশ কাটছিল। হঠাৎই এক রাতে নাটকীয় মোড় আসে।বিয়েবাড়ির নিমন্ত্রণ সেরে সপরিবারে গাড়িতে বাড়ি ফিরছিল তারা।রাত বেশ ভালোই হয়েছে। রাতের শহর নির্জনতার চাদরে ঢেকেছে।হাইওয়েতে দু চারটে গাড়ি বেশ স্পিডে ওভারটেক করছে।হঠাৎ অপুর চোখে পড়ে, তাদের সামনের গাড়িটায় একটা মতে, গাড়ির চালকের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করছে।তাকে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করছে। মেয়েটি চিৎকার করে কিছু একটা প্রতিবাদ করছে। অপরাজিতার পুরো ব্যাপারটি সন্দেহজনক মনে হয়। একটু সামনে এগোতেই, সামনের গাড়ি থেকে মেয়েটির কন্ঠ স্বর ভেসে আসে।সাহায্যের জন্য মেয়েটি চিৎকার করতে থাকে।অপরাজিতা আর এক মুহূর্তও ভাবেনি।একজন মেয়ে হয়ে, অপর এক মেয়েকে বিপদ থাকা রক্ষা করাই তার ধ্যানজ্ঞান হয়ে দাঁড়ায়। স্বামীকে বলে গাড়িটিকে থামিয়ে যে করেই হোক মেয়েটিকে বাঁচাতে হবে।স্বামীও অপুর কথায় সেদিন বাধা দেয়নি। বিপরীত বা প্রতিকূল পরিণাম হতে পারে জেনেও, ঐ দম্পতি ঝাঁপিয়ে পড়ে বিপন্ন মেয়েটিকে উদ্ধার করতে। অপুর গাড়ি সামনের গাড়িটির পথরুদ্ধ করে।অপু গাড়ি থেকে নেমে তড়িতগতিতে সামনের দিকে এগিয়ে যায় ও দরজা খুলে মেয়েটিকে হাত ধরে টেনে নামিয়ে নেয়।ঘটনার হঠচকিতায় গাড়ির চালক অপুকে সজোরে ধাক্কা মেরে গাড়ি নিয়ে চম্পট দেয়।অপু রাস্তায় পড়ে যায়।পা ও হাঁটু জখম হয়।পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হয়।অপরাজিতাকে হসপিটালে ভর্তি করা হয়।পুলিশ মেয়েটিকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।
মেয়েটি কাঁদতে কাঁদতে বলে, সে প্রিয়া, ভালোবাসা আর আবেগের অন্ধ মোহে মানুষ চিনতে ভুল করেছে। সর্বনাশের পথে এগিয়ে গেছে। সেদিন রাতে ফেসবুক বন্ধু দীপের ইচ্ছার বিরুদ্ধে অশালীন অভব্য আচরণ তার অসৎ উদ্দেশ্য প্রকাশ্যে আনে।ভালোমানুষীর মুখোশ খুলে যায়।প্রিয়া নিজের ভুল বুঝতে পারে।তার মাএাতিরিক্ত স্বাধীনতার পরিণাম আজ সে ভোগ করছে।দীপের নামে পুলিশ বলপূর্বক যৌনহেনস্হা,শ্লীলতাহানি, অপহরণের অভিযোগ দায়ের করে।পরের দিন সংবাদপত্রে দুই নারীর খবর সামনে আসে।অসহায় প্রিয়ার জীবন রক্ষার্থে দুঃসাহসিক অপরাজিতার দুর্গা হয়ে ওঠার কাহিনী।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register