সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে সীমন্তি চ্যাটার্জি (পর্ব - ৩১)
স্রোতের কথা
পর্ব - ৩১
[ এলিমেন্টের সাতকাহন ]
" মাই বিলাভড্ স্টুডেন্টস আর সব ইসপ্যামিয়নরা... আজ আমরা সবাই ইসপ্যামার সবচেয়ে সুন্দর আর পাওয়ারফুল রিচ্যুয়াল পারফর্ম করার জন্য মিলিত হয়েছি... যারা ইসপ্যামাতে পুরোনো...তারা সবাই জানো... 'এলিমেন্টস কলিং রিচ্যুয়াল' আমাদের সুপার পাওয়ার কে কতটা এনরিচ বা সমৃদ্ধ করে...আর মেন্টাল স্ট্রেংথ কেও অনেকগুন বাড়িয়ে দেয়...আজ... নতুন ফ্লেজলিংরা কে কতটা যোগ্য বা কে কে কোন কোন এলিমেন্টের ব্লেসিং পাবে...সেটা আমরা সবাই এক্ষুনি দেখতে পাবো... হাই-প্রিস্টেস হিসেবে আমি আমার কনসর্ট... প্রফেসর আদিল হাসানকে আজকের পুরো রিচ্যুয়াল পরিচালনার দায়িত্ব নিতে অনুরোধ করলাম...আদিল ডার্লিং তুমি এই নতুন ফ্লেজলিংদের...একটু গাইড করে আজকের রিচ্যুয়ালের গুরুত্ব আর উপযোগিতা বুঝিয়ে দাও প্লিজ..."
মিরান্ডা প্রিস্টলি নিজের লম্বা লুটোনো ইলেকট্রিক ব্লু কালার সিল্কের এক্সক্লুসিভ গাউন টা গুছিয়ে নিয়ে অসম্ভব গ্রেসফুলি... বিশাল চত্বরটার একপাশে প্রফেসরদের জন্য সাজিয়ে রাখা রুপোলি আলো বেরোনো লম্বা স্টুলগুলোর ঠিক মাঝখানের স্টুলটাতে গিয়ে বসে পড়লেন...
" বাব্বাঃ.... একেবারে ডার্লিং!!আর পারিনাঃ... মিরান্ডা ম্যামটা একটু ন্যাকা আছে কিন্তু...তাই না রে স্রোত?"
"আঃ...মিট্টি... তুই তোর এই এক্সপার্ট কমেন্ট গুলো দেওয়া বন্ধ কর্ তো...হাসি পেয়ে যায়...অথচ হাসা যায়না.."
"এই...তোমরা ফিসফিস না করে কনসেন্ট্রেট করো...এটা প্রচন্ড গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু..."
"এই ডাইকো...তোর পটি ক্লিয়ার হয়? তুই সবসময় এত সিরিয়াস কেন রে??না কি তোদের নেকড়েম্যানদের এটা নিয়েও কোনো চাপ আছে?!"
পাশ থেকে সুজি আর প্যাম খুকখুক্ করে হেসে উঠলো... আমিও হাসি চাপতে পারলাম না...মিট্টিটা না...এত শয়তান...
ডাইকো বেচারা অপ্রস্তুত হয়ে একটু বোকা বোকা মুখ করে হাসলো
"সত্যি মাইরি...এসে থেকে শুনে আসছি ফাইভ এলিমেন্টস ফাইভ এলিমেন্টস...কেস টা যে কি... কিচ্ছু বুঝতে পারছি না... এদিকে খিদেটা বেশ ভালোই পেয়েছে রে..."
"আহা সোনা রে...তোর মুখটা দেখেই মনে হচ্ছে,তোর খুব খিদে পেয়েছে...
একটু দাঁড়া সমীর...এটা হয়ে গেলেই আমরা ক্যাফেটেরিয়া কাম ক্যান্টিনে গিয়ে হেভ্ভি খাওয়াদাওয়া করবো।এখানে তো মাইক্রোফোনে চাইলেই ইচ্ছেমতো খাবার..."
সুজি সমীরের দিকে তাকিয়ে ঠোঁট চাটলো...আর আমি মিট্টির হাতের একটা রামচিমটি খেলাম
" মাই ডিয়ার ফ্লেজলিংস..."... প্রফেসর আদিল হাসানের ভরাট উদাত্ত গলা যেন রাতের ইসপ্যামার আনাচকানাচ ভেদ করে প্রতিধ্বনিত হতে লাগলো...
"আজ আমরা আবার আমাদের ভীষণ প্রিয় এক রিচ্যুয়াল করার জন্য এখানে একত্রিত হয়েছি... গডেসদের আশীর্বাদে আমরা কিছুজন পৃথিবীর অন্যান্য মানুষের তুলনায় কিছুটা আলাদা ও বিশেষ শক্তির অধিকারী হতে পেরেছি...আর তা যাতে উ্যনিভার্সের কাজে লাগানো যায়...তার জন্য সেই শক্তি কে আরো অনুশীলন ও পরিশীলনের মাধ্যমে শান দিয়ে উন্নত করতে আমরা সৌভাগ্য বশত ইসপ্যামাতে আসতে পেরেছি... এখন আমাদের ভিতরকার সেই শক্তি বা এনার্জির উৎস কে চিহ্নিত করে... তাকে নিজের মধ্যে অনুভব করে কোনো কাজে কিভাবে তার সাহায্য নেওয়া যায়...বা ঠিক কোন্ কোন্ এলিমেন্টাল ফোর্স বা এনার্জি তোমাদের কার কার উপর সদয়...তা এই রিচ্যুয়ালের মাধ্যমে আমরা জানতে পারবো...আমাদের এখানে প্রায় একশো থেকে দেড়শো ফ্লেজলিং আছে...কারোর কারোর শক্তির হয়তো পূর্ণতা পেতে বা ম্যাচিওরড হতে আর বেশি দেরিও নেই...
তাই তারা খুব ভালো করেই জানো এই রিচ্যুয়াল টা কিভাবে সুন্দর করে করতে হয়...আমি এরকম চারজন উপযুক্ত ফ্লেজলিংকে এখানে ডেকে এই পুরো অনুষ্ঠানটা কনডাক্ট করতে নির্দেশ দিচ্ছি...আর একটা কথা ...এমনও হতে পারে...হয়তো কারোর মধ্যে এই মুহূর্তে এলিমন্টাল ফোর্সের এফিনিটি ফিল্ করার এবিলিটি তৈরি হয়নি...তার মানে কিন্তু এই নয়,যে তার মধ্যে এলিমেন্টাল ফোর্সের শক্তি আর কোনোদিন প্রকাশিত হবে না...বা এমনও হতে পারে,কোনো এলিমেন্ট প্রথমে কাউকে ভালোবেসে সাহায্য করলেও...পরে হয়তো তার উপর অসন্তুষ্ট হয়ে তাকে ত্যাগও করতে পারে...আবার কারো কারো ক্ষেত্রে এলিমেন্টাল ফোর্সের এফিনিটি বা এবিলিটি কিছু সময়ের পরে পাল্টেও যেতে পারে...তাই যে যারা এই ফোর্স ফিল করবে...বা তাকে দিয়ে কিছু করাতে পারবে...সে কিন্তু নিজেকে বেশি সুপিরিয়র বা বড় ভাবতে শুরু কোরোনা বা কখনো এই ফোর্সের অপব্যবহার করার চেষ্টা কোরো না...একটা জিনিস জেনে রাখবে...যার যত বেশি ক্ষমতা তার তত বেশি রেসপনসিবিলিটি...আর সেই ক্ষমতা বা পাওয়ার কে সুষ্ঠু ভাবে...শেষ পর্যন্ত হ্যান্ডেল করার এবিলিটি থাকাটাই সবচেয়ে বড় কথা...এনাফ লেকচার...এবার আমি ডাকবো এরিক সিম্পসন...আলোহা মুখার্জী...রাজন্য চাওলা...আর জারা সুলেমান কে...তোমরা এসো আর নতুনদের নিয়ে এই রিচ্যুয়াল কমপ্লিট করো..."
কথা শেষ করে আদিল হাসান প্রফেসরদের বসার জায়গায় গিয়ে সবার সঙ্গে এসে বসলেন...আর আমরা সবাই স্পষ্ট দেখলাম উনি ওনার ব্লেজারের ভিতর থেকে একটা ছোট্ট বোতল বার করে তার মধ্যে থাকা টলটলে...ঘন লাল রঙের তরলে চুমুক মারলেন...এই দৃশ্য টা দেখা মাত্রই আমার গোটা শরীরটা যেন তৃষ্ণার্ত হয়ে উঠলো...লোভে তৃষ্ণায় ঠোঁট জিভ সব যেন উন্মুখ হয়ে উঠলো... আমি হলফ করে বলতে পারি ওটা দেখার পর আমার বাকি বন্ধুদের অবস্থাও ঠিক আমারই মত।
" হে গাইজ্... আমি এরিক... এতক্ষণ প্রফেসর হাসান যা বললেন,তোমরা নিশ্চয়ই সেটা বুঝতে পেরেছ এলিমেন্টাল ফোর্স...কনভেনশনাল...
আনকনভেনশনাল এনার্জি, এনার্জির রূপান্তর করে তাকে কাজে লাগানো এইসব এলিমেন্টারি ফিজিক্স জেনেই আমরা সবাই ইসপ্যামাতে এসেছি... কিন্তু গডেস আমাদের যে বিশেষ এবিলিটি দিয়েছেন...তার ফলে আমরা আমাদের মানসিক শক্তি দিয়েই এইসব এলিমেন্টাল ফোর্স কে কন্ট্রোল করে... ইচ্ছে মত কাজে লাগাতে পারি...
"এক মিনিট এরিক...কয়েকটা টার্ম ইউজ্ কোরো না... এগুলো এলিমেন্টদের জন্য খুব অপমানজনক...যেমন 'কন্ট্রোল করা'... 'ইচ্ছে মতো কাজে লাগানো'...এলিমেন্টরা কিন্তু কেউ তোমার ক্রীতদাস বা সাবর্ডিনেট নয়...বন্ধু বা কমপ্যানিয়ন বলতে পারো...তাদের, কারো কারোর প্রতি বিশেষ ভালোবাসা বা এফিনিটি অর্থাৎ পক্ষপাতিত্ব থাকে...তাই তারা রিকোয়েস্ট করলে এলিমেন্টস রা ভালোবেসেই তাদের কথা শোনে... ভালোবাসা দিলেই একমাত্র ভালোবাসা ফেরত পাওয়া যায় ডিয়ার..."
" স্যরি অনিন্দিতা ম্যাম... আমার ভুল শুধরে দেওয়ার জন্য...আজ বুঝলাম,কেন প্রধান পাঁচটি এলিমেন্ট ই আপনার বশ...না ইয়ে মানে বন্ধু..."
অনিন্দিতা স্মিত হাস্যে আবার। বসে পড়লেন
"সো ফ্রেন্ডস...আমরা জানি আমাদের ইউনিভার্সে পাঁচটি প্রধান তত্ত্ব বা এলিমেন্টস আছে যা এই ব্রহ্মান্ডের সব শক্তির আধার... সেগুলো হলো..."
"আমি বলি এরিক?? তুমি তো অনেকক্ষণ বললে..."
সুন্দর ফুটফুটে মুখের...মিষ্টি হাসির জারা সুলেমান এগিয়ে এসেছে...
" তারপর কিন্তু আমি... আমাদের সবার উপরই প্রফেসর হাসান দায়িত্ব দিয়েছেন... এক/দু'জন ই বা সবকিছু কেন করবে...তাছাড়া আমিই মিডনাইটস্ প্রাইড ক্লাবের লিডার...আর আমার পাওয়ার সবচেয়ে..."
"ঠিক আছে ঠিক আছে আলোহা...ইট'স ওকে...জারা তুমি কন্টিনিউ করো..."
বুঝলাম যে আলোহা মাঝে মাঝে মিরান্ডা ম্যামকেও অপ্রস্তুত করার ক্ষমতা রাখে...
"ফ্রেন্ডস্... এরিক যেটা বলছিল... এলিমেন্টস দের মধ্যে সবচেয়ে পাওয়ার ফুল বা প্রধান এলিমেন্ট পাঁচটা... সেগুলো হলো ...জল বা ওয়াটার,..আগুন বা ফায়ার,...বাতাস বা এয়ার... পৃথিবী বা আর্থ...আর স্পিরিট বা আকাশ... এছাড়াও আরো ছ'টা এলিমেন্টস আছে...সেগুলো হলো... ইলেকট্রিসিটি বা বিদ্যুৎ... মেটাল বা ধাতু... ছায়া বা শ্যাডো...ইথার বা তরঙ্গ...মর্টাল লাইফ বা জীবন...আর ডেথ বা মৃত্যু...এখন আমাদের দেখতে হবে তোমাদের কার কোন্ এলিমেন্টের উপর এফিনিটি বা টান আছে... আর একটা কথা সবচেয়ে বড় আর পাওয়ারফুল এলিমেন্ট কিন্তু মন... অন্ততঃ আমার মেন্টর প্রিস্ট অনিরুদ্ধ আমাকে তাই ই শিখিয়েছেন..."
প্রিস্ট অনিরুদ্ধ নিজের জায়গা থেকেই জারার দিকে হেসে হাত নাড়লেন...
" বাডিস্....তাহলে তোমরা এক এক করে এসো...গডেস হেকেটি...যিনি সমস্ত ম্যাজিকাল পাওয়ারের অন্যতম প্রধান গডেস... তাঁর এফিজি বা স্ট্যাচুর নীচে এক বিশেষ শক্তিক্ষেত্র আছে...যেখানে তাঁর আশীর্বাদে যেকোনো ম্যাজিকাল রিচ্যুয়াল ভীষণ ভালো ভাবে পারফর্ম করা যায়...ইনফ্যাক্ট ইসপ্যামাতে এরকম বেশ কিছু বিশেষ জায়গা আছে...যে জায়গাগুলো এমনিতেই ভীষণ পাওয়ারফুল...যেমন সাউথের নিষিদ্ধ মাঠ ও জঙ্গল সংলগ্ন এলাকা ও তার শেষ প্রান্তের নিষিদ্ধ মিউজিয়াম ও তার আশপাশ..."
"ঠিক আছে,জারা...এসব পরে ওরা নিজেরাই জেনে যাবে... তুমি খুব ভালো বলেছ...এবার ওদের একটু বুঝিয়ে আর দেখিয়ে দাও কিভাবে এলিমেন্টদের আহ্বান করতে হয়...
"ভীষণ সিম্পল...জাস্ট যেভাবে বন্ধু দের আমরা ডাকি... একদম সেইভাবেই...যেমন আমার এফিনিটি হলো এয়ার বা বাতাস...আর এরিকের ওয়াটার..."
জারা, আমাদের দিকে তাকিয়ে একটু হেসে...বিশাল...আলো ঠিকরানো শ্বেতপাথরে বাঁধানো চত্বরের ঠিক মাঝখানে এসে দাঁড়ালো...
এতক্ষণ খেয়াল করিনি...এখন দেখলাম ধবধবে সাদা চত্বরের মাঝখানে একটা ওর থেকেও সাদা... আবছা সার্কেল...সেটা আঁকা না ন্যাচরাল...সেটা বুঝতে পারলাম না...
আর জারা ঠিক সেই গোলটার মাঝখানে গিয়ে দাঁড়িয়েছে...
জারার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতেই...হঠাৎ আমার সারা শরীরটা কেমন অস্থির হয়ে ভিতরে ভিতরে কাঁপতে লাগলো...আর আমার ভয়ঙ্কর ইচ্ছে করতে লাগলো... আমিও গিয়ে ঐ সার্কেলটার মধ্যে দাঁড়াই!! আমি দাঁতে দাঁত চেপে নিজেকে কন্ট্রোল করার চেষ্টা করতে লাগলাম...
আমরা দেখতে লাগলাম...জারা ওর দুটো হাত প্রসারিত করে এমন ভঙ্গিতে আকাশের দিকে বাড়িয়ে দিল...যেন ও আকাশ থেকে ঝরে পড়া খুব দামি কোন জিনিস ওর দুই হাতের মধ্যে ধরার চেষ্টা করছে...আর ঐ অবস্থাতেই ও আস্তে আস্তে ঐ সার্কলটার মধ্যে গোল হয়ে ঘুরতে লাগলো...যখন ঘুরতে ঘুরতে ওর মুখটা আমাদের দিকে ফিরছিল...
আমরা দেখলাম ও চোখ দুটো অর্ধেক টা বন্ধ করে ফিসফিস করে কি যেন বলছে... অন্ততঃ ওর ঠোঁটের ভঙ্গিতে তাই মনে হল.... এভাবেই কয়েকটা মিনিট কেটে গেল...আর তখনই হঠাৎ...হুউউউউউশ
নিস্তব্ধ...নিস্পন্দ রাতের প্রকৃতি ভেদ করে একরাশ হাওয়া কোথা থেকে ছুটে এসে আমাদের চারপাশ ঘিরে শনশন্ করে বয়ে যেতে লাগলো...
না না...বয়ে চলে গেলো না বরং বাতাসের সাধারণ ধর্ম কে উপেক্ষা করে আমাদের সবার চারপাশে পাক খেতে লাগলো...খেতেই লাগলো! আমাদের চুল, পোষাক সবকিছু এলোমেলো করে দিয়ে...সবচেয়ে বেশি এলোমেলো হতে থাকলো জারার চুল,ওর লম্বা সুন্দর পিংক কালারের ফ্লোয়ি গাউন টা, যেন হাওয়াটার কেন্দ্রস্থলই ওই সাদা সার্কেল টা আর তার মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা জারা...
ধীরে ধীরে বাতাসের বেগ বাড়তে লাগলো... বসন্ত দিনের ফুলের গন্ধ বয়ে আনা দক্ষিনা বাতাস আস্তে আস্তে এলোমেলো সাইক্লোনিক হয়ে উঠতে লাগলো...আমাদের পোশাক-আশাক,চুল সামলে রাখাই দায়ী হয়ে উঠতে লাগলো।
দেখলাম...প্যামের মাথার রেড হেয়ারব্যান্ড টা ওর মাথা থেকে নিমেষে উড়ে কোথায় হারিয়ে গেল...মিট্টি...আমি হাজার চেষ্টা করেও আমাদের বেসামাল চুল সামলাতে পারছিলাম না।
"জারা... তোমার এলিমেন্ট কে যেতে রিকোয়েস্ট করোওওও"
বাতাসের প্রবল শোঁ শোঁ আওয়াজ ভেদ করে প্রিস্ট অনিরুদ্ধর গলা শোনা গেল...
প্রবল বাতাস থেকে নিজের চুলে ঢেকে যাওয়া চোখ কোনোমতে মুক্ত করে... আমি দেখলাম জারা হাঁটু মুড়ে বসে পড়েছে...আর সেই ভাবেই হাত তুলে বিড়বিড় করে কিছু বলছে...
সুউউউউশ্... আমাদের চারপাশ জুড়ে বইতে থাকা উন্মত্ত বাতাস আস্তে আস্তে সার্কলটার আর জারার আশেপাশে কেন্দ্রীভূত হতে থাকলো
আর প্রবল বেগে বইতে থাকা এলোমেলো হাওয়াটা আস্তে আস্তে সম্পূর্ণ থেমে গেল...আর যেন রাতের আকাশে বিলীন হয়ে গেল...প্রকৃতি এমন শান্ত হয়ে গেল...যেন একটু আগে বয়ে যাওয়া ঐ এলোপাতাড়ি প্রবল হাওয়া কখনো ছিলোই না...সবটাই আমরা কল্পনা করে ছিলাম...
"ওয়েল ডান জারা... ভেরি ভেরি ওয়েলডান..."
সব প্রফেসর রা একসাথে ক্ল্যাপ করে উঠলেন... জারার মুখে সলজ্জ তৃপ্ত হাসি...ও তখনও একটু একটু হাঁপাচ্ছে
"তাহলে ফ্লেজলিং...দেখলে তো? কিভাবে এলিমেন্টদের আহ্বান করতে হয়? জাস্ট সার্কেলের মধ্যে এসে দাঁড়াও...গডেসদের স্মরণ করো...আর একাগ্র মনে এলিমেন্টসদের আহ্বান করে প্রশ্ন করো কে তোমাদের বন্ধু হতে চায়...প্রয়োজনে তোমাকে সাহায্য করতে চায়...দ্যাটস্ ইট...যদি তোমাদের এবিলিটি থাকে...এলিমেন্ট রা তোমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে... নিজেদের উপস্থিতি ঘোষণা করবে...ঠিক যেমন জারার ডাকে এয়ার সাড়া দিল..."
" তাহলে এক এক করে চলে এসো... রিজওয়ান মালিক তুমি আগে চলে এসো"
আমাদের দল ছেড়ে রিজ্ নার্ভাস মুখে এগিয়ে গেল...আমরা চোখ দিয়ে ওকে ভরসা দেওয়ার চেষ্টা করলাম....
আর অধীর আগ্রহে দম বন্ধ করে আমাদের বন্ধুর ধীরে ধীরে চক্রের মধ্যে গিয়ে দাঁড়ানোর দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম...
ক্রমশ...
0 Comments.