Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে দেবদাস কুণ্ডু (পর্ব - ৮)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে দেবদাস কুণ্ডু (পর্ব - ৮)

লড়াইয়ের মিছিল

পর্ব - ৮

খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে হল ঘরটা। সাজানো হয়েছে অফিস ঘরটা। কাঁচের সেলফে বসে আছে রামকৃষ্ণ আর লোকনাথ বাবা। টেবিলে ল্যাপটপ। একটা ল্যান্ড ফোন। রজনী গন্ধা ফুল একগুচ্ছ। ডেক্স ক্যালেন্ডার। দুটো ইংরেজি কাগজ। দেওয়ালের রং হালকা সবুজ। তাতে উড়ছে অসংখ্য প্রজাপতি। কারখানার ওয়াল গোলাপী। নানা রংঙের পাখি ফুল দিয়ে সাজানো। চারটে মেশিন চলছে। বুনছে গেঞ্জির কাপড়ের থান। রাম রহিম কাজ করছে। ওদের মাথায় গুরো গুরো তুলো। ওরা পড়েছে নতুন পোষাক। তাতে লেখা রাধা গোবিন্দ টেক্সটাইল। গৌরাঙ্গ বনিক পড়েছে জিনিসের প্যান্ট। সাদা জামা। তাও আবার গুজে। যা কোনদিন করে নি। তিয়াস বলেছে। ফেনসকাট দাড়ি। চুল একটু আলুথালু। প্রতিদিনের একটা চিহ্ন রেখেছে। রূপে পোষাকে তাকে হ্যান্ড সাম স্মাট লাগছে। সকাল থেকেই সে ব্যস্ত। তার মাসতুতো ভাই বিজন আর রবিও ব্যস্ত। তারাই এই সব ব্যাবস্থা করেছে। আর্টিফিশিয়াল শিল্পী দিয়ে সব ডেকরেশন করা হয়েছে। অফিস ঘরে এ সি চলছে। বেশ ঠান্ডা হয়েছে ইতিমধ্যে। দুটো সুদৃশ্য চেয়ার আনা হয়েছে। আনা হয়েছে কফি। মিস্টি থামসআপ।ঠান্ডা বিয়ার। একটা উত্তেজনা বইছে 32 বছরের গৌরাঙ্গ বনিকের শরীরে। প্রতিদিন সে থাকে ধূষর পোষাকে। পরিশ্রমী শ্রমিক। কেউ দেখলে তাকে বলবে না সে দুটো কারখানার মালিক। একটি রেন কোর্টের অন্যটি লাইফ জ্যাকেট। নতুন উন্ডো খুলেছে ছ মাস হয়েছে। নেটিংমেশিন।থান কাপড় বেরিয়ে আসে। এই নতুন উন্ডোটা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে করেছে। সুইডেনের হকিং কোম্পানি থেকে চারটে মেশিন ইমপোট করেছে। তার মতো দশজন কিনেছে। মেশিন কেমন সার্ভস দিচ্ছে। তারা কেমন বিজনেস করছে তার ভিজিটিংএ আসছেন কোম্পানির সুপারভাইজার স্যামূয়ের ডন। সংগে আসছেন প্রোডাকশন ম্যানেজার নিউবান স্ট্যাফিন। দশটা দশে সুইডেনের এয়ার বাস দম দম আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে ল্যান্ড করেছে। রিসিভ করতে গেছে বিজন। এখন তারা জি টি রোড ধরে এসে পড়বে আগর পাড়া। ফাস্ট ভিজিট তার কারখানা। আজ পাঁচটা ভিজিট করে উঠবেন তাজ হোটেলে। কাল অন্য পাঁচটি। যার কারখানা এবং বিজনেস দেখে সন্তুষ হবেন তাদের তিন দিনের সুইডেন ভ্রমণের প্যাকেজ ট্যূর দেবে। যেদিন চিঠি এলো সেদিন খুশি হয়েছিল তিয়াস। সে বলেছিল, 'দেখবে তিন জনের মধ্যে তোমার নাম থাকবে। তোমার পাসপোর্ট আছে। আমারটা এপ্লাই করে দাও তাড়াতাড়ি। আমরা সুইডেন যাচ্ছি।' অনলাইন তিয়াসের পাসপোর্ট আবেদন করেছে। ইনসপেকশন হয়ে গেছে। পাসপোর্ট এসে পড়লো বলে। তিয়াস প্রায়ই স্বপ্ন দেখে হাজার হাজার ফুট উঁচু দিয়ে তাদের প্লেন উড়ে যাচ্ছে বরফের দেশে। আজ সেই স্বপ্ন পূরন এর দিন। সেও বিউটি পাল্লারে গিয়ে সেজেছে হেভি। বেশ গর্জেস লাগছে। গৌরাঙ্গ দেখছে মুগ্ধ চোখে। তিয়াস বলল, 'কি দেখছো তুমি?' 'দেখছি এতো সুন্দর লাগছে তোমায়, সাহেবরা দেখে না অজ্ঞান হয়ে যায়।' 'ধ্যাৎ।অসভ্য।' 'অফিসটা কেমন সাজিয়েছি দেখবে না? অফিস ঘরে ঢুকে তিয়াস চোখ ফেরাতে পারছে না। আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছে। একটা অফিস এতো সুন্দর হতে পারে! সে আরো আশ্চর্য হয়ে গেল যখন হঠাৎই গৌরাঙ্গ তার গালে আতলো করে চুমু খেল দুটো। সে বলল, 'এটা কি হলো?' 'খুব টেনশন হচ্ছে তো, তাই----' 'তাই চুমু খেতে হবে?' 'তুমি জানো একটা চুমুর কতো শক্তি?' ' 'কবে এটা জানলে?' 'একটা জার্নালে সেদিন পড়লাম।' 'আজকাল আবার এসবও পড়া হচ্ছে বুঝি?' 'পড়লে অন্যায়টা কোথায়?' 'এরপর ঐ সব পর্নো বই পড়বে বুঝি?' 'ও গুলো অসুস্থ মানুষেরা পড়ে। ' ' তাই বুঝি? ' ' আচ্ছা খেয়েছি তো দুটো চুমু। তাও নিজের বউকে। অন্যায় করেছি? ' মোটেও না।' তারপর পায়ের টোতে ভর দিয়ে তিয়াস স্বামীর ডাল লাগে একটা চুমু খেল। আর ঠিক তখনই বাইরে গাড়ির হর্ন বেজে উঠলো। দুজনেই অফিস ঘর থেকে বেরিয়ে এলো।

ক্রমশ...

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register