Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

।। ত্রিতাপহারিণী ২০২০।। T3 শারদ সংখ্যায় অনসূয়া চন্দ্র

maro news
।। ত্রিতাপহারিণী ২০২০।। T3 শারদ সংখ্যায় অনসূয়া চন্দ্র

হলুদ পাতা

অদ্ভুত নেশার মত ঘাড় গুঁজে ফেসবুক ঘে়ঁটে চলেছে তপু।সারাদিনের ক্লান্তি, ছোট্ট বাচ্চাটাকে নিয়ে হিম‍শিম খেতে খেতে অন‍্যদিন বিছানায় পড়লেই ঘুম চলে আসে। কিন্তু আজ সে দুচোখ টেনে রেখেও খুঁজছে তার প্রেমিকদের। মানে এমন নয় এদের মধ্যে সবাই তাকে প্রেম নিবেদন করেছে; কেউ দূর থেকে চোখ দিয়ে চেয়েছে, কেউ কাছে এসে টক্ করে হাতটা ধরেছে, কেউ বা ছোট্ট একটা খাম ব‍্যাগে রেখে দিয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সকলে যে যার জায়গায় চলে গেছে, মোবাইলের চল্ তখন না থাকায় নাম্বারও নেই। আর ঠিকানা রাখার প্রয়োজনও তখন ছিলনা কারন বেশিরভাগ জনই তার ছোট্ট শহরের বাসিন্দা ছিল। সেখানে পাড়ার নামেই ছেলেপিলের পরিচয়। এদের মধ্যে একজন বিশেষকে সে বিশেষভাবে সার্চ করছে। নামটা মনে আছে সারনেমটা ডাউটফুল। তাও সে খুঁজছে । একে প্রেমিক শ্রেষ্ঠ বা পাগল প্রেমিক বললেও ভুল বলা হবেনা। নাজেহাল করে ছেড়েছিল তপুকে। ব‍্যাচের বাইরে দাঁড়িয়ে, ল‍্যান্ডে বারবার ফোন করে, বন্ধুদের দিয়ে অনুরোধ করে ঠিক রাজি করিয়ে নিয়েছিল একা তার সঙ্গে দেখা ক‍রার জন্য। তপু একরকম বাধ্য হয়েই, আবার শর্তও ছিল সঙ্গে কারোর আসা চলবেনা। সাইকেল চার্চের পেছন দিকে ঢালু পথ বেয়ে নামতেই সামনে আসে আরিফ। ভূত দেখার মতই লাগে তপুর। চামড়ার রং আর সন্ধ‍্যের নিভু আলো এক হয়ে আসে। ভালো আছিস? কী বলবি বল। ঝোলা থেকে একটা বই বার করে আরিফ বলে, আমি জানি তুই পড়তে ভালোবাসিস‌। কে বলল? কেউ না। তাহলে? তুই কী করে.. থামিয়ে দিয়ে আরিফ বলে নাম লিখিনি কোথাও, তোর পরে অসুবিধা হতে পারে। সেই প্রথম সেই শেষ। তারপর আজ এতগুলো বছর পর হঠাৎ কী মনে করে তপু তাকে খুঁজছে বলা মুশকিল; হয়ত নিত্য একঘেয়েমি থেকে একটু মুক্তি পেতে নাকি কোনো পরকীয়ার আশায়!! তবে বইয়ের তাক ঘাঁটতে ঘাঁটতে জীবনানন্দ সমগ্রটা চোখে পরতেই পৃষ্ঠা উল্টে উল্টে তপোলব্ধা ভেবেছিল, একটা নাম, দু-চার প্রেমের কথা থাকলে ভালোই হত।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register