Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক কোয়ার্কো ধারাবাহিক উপন্যাসে সুশোভন কাঞ্জিলাল (পর্ব - ৪৩)

maro news
সাপ্তাহিক কোয়ার্কো ধারাবাহিক উপন্যাসে সুশোভন কাঞ্জিলাল (পর্ব - ৪৩)

তেতাল্লিশ

আমার নাম্বার টা কি করে পেলো? লুলিয়াকে কি ফোন করেছিল ওরা? ভাবলাম লুলিয়াকে একবার ফোন করে দেখি। কলিং বেল টা বেজে উঠল। আবার কে এলো?আমাকেই দরজা খুলতে হবে।আমি আসার সঙ্গে সঙ্গেই বাল্মীকি বাজার করতে গেছে। নিশ্চই এতো তাড়াতাড়ি ফিরে আসেনি। তবে ভুল করে কিছু ফেলে যেতে পারে। উঠে দরজা খুলে দিলাম। দেখি কুড়ি বাইশ বছরের একটি ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। চোখে হাই পাওয়ারের চশমা আর মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ি। কটনের একটা ঢলঢলে প্যান্ট আর টেরিকটের জামা না গুঁজে পড়া। পায়ে কোলাপুরি ছটি কাঁধে ঝোলা ব্যাগ। একঝলক দেখলে কোনো আঁতেল কবি। জিজ্ঞাসা কর্কম, "কাকে চাই?" ছেলেটা যেন অনেক কষ্টে মুচকি হেসে বললো, "শ্রেয়ান কি এখানে থাকে?"বললাম, "হ্যাঁ এখানেই থাকে কিন্তু এখন নেই। তুমি এসো ভেতরে এসে বসো "। ছেলেটা বাধ্য ছেলের মতো সোফায় গিয়ে বসলো। আমিও বসলাম ছেলেটা জিজ্ঞাসা করলো, "নেই মানে ও কি কোথাও গেছে? "বললাম, "তুমি কি ওর বন্ধু? কি নাম তোমার? "। ও হাত জোর করে বললো, "নমস্কার আমার নাম অনিকেত মাইতি। শ্রেয়ানের কলেজের বন্ধু। ওর সঙ্গে একটা বিশেষ দরকার ছিল। আসলে ওকে ফোনে অনেকবার ট্রাই করেছি। কিন্তু প্রত্যেকবারই বলছে সুইচ অফ। তাই ভাবলাম একবার খোঁজ নিয়ে আসি। ও ভালো আছে তো? "আমি ভাবছি ছেলেটা তো পুরো পুরি শ্রেয়ানের বিপরীত মেরুর বাসিন্দা। এর কদমছাঁট আর শ্রেয়ানের কাঁধ পর্যন্ত ঝাঁকড়া। এ শান্ত শ্রেয়ান ছট ফটে। আমি বললাম, "শ্রেয়ান দিল্লি গেছে কদিনের জন্য। তোমার কিছু দরকার থাকলে আমায় বলতে পার। "ছেলেটা আমতা আমতা করে বললো, "না তেমন কিছু না। ওকে কিছু বলার ছিল। ও তো কলেজে প্রায় যায়না। কিন্তু আমার মেসে মাঝে মাঝে আসে। আমরা দুজনে দাবা খেলি। মানে আমরা কলেজ ফ্রেন্ড এর থেকেও চেজ ফ্রেন্ড বেশি"। এতক্ষনে ছেলেটার মুখে একটা ফুল সাইজের হাসি বেরোলো। ছেলেটা বেশিক্ষণ মুখের দিকে তাকিয়ে কথা বলে না। মাঝে মাঝে চোখ নামিয়ে নেয়। আমি আগের কথার খেই ধরে জিজ্ঞেস করলাম, "আচ্ছা, তুমি বললে মেসে থাকো তোমার আসল বাড়ি কোথায়? "ও বললো, "মেদিনীপুর। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে কলকাতায় আশা"। ছেলেটা ভালোমানুষ গোছের দেখে মনেহচ্ছে যে পড়াশুনাতেও ভালো। ছেলেটা উঠে দাঁড়িয়ে বললো, "তাহলে আমি আসি। ও এলে আমাকে একটা ফোনে করতে বলবেন প্লিজ "। আমি বললাম তুমি বরং তোমার ফোন নাম্বারটা দিয়ে যাও। শ্রেয়ান বোধহয় ওর মোবাইলটা হারিয়ে ফেলেছে "। ছেলেটা দাঁড়িয়ে যেন খুব চিন্তায় পরে গেল। মাথা চুলকে বললো, " তাহলে নাম্বারটা লিখে যাই সঙ্গে একটা চিঠিও"। বলে নিজের ঝোলা থেকে কাগজ আর পেন বার করে খস খস করে কিসব লিখে ফেললো। চিরকুটটা আমার হাতে দিয়ে বললো, "এটা ওকে দয়া করে দিয়ে দেবেন। আমি এখন আসি "। আমি বললাম, "এক কাপ চা খেয়ে যাও। প্রথমবার এখানে এলে। তাছাড়া শ্রেয়ান জানলে রাগ করবে যে ওর বন্ধুকে এক কাপ চাও খাওয়াতে পারিনি "। ছেলেটা কিন্তু এবার না হেসেই বললো, "না, আমি যাই "বলে হন হন করে চলে গেল। ভাবলাম গুড বয় টাইপ তো তাই লৌকিককতার ধার ধারে না। দরজাটা খোলাই থাক। বাল্মীকি তো এখুনি আসবে। চিরকুটটা শ্রেয়ানের ঘরের টেবিলে রাখতে গিয়ে দেখতে পেলাম একটা ফোন নাম্বার লেখা, আর লেখা আছে, শ্রেয়ান তোর কবিতাটায় মনে হচ্ছে ভারতের জাতীয় সংগীতে যেই লেটার গুলো নেই সেগুলির কথা বলা হয়েছে। মানে F, Q, W, X, যে বাট আমি সিওর নই। - অনি

ক্রমশ...

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register