Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

গদ্য বোলো না -তে (রূপং দেহি, জয়ং দেহি) রাহুল গাঙ্গুলী

maro news
গদ্য বোলো না -তে (রূপং দেহি, জয়ং দেহি) রাহুল গাঙ্গুলী

মহালয়া (১৭/০৯/২০২০) ~ মাতৃপক্ষ শুরু

(১টি সম্ভাবনা-উৎস থেকে : সম্ভাবনা'র কবিতা)

মহালয়া; অর্থাৎ শক্তিরূপেন সংস্থিতা ~ যেখান থেকে শুরু মাতৃপক্ষ বা দেবীপক্ষ।প্রথমোক্তটি (মাতৃপক্ষ) যদি উৎস হয়; দ্বিতীয়টি (দেবীপক্ষ) নিশ্চিতভাবে সেই উৎসের ধারক্।অর্থাৎ সহজ কথায় উৎস'টিকে নিজে ধারন করা।এখোন যদি এই 'উৎস'টিকে বিভাজিতো করা যায় বা ভাঙচুর করা যায়; শক্তি এবং সময়ের এক অদ্ভুত সমীকরণ পাওয়া যেতেই পারে, তাই না!কারণ, যেকোনো উৎস থেকে ধারক ~ উভয়ের অন্তর্গতো অভ্যন্তরীণ উপাদান ও গতিবেগ : এরাই মুখ্য।যদিও, বর্তমান সময়ে অনেকেই বিশ্বাস করেন বা করতে চান বা করতে বাধ্য হন ~ যে সত্যিই কোনো এক পুরাকালে এক অসুররূপী শয়তান'কে বধের প্রয়োজনে, কোনো এক মাতৃপক্ষের অকালবোধন আয়োজিতো হয়েছিলো।তবে, তাঁর এটিও বিশ্বাস করা বাধ্যবাধকতামূলক ~ এই ব্রহ্মাণ্ডে কোনো একটি অসুরলোক এবং কোনো একটি দেবলোক জনিতো স্থান আছে; আর এটি বিশ্বাস করবেন কি? ~ তাদের সংযোগস্থলে রামরাজ্য প্রচারের নেপথ্যে থাকা মর্কটবাহিনীর প্রতি আস্থাশীল হওয়া উচিৎ।এবার বলবো, যাঁরা এই বিশ্বাসে বিশ্বাসী; তাঁদের অবিলম্বে এই লেখাটির পাঠ বন্ধ করা আবশ্যিক।আসলে, ১টা সাহিত্য (হয়তো তাকে ট্যাগ্ করা হোলো ধর্মীয় বিভাগে), তার অভ্যন্তরে থাকা প্রতীকী সারাৎসার'টুকু খেয়াল করে দেখলেই বোঝা যায় ~ তার অসীম সম্ভাবনাগুলি।একে দ্যাখা'র চোখ ও অনুভব করার বোধ অবশ্য থাকা চাই।ওপরে এই যে মাতৃপক্ষ / দেবীপক্ষ সম্পর্কিতো সময় ও শক্তির সমীকরণটি পাচ্ছি; তা কি সমূহ সম্ভাবনা'র ইঙ্গিত-কথন নয়? যদিও সম্ভাবনা সমূহ থাকা সত্ত্বেও, একথা খুবই দুঃখজনক যে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই দ্যাখা (পক্ষান্তরে ভাবা) ব্যাকরণটি হয় না।কিন্তু ক্যানো? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে গেলে ~ ভাবনার মাধ্যমটিতে চেতনার স্রোত'কে কোনো একক তরঙ্গ বা অনেকগুলি নানান্ চরিত্রের তরঙ্গ সংযোজনে তরঙ্গ-সমগ্র ধরে নিলে সুবিধে হবে।তরঙ্গের একটি গড় বৈশিষ্ট্য হলো : উৎস থেকে অন্তে মাধ্যমটির চরিত্র অনুযায়ী সম্ভাব্য যতোটা দ্রুত পৌঁছে যাওয়ার প্রচেষ্টা।য্যামোন ধরা যেতে পারে, তড়িৎচৌম্বকীয় তরঙ্গ কোনো বায়োলজিক্যাল জীবন্ত শরীর পেলে, অন্যান্য বাকি মাধ্যমগুলির তুলনায় অপেক্ষাকৃত দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছায়।সহজভাবে সাধারন তড়িৎপ্রবাহ বা ইলেক্ট্রিসিটি ধরা যেতে পারে (যদিও তরঙ্গ ও তড়িৎপ্রবাহের ফারাক আছে)।ত্যামোনই, মস্তিষ্ক বেশিরভাগ সময়েই ভাবনা না ভেবেই সিদ্ধান্তে পৌঁছায় এবং এর প্রধান কারণ মস্তিষ্কের বেশিরভাগ কাজই ঘটে প্রতিবর্ত ক্রিয়ার ফলস্বরূপ।অতএব, যেহেত ভাবনা বিষয়টির দৈনিক অনুশীলনের অভাব।সেহেতু, প্রতিবর্ত-ক্রিয়া অনুযায়ী দ্রুত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো মস্তিষ্কের সহজাতো প্রবণতা।এ নিয়ে আরো আলোচনা করাই যায়, তবে আপাততো তা না করে চিন্তা কিভাবে সম্ভাবনাসমূহ'র দরজা খুলে ফেলতে পারে, সে বিষয়টি একটু দেখা যাক।এখানে আমরা মাধ্যমটি ধরে নিচ্ছি "কবিতা"।
উদাহরণস্বরূপ ধরা যাক, একতাল মাটি।এই মাটি দিয়ে নির্মাণ করা হলো একটি আকার।এই আকারটিকে বিভিন্ন রং ও সাজসজ্জা প্রয়োগ করে করা হলো উৎকৃষ্ট দৃষ্টিগ্রাহ্য রূপ।ওপরের স্তরত্রয়, তিনটি ক্রমিক পর্যায়।এবারে, প্রথম পর্যায়টি বিশ্লেষণ করলে পাবো ~ একতাল মাটি : সে যেকোনো আকারে পরিণত হতে পারে।অর্থাৎ, নির্মাণের সেই অজস্র সম্ভাবনা; যে অবস্থানটিকে আমরা বলতে পারি এক সমসত্ত্ব নিরাকারমুখী অবস্থান।এবারে দ্বিতীয় পর্যায়ে আকার; এখানে সম্ভাবনা কিছুটা কমলেও একেবারে সম্ভাবনাহীন নয়।কারণ, এই আকারকে যেকোনো দৃশ্যে পরিণত করা যায় বা যেকোনো দৃষ্টিগ্রাহ্যতা'র চূড়ান্ত রূপ প্রদান করা যায়।এই অবস্থানকে বলতেই পারি ~ আকার রূপান্তরযোগ্য।তৃতীয় পর্যায় : চূড়ান্ত দৃষ্টিগ্রাহ্য রূপ; যা সম্পূর্ণ ও আকারের সর্বশেষ রূপ ~ যার ভিন্ন রূপান্তরকরণ অনেক জটিল। কবিতার মাধ্যমটি যদি এবারে মনে করা হয় : সেখানেও পর্যায়ক্রমিক প্রধানতো এই তিনটি রূপই মুখ্য।আর, এর সাথে কী আকারটি প্রদান করা হবে ~ ভাবনাটি যদি থাকে; তবে আমরা যা দেখতেং পাবো : নিরাকারমুখী কবিতায় থাকা বিমূর্তকে ভাবনা প্রয়োগে মূর্তরূপ দেওয়া যায়।দ্বিতীয় পর্যায়ের মূর্তরূপটিকে নান্দনিকতা'র অলংকার বা বেশভূষা প্রয়োগ করে আমাদের 'সুন্দর'বোধের প্রতিবর্তক্রিয়া অনুযায়ী সৌন্দর্যময় করে তোলা।কিন্তু তৃতীয় পর্যায়ে সম্ভাবনা নেই; অতএব এই আপাত 'সৌন্দর্য' ও 'সম্ভাবনা' এই উভয় বিষয় কিছটা হলেও পরস্পর বিরোধী।সম্ভাবনাহীন সৌন্দর্য হয়তো অতি সহজেই আকর্ষণীয় হতে পারে, কিন্তু তা একপ্রকার সীমাবদ্ধতা হিসেবেই আজীবন থেকে যাবে।আসুন, দ্যাখা যাক ~ উপরিউক্ত এই পর্যবেক্ষণ ও সমূহ সম্ভাবনাকে কীভাবে আমরা মিলিয়ে দিতে পারি : যদি এমন একটি বক্তব্য বলা হয় ~ "এই ব্রহ্মান্ডের যাবতীয় যাকিছু ~ বিমূর্ত এবং নিরাকার অভিমুখী।" তাহলে কি পাঠক আশ্চর্য হবেন? "পর্বত" শব্দার্থটি এলেই আমাদের ভিতর তার একটি সমান্তরাল দৃশ্য ভেসে আসে।এখন সেই দৃশ্যটির নাম যে "পর্বত" সে শব্দার্থটিকে বিয়োগ করে ফেললেই বিষয়টি আর মূর্ত থাকবে কি?
যাইহোক, এবার একটি কবিতা'র উদাহরণ নেওয়া যাক এবং দ্যাখা যাক কয়েকটি নমুনাস্বরূপ সম্ভাবনা : (ঐহিক থেকে প্রকাশিতো ২০১৮তে দ্বিতীয় বই "ব্যক্তিগত জরায়ু থেকে")
(সম ≠ পর।কি।তো?)?
এটি একটি একশব্দের কবিতা (মূল শব্দ : সম্পর্কিত)।শব্দার্থটিকে ভেঙে, এর অভ্যন্তরীণ গতিশক্তিকে কিছু চিহ্ন প্রয়োগে ট্রিগার করলে ~ কী কী সম্ভাবনা খুলে যেতে পারে, আমরা দেখি
[[ বিপরীত সত্ত্বাটি সমান নয় সমানত্ব দাবি জানালেই বা কি হয় অতএব হতে পারা ফুৎকারে উড়িয়ে সজ্জার ভিতরে রাখা প্রশ্নচিহ্ন
গোটা বিষয়টি আমারই অভিমুখে অনির্দিষ্ট চ্যালেঞ্জ
]]
কয়েকটি সম্ভাবনা'কে আরেকটি কবিতায় রূপান্তরিতো করে তুলে ধরলাম।এবার আরেকটি ধাঁচ লক্ষ্য করে, আসুন ট্রিগার করা যাক :
[[ ভাগ হয়ে গেলাম রীতিমত সমানভাবে আমি এবং বিপরীতেও আমি এভাবেও আপনত্ব বিয়োগ বুঝিনা কখন সময় বিয়োজিত টুকরোটুকরো বিয়োগ বিপরীত যোগফল'ই তো হয় সম্পর্কে যোগফল ঘটুক
কথাহীন অবস্থানমুখে প্রশ্নচিহ্ন থাকেই কোষ থেকে কোষ জুড়েজুড়ে, ভেঙে মহাজাগতিক ব্যবচ্ছেদ ]]
এভাবেই প্রতিটি অক্ষর/শব্দ/চিহ্ন/সংখ্যা/শব্দার্থ/ইত্যাদি ~ সম্পর্ক স্থাপনের শৈলিগুলিকে যতোই নানারকমভাবে সাজানো যাবে; খুলে যাবে নতুন নতুন কিছু কবিতার সম্ভাবনা : ভবিষ্যৎের বীজ।আর এগুলোর প্রতিটারই বাস্তব বৈজ্ঞানিক্ ভিত্ রয়েছে ~ কিছু আবিষ্কৃত / কিছু অনাবিষ্কৃত; তা সে "আমি পাথর কেটে স্ট্যাচু বানাই, পায়রা কেটে আকাশ" (নো ম্যানস ল্যান্ড; কবিতা পাক্ষিক ২০১৭) হোক বা "শরীরে গলে যাচ্ছে ১০০০ সূর্য ও অনুভূমিক" (কবিতাটির নাম এখনই মনে পড়ছে না) হোক।এরকম সম্ভাবনাময় কবিতার কথা, বাংলা মাধ্যমে অজস্র রচিতো হয়েছে; যা দুর্বোধ্য ট্যাগলাইনে অভিষিক্ত এবং আন্তর্জাতিক।তবু নিজের লেখা পুরনো কবিতারই ডকুমেন্টেশন করলাম, অনেকটা বলতেই পারেন "নিজের ঢাক নিজেই পেটালাম" ইচ্ছাকৃতভাবেই।
এবার, এই ব্যক্তিগতো নোটখানি শেষ করার পালা।সুতরাং, আরেকটু ঢাক পেটাবো : নতুন লেখাগুলিতে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করছি, তাকে অতি সহজেই উদাহরণস্বরূপ খাড়া করা যেতো, করলাম না কারণ ~ সেসব পাঠকের জন্য হোমটাস্ক হিসেবেই থাক।তবে, আজ তো মাতৃপক্ষের সাথেসাথে হিন্দুমতে প্রযুক্তিদেবতা'র দিন।তাই প্রযুক্তি নিয়ে একটি কথা বলা দরকার।তা হলো : প্রযুক্তি বিষয়ক কথা এলেই, বেশিরভাগ গড় মানসিকতা ভেবে ন্যান্ প্রযুক্তি কোনো মেশিনযাতীয় অংশ; এনাদের জন্য এটুকুই বলা উচিৎ : প্রযুক্তি হলো স্রেফ ভাবনার একটি প্রয়োগই।একথা সভ্যতার শুরুর থেকে ইতিহাস ঘাঁটলেই পাওয়া যাবে।সুতরাং কবিতার সাথে ভাবনা'র সমীকরণে প্রযুক্তি'র সম্পর্ক স্থাপন কঠিন নয়।আর, প্রযুক্তিকে সভ্যতার ক্ষতিকারক-রূপ ব্যবহার করা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে; আশা করি কবিতা যদি অসৎ ব্যক্তি লেখে, তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠা উচিৎ
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register