Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

ভোকাট্টা, বিশ্বকর্মা আর কিছুটা স্মৃতি...

maro news
ভোকাট্টা, বিশ্বকর্মা আর কিছুটা স্মৃতি...

ভোকাট্টা আর বিশ্বকর্মা আর কিছুটা স্মৃতি...

ঘুড়ি, লাটাই, হাফ ইয়ারলি পরীক্ষার সাথে ঢাকে পড়লো কাঠির একটা অমোঘ যোগ ছিল... মনের ভিতর এক এক্কে এক, দুই এক্কে দুই আর ঘুড়ির সুতোয় মাঞ্জা!!! যতই হাফ ইয়ারলি চলুক না কেন, বিশ্বকর্মা পুজোর দিন আমার পিসির ছেলেরা মানে আমার দাদা, ভাইরা আমাদের বাড়ির ছাদে, আর মাঝে মাঝেই চীৎকার ভোকাকাকাকাট্টা.... আমায় দেখে যতই লক্ষ্মী মেয়ে মনে হোক না কেন, বাবা বিশ্বকর্মার কৃপায় এইদিন আমি দাদাকেও বোলে বোলে হারাতাম...
এখনো বিশ্বকর্মা পুজো এলেই আমার একটা অদ্ভুত স্মৃতি ভেসে আসে... প্রতি দশ হাত দূরে একটা করে প্যান্ডেল, আর তা থেকে মিক্সড গান ভেসে আসছে সেটা খানিকটা এমন, *দেখা হ্যায় পহেলিবার দিল মেরা গোরিয়া দিল দিবানা হ্যায়... ডিজে ছাড়াই পুরো ডিজে মিক্স!!!
যাই হোক বিশ্বকর্মা হাতি চেপে আসলেন মানেই কর গোনা শুরু... আজকাল অবশ্য বাঙালি আর বিশ্বকর্মার জন্য অপেক্ষা করছে না। গণপতি বাপ্পা মোরিয়া বলেই চারিদিকে কাউন্টডাউন শুরু... এই যে শুরু হল থামবে গিয়ে যীশুপুজোয়। মাঝে জগদ্ধাত্রীর পর একটা পাওয়ার ন্যাপ নেবে শুধু!!!
সম্পাদকীয় বলে কথা, তাই শুধু স্মৃতি না হাতড়ে একটু বিশ্বকর্মাকেও জেনে নিই দু এক কথায়...
পুরাণ মতে, বিশ্বকর্মা হলেন দেবলোকের কারিগর- সোজা কথায় যাকে বলা যায় দেবতাদের ইঞ্জিনিয়ার অথবা প্রকৌশলী। ব্রহ্মার আদেশে বিশ্বকর্মা দেব এই ধরাধামকে নিজে হাতে তৈরী করেন। কৃষ্ণের বাসস্থান দ্বারকা নগরী গড়ে ওঠার পিছনেও এই দেবতার হাত।
বিশ্বকর্মা বিভিন্ন রকমের যুদ্ধাস্ত্র তৈরিতেও পারঙ্গম। ঋগবেদ অনুসারে, বিশ্বকর্মা হলেন স্থাপত্য এবং যন্ত্রবিজ্ঞান বিদ্যা অথবা স্থাপত্য বিদ্যার জনক।
বহু বহু বছর ধরেই বাংলার বুকে বিশ্বকর্মা পুজো হওয়ার সময় আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর চল রয়েছে। ১৮৫০ সাল থেকেই বলা চলে বঙ্গদেশে ঘুড়ি ওড়ানোর প্রচলন শুরু হয়। তখনকার দিনের বেশ কিছু ধনী ব্যক্তি নিজের অর্থ-প্রতিপত্তি দেখানোর জন্য ঘুড়ির সঙ্গে টাকা বেঁধে আকাশে ওড়াতেন। এমনও শোনা যায় অনেক রাজা জমিদার নাকি, টাকা জুড়ে আস্ত ঘুড়ি বানিয়ে আকাশে ছাড়তেও কার্পণ্য বোধ করতেন না।
বিশ্বকর্মা পুজো মূলত উত্তর-পূর্ব ভারতেই বেশি লক্ষ্য করা যায়। হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী 'কন্যা সংক্রান্তি'-র দিনে এই বিশ্বকর্মা পুজো পালন করা হয়।
এই ২০২০ তে বিশ্বকর্মা পুজো আর মহালয়া মিলে গেছে, মা নিজেও মহালয়ার পর এক মাসের অপেক্ষা দিয়েছেন আমাদের... তাই আগামীকাল ভোরের তর্পণে মিশে যাক ত্রিতাপহারিণী মায়ের আগমণের আকাঙ্ক্ষা!!!
মা আসুন সমস্ত রোগ, ভয় আর অন্ধকারকে দূরে সরিয়ে...

প্রাপ্তি সেনগুপ্ত

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register