Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক কোয়ার্কো ধারাবাহিক উপন্যাসে সুশোভন কাঞ্জিলাল (পর্ব - ৩৭)

maro news
সাপ্তাহিক কোয়ার্কো ধারাবাহিক উপন্যাসে সুশোভন কাঞ্জিলাল (পর্ব - ৩৭)

সাইত্রিশ

বাড়ি ফিরে বেশ ক্লান্তই লাগছিলো। অনেকটা হাঁটা হয়ে গেছে আজ। জলদি ডিনার সেরে নিজেকে বিছানায় চালান করে দিলাম। ভাবলাম মাথা ঠান্ডা করে ঘটি গরম মেসেজটা নিয়ে ভাববো। কিন্তু মনটা এত অস্থির হয়ে আছে যে কিছুতেই মনোনিবেশ করতে পারছিনা। এতো গুলো জিনিস জট পাকিয়ে আছে। যে কোনো কিছুর কূল কিনারা পাচ্ছিনা। যাই হোক নিজের মনকে শান্ত করে মেসেজ টা নিয়ে ভাবতে শুরু করলাম। একটা জিনিস লক্ষ করলাম মেসেজের কয়েকটা লেটার স্মল আর বাকি সব ক্যাপিটাল। তার মানে স্মল লেটার গুলোর আলাদা কোনো বিশেষত্ব আছে। স্মল লেটার গুলো আলাদা করে লিখে ফেললাম। m, e, r, i, m, b, n, o, y, o, d। সবটা নিয়ে উচ্চারণ করলে হয় মেড়িম্বনয়ড। আপাতদৃষ্টিতে অর্থহীন। সুপ্রিম সোয়াম মানে কি হতে পারে? সোজা একটা মানে করলে হয় পরমহংস। আচ্ছা রামকৃষ্ণ পরমহংসের কোথাও তো বলা হয়ে থাকতে পারে? টাইম মেশিনটাও বেশ খটকা লাগছে। ভগবানের পথ দেখবেন, এই অর্থ হলে কিন্তু রামকৃষ্ণ পরমহংসের লজিকটা আরো জোরালো হচ্ছে। কিন্তু টাইম মেশিন কোথা থেকে এলো? আমার বাবা কি টাইম মেশিন বানিয়েছিলেন? সেই চান্স তো নেই বললেই চলে। কারণ বাবা ছিলেন রসায়নের লোক ফিজিক্স এর আবিষ্কার তার পক্ষে সম্ভব নয়। এই সব ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে পড়েছি। কতক্ষণ ঘুমিয়েছি জানিনা। হঠাৎ দেখি দুজন মাঙ্কি ক্যাপ পড়া লোক জালনা দিয়ে ঢুকলো। এসেই আমার মুখে রুমাল চেপে ধরলো। আর আরেকজন আমার মাথায় এ. কে 47 ধরলো। দেখেই আমি জ্ঞান হারালাম। জ্ঞান ফিরে দেখি আমি একটা ট্যাক্সির পেছনের সিটে শুয়ে আছি। কেউ আমার দিকে মাথা এলিয়ে শুয়ে আছে। আমি মাথা টা আমার দিকে করতেই দেখি আরে এতো জগা !ওর জামা কাপড় সব রক্তাক্ত। আমি চিৎকার করে বলে উঠলাম "এই গাড়ি রোকো"।গাড়িটা ব্রেক করে থেমে গেলো। আমি দরজা খুলে বেরোতে গেলাম কিন্তু পারলাম না। সামনের দিকে বসে থাকা দুজন লোক আমাকে চ্যাংদোলা করে কোথাও নিয়ে যেতে লাগলো। আমি অনেক জোর জবরদস্তি করেও ছাড়াতে পারলাম না। নাকে দুর্গন্ধ লাগছে। গন্ধটা আমার চেনা। হ্যাঁ ঠিক গন্ধটা ধাপের মাঠের। আমাকে টানতে টানতে নিয়ে একটা অন্ধকার ঘরে ছুড়ে ফেললো। কোমড়ে বেশ লাগলো। কাতরাতে কাতরাতে উঠে দাড়ালাম। হঠাৎ চোখের ওপর তীব্র আলো এসে পড়লো। চোখ দুটো ধাঁধিয়ে অন্ধেরমতো হয়ে গেলাম। কে যেন দূর থেকে বলছে "জয়েন আস রুডি। তোমার বাবা আমাদের কাছে বন্দী"। আমি অনেক কিছু বলতে চাইলাম কিন্তু গলা দিয়ে আওয়াজ বেরোলো না। হঠাৎ একটা চেনা আওয়াজ এলো "অর্কদা আমায় বাঁচাও । ওরা আমাকে মেরে ফেলবে। তুমি ধাঁধা সল্ভ করে ওদের বলে দাও "। এতো শ্রেয়ানের গলা। ও তাহলে এখানেই আছে। হঠাৎ আমার মুখ থেকে ফ্লাড লাইট টা সরিয়ে নিলো। এবার লাইট টা ফেলা হল একটা চেয়ার এর উঁবু হয়ে বসে থাকা একটা লোকের ওপর। লোকটা একটা বিদেশি সাদা চামড়ার লোক। ওর চুল টেনে মাথা উঠিয়ে আমায় দেখালো। লোকটা যেন নড়ে উঠল। কিন্তু এখনও লাইট টা সরিয়ে নেওয়ার পর অন্ধকারে দেখতে পাচ্ছিনা ঠিক করে। মুখটা ঝাপসা লাগলো। আমার পেছনে কেউ একজন দাঁড়িয়ে আছে। আমি ঘুরে দেখলাম একটা ধুতি পরা লোক। লোকটাকে আবছা আলোয় দেখে মনে হল অনেকটা রামকৃষ্ণ দেবের মতো দেখতে। মুখে চাপ দাড়ি, সামনে ফাঁকা দাঁত বের করে হেসে বললো "বাবার মাল আমাদের দিয়ে দাও রুডি। টাকা মাটি মাটি টাকা "। আমার ইচ্ছা হচ্ছিলো ছুটে গিয়ে লোকটার টুটি চিপে ধরি। হঠাৎ কানের কাছে একটা বাচ্ছা চিৎকার করলো "ঘটি গরম"।

ক্রমশ...

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register