Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

দিনলিপিতে তৃণা ঘোষাল - ৩

maro news
দিনলিপিতে তৃণা ঘোষাল - ৩

বাড়ির গল্প ৩

উত্তরপাড়া স্টেশন থেকে আমাদের বাড়িটা খুব কাছে।হাওড়ার দিক থেকে এলে স্টেশনে ঢোকার ঠিক আগে আমাদের বাড়িটার একটা ঝাঁকিদর্শন হয়ে যায়।আর উত্তরপাড়া স্টেশন টা এমনিতেও আমার খুব পছন্দের।দুটো সুন্দর ছিমছাম প্ল্যাটফর্ম। আগে আগে যখন ছুটিতে বাড়ি আসতাম ট্রেন থেকেই দেখতে পেতাম কখনো দাদু কখনো বা কাকাদাদু দাঁড়িয়ে আছে আমাদের নিয়ে যাবে বলে।মনটা একদম আলো আলো হয়ে যেত।আর স্কুল থেকে যখন তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মএ নামতাম তখন দেখতে পেতাম উল্টোদিকে একএকটা বেঞ্চিতে বসে দাদু মামুদাদুরা গল্প করতো।লাইনটা ক্রস করে নামলেই আমাদের বিখ্যাত বাজার।রিকশা,সাইকেল,মাছের বাজারের ভীড়,শনি মন্দিরের ভক্ত সব মিলিয়ে একটা ভজকট ব্যাপার লেগেই থাকত।
মিনিট দুতিন হেঁটেই আমাদের বাড়ি।তখন ঢুকেই খোলা উঠোন ছিল আর পাশেই কুয়ো। বর্ষার দিন মানেই আগে কাদামাখা পা কুয়ো থেকে জল তুলে ধোয়া আর তারপর বাড়িতে ঢোকা।লাল মেঝেটা চকচকে থাকতো সবসময়।সোজা বরাবর কাকা দাদুর ঘর আর বাহাঁতি দাদুর ঘর।দেওয়াল ঘেঁষে একটা ছোট্ট টিভি যেটাতে ক্রিকেট আর মহাভারত ছাড়া আর কোনকিছু আমাদের দেখার অনুমতি ছিল না।দাদুর মস্ত খাটটায় বসে আমি আর পিয়া মহাভারত দেখতাম আর নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতাম আমরা মহাভারতের লেখক হলে কিভাবে গল্প বদলাতাম।রোববার দিনের অর্ধেক টা ওই গুলতানিতেই কেটে যেত।ওই খাটটা রয়ে গেছে। কিন্তু লাল মেঝের জায়গায় সাদা টাইলস।দাদু আমাদের গল্প শুনে খাটের ওপর বসে মিটিমিটি হাসত।দাদু অনেক বছর আগে থেকে দেওয়ালের ছবির দলে।
আমাদের বাড়ি এখন অনেক বদলে গেছে।তবু মাঝে মাঝে স্বপ্ন দেখি।সেই একতলার ঘর।বাবা কাকুদের জোর আড্ডা জমেছে বড়ঘরে।রান্নাঘর থেকে প্রেশার কুকারের সিটি আর সাথে মন উতলা করা মাটনের গন্ধ।ওই ছোটবেলার সুগন্ধটা চিরকাল সাথে থেকে যায় যে......
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register