Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

"এই শ্রাবণে আষাঢ়ে গপ্পো" 26য় দিবাকর মণ্ডল

maro news
"এই শ্রাবণে আষাঢ়ে গপ্পো" 26য় দিবাকর মণ্ডল

এক ধূধূ মাঠের কথা

ঐ যে ধুরূপ্ মাঠ--ওর নাম খেড়িয়াপাড়ার মাঠ। এই মাঠের দক্ষিণ বরাবর পূবমুখে চলে গেছে নর্তকীর মতো নাচতে নাচতে স্রোতবতী শিলাই। অনেকদিন আগে বর্গী হাঙ্গামায় একদা সমৃদ্ধ এই জনপদটি কালের গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। দু' একটি ঢিপি নিয়ে পড়ে আছে ভগ্ন মন্দিরের বিশীর্ণ কঙ্কাল।সভ‍্য মানুষেরা কোথায়, কীভাবে পালিয়ে গিয়ে আত্মরক্ষা করেছে তা অজ্ঞাতই থেকে গেছে ।গড়ে উঠেছে অরণ্য। এই বিজন অরণ্য তলে গড়ে উঠেছে অরণ্য সন্তানদের নিয়ে খেড়িয়াপল্লী। ইতিহাসের ধারাপাতে ওলাওঠা রোগে এরাও এক্কেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। তখন থেকেই এতদ অঞ্চল "খেড়িয়াপাড়ার মাঠ" নামেই পরিচিত। ইতস্ততঃ ইষ্টক ছড়ানো, পলাশ, কুটুসের ঝোপঝাড় । আর আছে ধুপধুপি বালুকাবেলা। এই স্থানটি সম্পর্কে রহস্য আর রোমাঞ্চের পরিসীমা নাই। কথিত আছে, এক জিন এখন এই ব্রহ্ম মাঠের শাহেনশাহ। মাটির নিচে সঞ্চিত আছে এক বিরাট গুপ্তধন। অনেক কাল আগে থেকেই সেই জিন যক্ষের মতো সেই গুপ্তধন পাহারা দিয়ে চলেছে।এই মাঠের পশ্চিম পানে এক কবরখানা। এই কবরখানায় শবদেহ দাফন হয় ।‌ জিন নিশুতি রাতে শবদেহ কবর থেকে বের করে তার হাড়গোড় চিবিয়ে খায়।হাড় চিবানোর কটকট আওয়াজ শুনে মানুষ ভয়ে এলাকা ছাড়া। ঢিপি খোঁড়ার কম্ম নয় সাধারণ মানুষের। কীভাবে এত সম্পদ গোছানো যায়, তারই সাত পাঁচ ভাবনা বাসা বাঁধছিল মনের কোনে দায়ুদ শেখের। পীর সাহেব খড়ি পেতে বলে দিয়েছেন, এই সম্পদ হাতে পাওয়া বহুত তকলিফ। তবে উপায় একটা আছে বটে। দায়ুদের চোখ চকচক করে উঠে পীর সাহেবের কথায়। তবে পীর সাহেব যে সুরাহা দিলেন, তা তার পক্ষে মেনে নেওয়া বহুত মুশকিল । কোন মতেই সে তার প্রিয় মুনুয়ার কলিজা জিনকে কুরবানী দিতে পারবেনা। এদিকে খেড়িয়া পাড়ার মালিক গোবর্ধন এ তল্লাটের সমস্ত গাছগাছালি নিলামে চড়ালো। নিলামদার দাউদ সেখ গাছ কাটার মনোস্থির করলো। সেই রাতে দাউদ এক ভয়ংকর দুঃস্বপ্ন দেখলো।দেখলো, এক কিম্ভুত কিমাকার অশরীরী তাকে সাবধান করে দিল এই বলে যে, এ গাছপালা কেটে নিলে কারো ঘাড়ে গর্দান থাকবে না। সেই থেকে খেড়িয়াপাড়ার মাঠে মানুষ জনের যাওয়া সাধ‍্যিতে কুলায়নি।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register