Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

"এই শ্রাবণে আষাঢ়ে গপ্পো" 26য় শমিত কর্মকার

maro news
"এই শ্রাবণে আষাঢ়ে গপ্পো" 26য় শমিত কর্মকার

শুধু সেই চেয়ারটা

আমি তোমাদের বাড়ি আগামী শুক্রবার রাত্রে যাচ্ছি।সৌমি কে ফোন করে জানাল অজয়। এটুকুই বলে ফোন টা কেটে দিল।সৌমির কিছু কথা বলার ছিল অজয়কে। আবার ফোনটা লাগলো কিন্তু পেলো না,এনগেজ।সৌমি কিছু চিন্তা করছিল আবার ভাবলো থাক আগামী শুক্রবার তো দেখা হবেই। সৌমি মনে থাকার জন্য ঘরের ক্যালেন্ডার তারিখটা পেন দিয়ে দাগ দিতে গিয়ে দেখল সে দিন ১৬ আষাঢ় আমাবশ্যার রাত।সৌমি এখন বি.এ পাশ করে বসে আছে।গানটা ও ভালো গায় বলে এখন সেই গান নিয়েই ব্যাস্ত।গান শেখার জন্য গুরুজীর কাছে যাওয়া রেওয়াজ করা এ সব নিয়েই সারাটা‌ দিন কেটে যায়।অজয় সৌমির খুব ভালো বন্ধু, কোন কিছু করতে গেলেই ওর‌ পরামর্শ নেয়।অজয়ের সাথে ওর দীর্ঘদিন ‌দেখা হয়নি।যা কথা হয়েছে ওই ফোন আর ম্যাসেঞ্জারে।আসলে সৌমি অজয়কে একটু বেশিই প্রাধান্য দিয়ে থাকে সেটা‌ ওর নিজেস্ব ব্যাপার। দেখতে দেখতে সেই শুক্রবার চলে এলো প্রায়।আগের দিন রাত্রে সৌমি সব ঠিক করে নিলো অজয় আসলে তাকে কি কি বলবে তাকে কি ভাবে আপ্যায়ন করবে ইত্যাদি ইত্যাদি। শুক্রবার সকাল থেকেই সৌমির মনটা ভারাক্রান্ত,সকাল থেকেই আকাশ কালো করে বৃষ্টি হচ্ছে। তারমধ্যে ‌আবার আষাঢ় মাস। রাত ঠিক নটার‌ পর হঠাৎ দরজার কড়া নাড়ার আওয়াজ।সৌমি আমি অজয় দরজাটা খোল।সৌমি দৌড়ে পেছনের‌ ঘরটায় গেল তখন বাইরে আঝড়ে বৃষ্টি পরছে দরজা খুলেই দেখলো একটা মানুষ দাঁড়িয়ে ভিজছে ওর‌ আর কিছু না দেখে ‌ভেতরে বসতে বলে চলে গেল।অজয় এতো‌ ভিজে গেছে ওর জন্য‌ একটা গামছা‌ নিয়ে আসি‌।সৌমি তাড়াতাড়ি গামছাটা এনে তাঁকে দিয়ে বলল তুমি মাথা গা ভালো করে মোছ‌,আমি তোমার জন্য একটা শুকনো ‌ধুতি আর চা বানিয়ে নিয়ে আসছি।ভেতরে গিয়ে সৌমি ভাবছে‌ আচ্ছা অজয় তো‌‌ এতো কথা ‌বলে কিন্তু আজতো তেমন কথা বলছে না!পেছন ফিরে ভেজে জামা প্যান্ট‌‌ নিয়ে বসে আছে। প্রায় মিনিট কুড়ি পরে সৌমি চা আর ধুতি নিয়ে ঘরে ঢুকলো।সৌমি ঘরে ঢুকে আত্কে উঠলো‌ অজয় ঘরে নেই, দুই বার অজয় অজয় বলে ডাকলো কোন সাড়া পেলো না।সৌমি‌ কিছু টা ভয় পেলেও আবার ভেতরের ঘর দিয়ে গিয়ে‌ বাইরের দারজাটা খুলে কিছুক্ষন খুঁজলো বাইরে আছে কি না। কিন্তু কাউকেই দেখলো না! আবার সে সাহস করে বাইরের ঘরে এলো দেখে‌‌ সে চোমকে গেলো পেছন ‌ফিরে‌ অজয় চা খাচ্ছে।সৌমি ভাবছে সে কি আগে ভুল দেখলো না অন্য কিছু।সৌমি এবার কথা বলল,অজয়‌ তুমি কোথায় গিয়েছিলে আমি তোমার জন্য চা আর ধুতি নিয়ে এসে ঘরে পেলাম না।ঠিক সেই পেছন ফিরে বসেই বলল না তো আমি তো এখানেই ছিলাম,দেখছো না খাচ্ছি।সৌমি মনে মনে ভাবছে না হতেই পারে না,আমি ঠিক দেখছি।তোমাকে আজ এমন মনে হচ্ছে কেন?পেছন ঘুরে বসে আছো গলাটা ভারি ভারি লাগছে। আমার শরীর টা ভালো নেই তোমাকে কথা দিয়েছিলাম তাই এসেছি।তা তোমার কি কথা আছে বলো আমি চলে যাবো।কথাটা শেষ হতে হতেই সৌমির ফোনটা বেজে উঠলো।সৌমি ফোনটা ধরে অজয়কে বলল তুমি একটু বসো আমি আসছি। সৌমি ফোনটা ধরে বলল কে,আমি মৌসুমী বলছি।আচ্ছা বল্,জানিস অজয়ের বাইক অ্যকসিডেন্ড হয়েছে কি বলছিস ‌তুই?হ্যা রে ও হয়তো বেঁচে নেই।কি বলছিস তুই অজয় তো আমার বসার ঘরে বোসে আছে খুব ভিজে এসেছে।না হতেই পারে না সৌমি আমি খবরটা ঠিক জানি বলেই তোকে বললাম।একটু দাঁড়া মৌসুমী বলে ফোন হাতেই ভেতরে গেল সৌমি। গিয়ে যা দেখলো তাতে তার হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে গেল মুখে কোন কথা নেই। ঘরের মধ্যে‌ কেউ নেই শুধু চেয়ারটা!
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register