Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

T3 || কবিতা দিবস || 26য় সৌম্য সরকার

maro news
T3 || কবিতা দিবস || 26য় সৌম্য সরকার

১.কবচ

উল্কার ঘাত শরীরে ভরবেগের সাথে! প্রেত যোনির কোলাহল: সমুদ্র মন্থনে নামি বর্ম গায়ে । জন জীবন দ্রাব্য গঢ়লে; অমৃতের সন্ধানে সভ্যতার শেষ বীজের মতো আগলে রাখি নিজেকে !

২.সমাজতন্ত্র

জন্তর মন্তর গড়ে শরীরে কর্ণের কুন্ডল,দ্বেষজ; প্রতিস্পর্ধাই অধিদেবতা ষটকর্মের নরবলির আর্ট শিখি রোজ বীজমন্ত্রের মতো

৩.আবহমান

এক আকাশ ভরা কোটাল প্রদোষ পেরিয়ে গোধূলির নব তারার বুক চিরে তাকে দিলাম গাংচিলের দুর্বার ঝাঁক রক্তকরবী শরীরে সয়ে জন্মদেয় এক খানা আস্ত সকাল , রোজ  

৪.মেট্রোয় চড়ে ছায়াপথে পৌঁছানো একটা সন্ধেবেলা

ছেলেটি বেশ আধুনিক পত্নী ভাবে, তার চাহিদা সঙ্গিনী হোক আধুনিকতা, সুন্দরী ডাকসাইটে বর্ণবিদ্বেষ নেই বৌদ্ধিকভাবে, তার দু'শ বছর সাদা চামড়ার আনুগত্য, বিঁধে আছে অস্থি মজ্জায় আমাদের নিয়তির অমোঘ মধুর আঘাত উঠে আসে একদিন পরিবর্তনই শ্বাশত সত্য এভাবেই জানান দিয়ে যান শহুরে কর্মব্যাস্ত অবসাদের পর মেট্রোর এয়ারকন্ডিশনের ক্ষণিকের শান্তি আর কাঁধে নিয়ে গোটা কলকাতা শহরের প্রচ্ছায়া রোজকার ঘরেফেরা নিয়তির আদেশে বা রোজকার নিয়মেই মেট্রোর কামরার চক্রবুহ্য ভাঙতে থাকে, বেরহয়ে এলো সেই, অমোঘ অস্ত্র দৈবের নীল জিন্সের সাথে ভক্তিবাদী কুর্তি টান টান যৌবন-সাস্থ্য হালকা চাপলতা, কথা বলা দুই চোখ সাথে, শ্যামলা শরীরের ক্যানভাসে ফুটিয়েছেন মোক্ষম দেবশিল্পী সমস্ত সত্তা দিয়ে সে বদলে দেয় ভেঙেচুরে ছেলেটির ভালোলাগার সংজ্ঞা শ্যামলা কোনো নারীর প্রতি অমোঘটান তার শরীরে, ধূসর কোষে জাগায় রোমাঞ্চ আর বিষ্ময় সেই শ্যামবর্নার চোখে চোখ পরে - চোখ ফেরাতে অপারগ দুজনই..কিছুক্ষন হটাৎ, কলকাতার প্রচ্ছায়া, মেট্রো, চেনা সব কিছু উবে যায় চোখের সামনে থেকে মনে হলো তার হাত ধরে গোটা কয়েক পার্থিব জীবন পার করে সহযাত্রী হয়ে মহাকালের পথে ঘুরেবেড়াচ্ছে যেনো অচেনা ছায়াপথে তারপর প্ল্যাটফর্ম এলে ভীড়ের সাথে পা মিলিয়ে মিলিয়ে যায় গল্পের নায়িকা ছায়াপথ ছেড়ে ফিরে আসে মেট্রোর কামরায় সে রেস থেকে যায় চোখে মুখে, রেস থেকে যায় কসমিক ভ্রমণের... হয়তো থেকে যাবে এক গোটা পার্থিব জীবন।    

৫.নীলাম্বর

দিশাহীন মূঢ় আকাশ সয়েযায় স্তব্ধতা গৃহদেবীর বরে স্রষ্টা স্বর ও ধ্বনি ঢেলে দেন লয়ে মহাজাগতিক পুরুষ ছন্দোবদ্ধ নৃত্যে সিম্বায়োটিকের মতো গিলে ফেলে মৌন নীলাম্বর

৬.নারী ও অন্যকেউ

মৃত সময়ের পাশে সহমরণ শিখায় ভস্মিভূত হবার আগে বামাচারির হোমকুণ্ড থেকে ফিনিক্সের মত জাগতে না জানলে নারীর জন্ম হয় না জেগে ওঠে জন্ম হীন মৃত্যু হীন, স্নায়ু হীন বিকট যন্ত্রণা রক্ত বীজের তেজস্ক্রিয়তা মরণের সতেজতা কে কেরে নেয় তার অন্তহীন  

৭. কর্তার ভূত

কণিষ্কের কাটা উদর ছিন্নমূল ধর্ম কাম, বিরূপাক্ষের চোখের জল আর ভূতনাথের আশীষ পাক জরা মৃত্যুর মতন কর্তার ভূতেরা সব ঘরদোর আর দেশ অগ্লাচ্ছে স্বসম্ভ্রমের সাথে খেয়ালের বশে কলম চালাচ্ছেন বিভূতিভূষণ

৮. গানস অ্যান্ড রোজেস

কুরুক্ষেত্রের রক্তে ভেজা মাঠ কিম্বা গত শতকের দুই মহাযুদ্ধে জমা স্তূপীকৃত আর্তনাদ যুদ্ধ খেপাদের বিজয় রথ কিম্বা দুটো শহরের শ্বাস প্রশ্বাসে রসায়নের শৃঙ্খল পড়াতে আর দমবন্ধ ঘরে খুশি মতো মানুষ মারতে বা ধর্মের পেট কেটে আফিম চালান করে মজা পেয়েছে যারা জানেনা ঢের বিষাক্ত মজার খোঁজ কারো চোখে অপলক মিশবার বা ঠোটে ঠোট রেখে ডুবুরির মজা কী?  

৯.অনেকটা জুতো চুরির মত

একটা স্লোগান দিন, একটা প্ল্যাকার্ড দিন আমরা মিছিল করবো সভা করবো, জমায়েত হবে আর আমরা লড়েযাবো একটা ঝা চকচকে কি কেতা দুরুস্ত্ত আইডিয়ালিস্ম দিন আমরা লড়েযাবো ধম্মের ষাঁড়েরা সুড়সুড়ি দিক আমরা লড়েযাবো আমাদের কোনো লড়াই নেই তাই অন্যের জুতো জোড়া পায়েতে গলিয়ে আমরা শুধু শুধু লড়ে যাই

১০.অশ্বমেধ

ওই আসে অশ্বের ক্ষুর ধ্বনি হোমকুন্ডে ঘৃতাগ্নি দিয়েছেন রাজাধিরাজ কার বুকের পাটা, দমায় অশ্বমেধের ঘোড়া আত্মজনেরা অন্ধের মত ঘোড়ার ক্ষুরের ধুলোয় দিগ্বিদিক জ্ঞান হারায় আর মানস চক্ষে রাজার পদধূলি কুরোয় হরির লুটের মতো যজ্ঞের শেষে রাজা দীনবেশে ভিনদেশী বন্ধুকে সেই অশ্বের মাংস পরিবেশন করে সদ্য দেওয়ালে ঘেরা ঘরে ১১.মন্বন্তরের কথা কুর্মাবতার বৈবস্বত মনুর নৌকো বয়ে বেড়ান কোনো সুউচ্চ ইষ্ট আর অভীষ্টের টানে স্রোতের অনুকূলে, দুর্লভ কোনো কূলে; অকূলে মরেছে যারা কেউ তার খোঁজ রাখেনা কলুর বলদের মত কাঠ কেটে নৌকো গড়েছে যারা, সেইসব বলদের সাথেই ভুঁই যুতেছিলো যারা অহল্যার শরীরের মোহে মরেছিল যারা {একদিন} কারখানার চিমনি দিয়ে যাদের প্রাণবায়ু কালো ধোঁয়ার মতো বের হতো রোজ প্রত্যেক মন্বন্তরের মাঝে অকূলে মারাপরে যায় (শুধু) তারাই।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register