Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় (পর্ব - ৩০)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় (পর্ব - ৩০)

সোনা ধানের সিঁড়ি

৬২
ধর্মনারায়ণ দাসগুপ্ত, বিকাশ ভট্টাচার্য, শ্যামল দত্তরায়, গণেশ পাইন ------ সব শিল্পীই প্রায় ক্যানভাসে মানুষকে মুখোশ পরিয়েছেন। শিল্পীজীবনে একবারও মুখোশ আঁকেন নি এমন শিল্পী বোধহয় বিরল। ক্যানভাসে আঁকা মুখোশের সামনে দাঁড়িয়ে মানুষ তর্জনী তুলে নিজের ক্রোধ প্রকাশ করেছেন ------ প্রদর্শনী কক্ষে দাঁড়িয়ে একাধিকবার এমন দৃশ্য দেখার সুযোগ ঘটেছে। বুঝতে পেরেছি মানুষের কদর্য রূপের মুখোমুখি হওয়া এই মানুষগুলো এমন একটা ছবির সামনে দাঁড়িয়ে তৃপ্ত। মানুষের বিরুদ্ধে তার নিজস্ব বক্তব্যের এ যেন একটা জবাব।
কেউ কি কখনও কল্পনাতেও আনতে পেরেছিলেন, মানুষ তার আদর্শ চেহারায় ২৪ ঘন্টা ঘুরে বেড়াতে বাধ্য হবেন? মুখোশ একমাত্র মানুষের মুখেই মানায়। মানুষের যত রূপ আছে পৃথিবীতে বোধহয় অত রঙও নেই। অথচ এক মুখোশেই সব চাপা। ভেতরে এবং বাইরে মুখোশ এঁটে মানুষের থেকে খুশি আর কেউ হয় নি।
সবসময়ের সঙ্গী মুখোশ মুখে একটা কথা খুব বলতে ইচ্ছা করছে। সমাজের কিছু অমানুষ আত্মপক্ষ সমর্থন করে যখন বলে, মহিলাদের পোশাকই তাকে উত্তেজিত করেছে তখন নারী পুরুষ নির্বিশেষে সবাই নিজেদের অবস্থানকে চিহ্নিত করার জন্যে এর বিরুদ্ধে গর্জে ওঠেন। আসলে সমাজে এইধরনের ঘটনা সিংহভাগ মানুষের খুব সুবিধা করে দেয়। কারণ এই ঘটনাগুলোকে সামনে রেখে তাঁরা তখন প্রমাণে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন এসবের থেকে তাঁরা কত আলাদা। এই পর্যন্ত সব ঠিকই আছে। কিন্তু যখন দত্তদার মেয়ে সেনদার ছেলের সঙ্গে মোড়ে দাঁড়িয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলে তখন এরাই আবার সেটা প্রেম বলে প্রচার করে দেন ------- "ওইভাবে যেখানে সেখানে গল্পে মেতে গেলে কে না বলবে দিদি" ------- জানলায় জানলায় কথা হয়ে যায়। তার মানে ওনারা বলতে চান, ওদের ওইভাবে যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে গল্প করাটা তাঁদের এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে। আসলে যে মানুষ মুখোশের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন তিনি নিজেই কখন আবার মুখোশ পরে নেন তা জানতেও পারেন না।

ক্রমশ...

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register