Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক কোয়ার্কো ধারাবাহিক উপন্যাসে সুশোভন কাঞ্জিলাল (পর্ব - ৩৪)

maro news
সাপ্তাহিক কোয়ার্কো ধারাবাহিক উপন্যাসে সুশোভন কাঞ্জিলাল (পর্ব - ৩৪)

চৌত্রিশ

পরের দিন আমি অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে আর্জমার সঙ্গে দেখা করতে গেলাম। ওকে সব ঘটনা খুলে বললাম। প্রথম থেকেই আমি ঠিক করেছিলাম যে আগে থেকে সব কথা ওকে বলবো না। এখন কিন্তু সময় এসেগেছে। শ্রেয়ানের লাইফ ইস ইন ডেঞ্জার। আমিও নিরাপদ নই। অর্জমা সব শুনে বললো, "হসপিটালটার লোকেশান টা আইডেন্টিফাই করতে পারবি?"আমি বললাম, "মনে হয় পারবো। ঢোকার সময় জ্ঞান না থাকলেও বেরোনোর সময় লক্ষ্য করেছিলাম। "আমার যদিও একটা খটকা লেগেছিলো যে রাজারহাটের কাছাকাছি অ্যাক্সিডেন্টটা হয়েছিল আর এতো দূরের হসপিটালে আমায় কেন ভর্তি করা হয়েছিল? কিন্তু সেটা নিয়ে আর মাথা ঘামায়নি। যাইহোক আর্জমার কথা অনুযায়ী আমরা নকল হসপিটালের খোঁজে বেরিয়ে পড়লাম। সঠিক জায়গায় পৌঁছতে বেশ বেগ পেতে হল। ঘন্টাখানেক ধরে গাড়ি করে ঘুরে ঘুরে জায়গাটা অবশেষে পাওয়া গেল। ওটা একটা চারতলা ফ্ল্যাট বাড়ি। ফ্ল্যাট বাড়ি কমপ্লিট হয়ে গেছে কিন্তু কোনো লোক ঢোকেনি। ফ্ল্যাট কেনার জন্য একটা বোর্ডে প্রোমোটারের ফোন নাম্বার দেওয়া আছে। আর্জমা সময় নষ্ট না করে নিজের মোবাইল থেকে ওই নাম্বারে ফোন করল। মেন এন্ট্রান্সের কোলাপ্সিপল গেটে তালা মারা। সাধারণত এত কম্প্লিট ফ্ল্যাটে লোকে চলে আসে। ফ্ল্যাটটা ছোটোর ওপর বেশ খরচ করে করা হয়েছে।আর্জমা ফোনে কথা বলা শেষ করে বলল, "প্রোমোটার আসছে"। আমি বললাম, "নিজের পরিচয় দিলি? "ও মাথা নেড়ে না বলল"সব ফ্ল্যাটই বিক্রি হয়ে গেছে গ্রাউন্ড ফ্লোরের দুটো ছাড়া।"আমি বললাম, "এক্সাক্টলি আমি একতলাতেই ভর্তি ছিলাম। " মিনিট দশেক অপেক্ষা করতে হল। এই জায়গাটা মেন রাস্তা থেকে একটু ভেতরে। তবুও রাস্তাটা বেশ চওড়া। পাশের দুটো প্লটেও কন্ট্রাকশনের কাজ হচ্ছে। আর রাস্তাটার একদিকে ডেড এন্ড। ওপর প্রান্তে কোনো বাড়ি নেই। একটা কেবল বড় পুকুর আছে। মানে বলতে গেলে বেশ নিরিবিলি পরিবেশ। একটা ছোট গাড়ি ঢুকলো এই রাস্তায়। নেমে এলো কালো মোটা কোঁকড়ানো চুলওয়ালা লোক। দেখে প্রোমোটার মনে হয়। যেমন টিপিক্যাল চেহারা হয় এখনকার প্রোমোটারের। কাছে এসে পান খাওয়া লাল দাঁত গুলো বের করে বললো, "ম্যাডাম বলুন।" আমার দিকে তাকিয়ে হেসে নমস্কার করলো। আর্জমা এসেছে সিভিল ড্রেসে। গাড়িটাও রেখেছে রাস্তার বাইরে। ফলে অার্জমাকে দেখে কোনোমতেই পুলিশ তা বোঝার উপায় নেই। আর্জমা নিজের আইডেনটিডি কার্ড দেখিয়ে বললো, "পুলিশ চলুন আপনার সঙ্গে কথা আছে।"ভদ্রলোকের মুখের চেহারা নিমেষের মধ্যে পাল্টে গেলো। সুরসুর করে নিজের গাড়ি ছেড়ে আমাদের পেছন পেছন চলতে লাগলেন। আমরা সকলে অর্জমার গাড়িতে উঠলাম। গাড়ি ছুটে চলেছে। গাড়ির মধ্যেই আর্জমা কথা বার্তা শুরু করে দিলো। প্রোমোটার যা বললো তার সারমর্ম হল সে কিছু জানেনা। কিন্তু একথা সত্যি যে সিনেমার এক শুটিং পার্টি তিনদিনের জন্য নিচের ফ্ল্যাটটা ভাড়া নিয়েছিল। শুটিং এর জন্য ওরা বাড়িটার হুলিয়াও চেঞ্জ করে নিয়েছিল আর্টিফিসিয়ালি। ওকে জিজ্ঞাসা করা হল যারা ভাড়া নিয়েছিল তাঁদের চেনে কিনা। কিন্তু সে বললো চেনে না। বলো যে একজন বিহারি লোক এসে কথা বলে সব ফাইনাল করে টাকা দিয়ে গিয়েছিলো। মোবাইল খুলে ফোন নাম্বার আর নাম তাও দেখালো। নাম জগন্নাথ সাউ কিন্তু ফোন করে দেখা গেলো নাম্বারটার কোনো অস্তিত্ব নেই। আমার মনে হচ্ছে প্রোমোটার ব্যাটাকে জেলে নিয়ে গিয়ে দুঘা দিলেই সব সত্যি বেরোবে। কিন্তু ভি আই পি রোডে গাড়ি থামাতে বলে আর্জমা প্রোমোটারকে নামিয়ে দিলো। আমার দিকে তাকিয়ে বললো, "ডোন্ট ওরি ও কিছু জানেনা "।

ক্রমশ...

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register