Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

T3 || ভ্যালেন্টাইনস ডে ও সরস্বতী পুজো || স্পেশাল এ উজ্জ্বল দাস

maro news
T3 || ভ্যালেন্টাইনস ডে ও সরস্বতী পুজো || স্পেশাল এ উজ্জ্বল দাস

বাগদেবীর মন্ডপে

বসন্ত পঞ্চমীর সদ্য আলো ফোটা ভোরে, তোর চাঁদমালাটার কথা মনে পড়ে? মায়ের হাতের বীণা ঠিক করার নাম করে তোর আড় চোখের... বাঁকা দৃষ্টি উফফ... তখন তুই মেরেকেটে সতেরো, আর আমি, তোর থেকে বছর দুয়েক বড়- মনে আছে? তীর কাঠি লাগাতে গিয়ে গঙ্গা মাটি মাখা, কি বদমাইশিই না করে ছিলি তুই, আমার গায়ে মাটি লাগিয়ে। সেই শুরু। স্ট্রেট পড়ে গেলাম তোর প্রেমে। আর হাবুডুবু , তুই যে আগেই খাচ্ছিলিস, সে কথায় নাই বা গেলাম। তোর গান, তোর চোখ বন্ধ করে সুর তোলা- বরাবর মাতাল করতো আমায়। আর তুই তখন আমার কত্থকের মেজাজি ভঙ্গিতে মজে। এই ...এই... এই... মনে পড়ে! বাগদেবীর পায়ের কাছে সঞ্চয়িতা রেখে অঞ্জলীর সময় ফুল ফেলতে গিয়ে- আমার কানে ফু... বাপরে! কী জোরেই না চিৎকার করে উঠেছিলাম ভয়ে সবাই যখন হতভম্ব হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে- আমি তখন, চোখ নামিয়ে স্বগতোক্তি করেছিলাম "আরশোলা"। সারা সন্ধ্যে আমরা একসঙ্গে কাটানোর পর, পরের দিন আঙুলে আঙুলে ঠেকিয়ে দধিকর্মা- নাহ... ভুলতে পারিনি রে। যখন বেদী খালি করে বিকেলবেলা মায়ের চলে যাবার পালা, তখন মনে হতো আবার গতানুগতিক জীবন । দুজনেই ফোন নম্বর দেওয়া নেওয়া করে ছিলাম অবশ্য। তুই আমার পাশের পাড়াতে থাকলেও, চারচোখ হতো ক্বচিৎ কখনো। নিয়মিত দেখা করার অভ্যাস শুরু হলো- তখন তুই সেকেন্ড ইয়ার। কিন্তু বুঝতে পারিনি বাধ সাধবে বিধি। ট্রান্সফার হয়ে গেল তোর বাবার- শিলংয়ে- প্যাকার্স অ্যান্ড মুভার্স যখন আস্তে আস্তে তোদের ভাড়া বাড়িটা খালি করে দিল, সমস্ত পৃথিবীটা তখন শূন্য মনে হতে শুরু করল হারিয়ে ফেললাম সুর, নাচের চেনা ছন্দ। চলে গেলি ভিনদেশে । পড়ে রইলাম আমি একা; এখানে। প্রথম প্রথম বেশ কথা হতো ; ফোনে - পড়াশোনা শেষ করে তুই ব্যস্ত হয়ে গেলি। তোর গানের রেকর্ডিং শুরু হলো। আমি কিছু নাচের টিউশনি শুরু করলাম- বাবা রিটায়ার করার পর। কথাও কমতে থাকলো আমাদের। তোর চলে যাবার পর বছর তিন হবে- বাড়িতে খুব চাপ দিতে লাগলো বিয়ে করার জন্য। বুকের উপর থেকে জগদ্দল পাথরটা সরিয়ে- সেজেগুজে বসে পড়লাম পূজোর দিন, দেখতে আসবে আমায়। এদিকে ছোট ছোট বাচ্চারা পাড়ার সরস্বতী বন্দনায় মত্ত এ বছর। ওদের কথা দিয়েছিলাম সন্ধ্যের পর মণ্ডপে যাব। ছেলের বাড়ি থেকে দেখে যাবার পর বেজে উঠলো, ফোনটা। অচেনা নম্বর। কানে ধরতেই তোর গলা। "কি রে, বিয়ে করবি" ঠোঁট কাঁপছে তখন আমার। অট্টহাসি হেসে তুই বলেছিলি- "আরে পাগলী; আমাকে" কথা বলতে পারিনি। ফেলে আসা বছরের সুর ফিরে পেলাম মনে। হাঁটতে হাঁটতে মন্ডপে পৌঁছতেই শরীরটা হালকা হয়ে গেল। সারপ্রাইজ ছিল তোর। দূর থেকে দেখলাম তুই সেই হলুদ পাঞ্জাবিটা পরে দাঁড়িয়ে।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register