ক্যাফে কাব্যে দেবারতি চন্দ রায়

শহীদ

আজ যে চলে গেলো গুলিবিদ্ধ হয়ে,
যার কফিনের উপরে বিছানো ত্রিরঙা,
ভেতরেই তার ক্ষতবিক্ষত শরীরটা মোড়া প্লাস্টিকে।
আজ যে সবার চোখে বীর যোদ্ধা, শহীদ,
কাল সেছিলো পড়াশোনায় অতি সাধারণ ছেলে।
চাকরি করতে হবে জীবন যাপনের তাগিদে,
রোজগারের খাতিরে রোগ দেয় সৈনিকের চাকরিতে ।
ধাপে ধাপে পাশ দিয়ে প্রমাণ করে যোগ্যতা,
নির্বাচিত হতে, ভাবে না আগুপিছু নিজেকে নিয়ে।
বেতন- সুযোগ-সুবিধা, প্রয়োজন হয়ে পড়ে মুখ্য
ছেলেটার কাছে, তার পরিবারের স্বার্থে।
তারপর একদিন, কি মনে হয়েছিল তার,
সে কথা সে বলতে পারে নি কাউকেই আর।
শুধু চিঠিতে লিখে গেছে মায়ের নামে
“তোমাদের কথা খুব মনে পড়ে মা।ভালো থেকো তুমি আর বাবা।”
বাবার মুখে রোচেনা খাবার, মায়ের আঁচল যায় ভিজে
শান্তনা দিতে কাঁপা হাতে, উত্তরে লেখে,
“তোমার জন্য গর্বিত আমরা।”
দীর্ঘশ্বাস ঢেকে বাবা পাড়ার মোড়ে
বুক ফুলিয়ে শোনায় ,
তার সাধারণ ছেলের অসাধারণত্বের কথা।
কোথায় লড়াই করে কত শত্রু নাশ করে
কিভাবে ফিরেছে বিজয়ীর বেশে গেলবার।
ছুটিতে বাড়ি এলে আদর যত্ন বাড়ে,
পাড়া প্রতিবেশি থেকে বন্ধু বান্ধব সবার।
সবার কথা শুনে ব্যাক্তিগত জীবন ভুলে
তিলে তিলে রপ্ত করে সার্থক রূপ দিতে তারে,
যে কারণে বেছেছিলো এমন একটা পথ।
আজ সে শহীদ হলো গুলিবিদ্ধ হয়ে
প্লাস্টিক আর জাতীয় পতাকায় মুড়ে এলো নিজের শহরে।
বৃদ্ধ বাবা হারালো ভাষা, মা হারালো জ্ঞান,
বিদায় জানানো হলো গান সেলুট আর ফুলে।
কাল তাকে ভুলে যাবে সবাই !
মনে রাখবে শুধু দুটি শুণ্য হৃদয়, দূঃসহ পরিস্থিতি ,
ফাঁকা ঘরবাড়ি আর একটা ফটোফ্রেম,
শহীদের ছবি ধারনের গর্ব বুকে নিয়ে।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।