বৃষ্টিদিনের বন্ধু
বঙ্গোপসাগরের ওপর ভয়ানক ঘূর্ণিঝড় হয়েছে। গতকাল রাতে সেই ঘূর্ণিঝড় স্থলভাগে আছড়ে পড়েছে। সারারাত ঝড়ে তোলপাড় করেছে। ছোট্ট বাবান সারারাত মাকে আঁকড়ে ঘুমিয়ে ছিল। যদিও সোঁ সোঁ আওয়াজে মাঝেমাঝেই ওর ঘুম ভেঙে গেছে।
আজকে সকাল থেকেই অঝোরে বৃষ্টি পড়ছে। ঘূর্ণিঝড় নাকি এখন নিম্নচাপে রূপান্তরিত হয়েছে। ঝড়ে গাছ পড়ে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেছে। বাড়িতে তাই কারেন্ট নেই। কখন আসবে তাও জানা নেই। বৃষ্টির খুব তোড়, যতক্ষণ না কমছে বিদ্যুৎ অফিস থেকে কেউ এসে সারাতে পারবে না। তাই বাবান ঘরে বসে বসে জানলা দিয়ে বৃষ্টি পড়া দেখছে।
রাস্তায় একটু একটু করে জল জমে যাচ্ছে। মা আজকে খিচুড়ি আর ডিমভাজা করছেন। বাবানের খুব প্রিয়।
হঠাৎ জানলা দিয়ে দেখল, ওদের বাড়ির পাঁচিলে ছোট্ট কি একটা যেন পড়ে গিয়ে চিঁচিঁ করছে। ও ভাল করে তাকিয়ে দেখে, একটা ছোট্ট পাখি চিঁচিঁ করছে।
বাবান দৌড়ে গিয়ে বাবাকে ডেকে নিয়ে এল। বাবা তাড়াতাড়ি বাইরে গিয়ে পাখিটাকে তুলে আনলেন। বাবান বলল, ‘ওটা কি পাখি বাবা? ও পড়ল কোথা থেকে?’ বাবা বললেন, ‘এটা চড়ুই পাখি রে। পাশের গাছ থেকে পড়ে গেছে কোনভাবে। মনে হচ্ছে, বাচ্চা, উড়তে পারে না। দাঁড়া, ওকে একটু চাঙ্গা করি।‘
তারপর দুজনে মিলে ওকে পরিষ্কার করে একটু বিস্কুট আর জল দিল। ওর খিদে পেয়েছিল। ও একটুক্ষণ তাকিয়ে থেকে খেয়ে নিল। বিকেল বেলা ও আবার পাশের গাছে উড়ে গেল। বাবানের বৃষ্টিদিনের বন্ধু আবার তার বাড়ি ফিরে গেল।