বিকেলের দিকটা বাগানের গাছগাছালির সঙ্গেই কেটে যায় সৌমীর। গাছে জল দিতে দিতে ওদের সঙ্গে কথা হয় বিস্তর।
বছর পাঁচেক হলো একমাত্র ছেলে রিভু শহরের বাইরে।
দেশ জুড়ে লকডাউনের কারণে প্রবাসের বাস গুটিয়ে সে নিজের শহরে ফিরতে চলেছে।
-এতদিন পর বাড়িতে গিয়ে থাকতে কেমন যে লাগবে জানিনা!
ফোনে, এই বাক্যটি যেদিন ঋভু বললো, সৌমীর বিষম এক ধাক্কা লাগলো বুকের গভীরে।
-কী হলো! চুপ করে গেলে যে !
ঋভুর কথায় সম্বিৎ ফেরে সৌমীর। ম্রিয়মান কণ্ঠে সে বলে, এতদিন পর বাড়িতে আসবি, মা-বাবার কাছে, ভেবেছিলাম তুই বুঝি খুব খুশি, আর একথা বললি!
-ওহ মা! কথার একটু এদিক ওদিক হলেই এত সেন্টিমেন্টাল হয়ে যাও! তোমাদের এটা সমস্যা !
সৌমি উপলব্ধি করে এ নিয়ে বাক্যব্যয় বৃথা। অনুভূতি নিয়ে জোর খাটেনা।
ফোন রেখে জানালার ধারে দাঁড়িয়ে দেখছিলো, পশ্চিমাকাশে সূর্যাস্তের রক্তিম প্রেক্ষাপটে একঝাঁক পাখির সানন্দ কলরোলে কূলায় ফেরা।
মুঠোফোনটা বেজে ওঠে।
ফোনের ওপারে প্রাক্তন এক ছাত্রীর উৎফুল্ল কণ্ঠ -ম্যাম, তুমি কেমন আছো ? খু-উ-ব মনে পড়ে তোমার কথা!
তোমার সঙ্গে একদিন দেখা করতে যাবো, ঠিক!
মনের দমচাপা ভাবটা নিমেষে উধাও হয়ে যায় সৌমীর।
রৌদ্রদগ্ধ দিনশেষে, এক পশলা বৃষ্টি যেমন স্নিগ্ধ শীতল আঁচল বিছিয়ে দেয় চরাচরে۔۔۔