সাহিত্য ভাষান্তরে বাসুদেব দাস

নদীরও নরক থাকে
নীলিমা ঠাকুরীয়া হক
মূল অসমিয়া থেকে বাংলা অনুবাদ
নদীরও নরক থাকে
কোমরের বিহুবতী ভাঁজ যখন আমন্ত্রণ করে মানুষকে
নারী হয়ে উঠে নদী
উন্মুক্ত দুইপারে জেগে উঠে জনপদ
আশ্চর্য বেগবতী গ্রামগুলি আর নগরগুলি
নগরগুলি এবং মানুষগুলি পাড়ি দেয় মহানগরের দিকে
হরিণার মতো থেমে যায় নদী
আবেগহীন স্রোতে জমা হয়
মর্মান্তিক ক্লেদের স্তর
এখান থেকেই আরম্ভ হয় নরক
আবর্জনা বয়ে বয়ে ক্লান্ত নদী
কামিহাড়ের সেতুতে পা ঝুলিয়ে বসেছে ঘুম
কী ধরনের ঘুম!বিকেলও চোখ বুজে নেয় এই জলে
নাকে রুমাল চেপে পার হয়ে যায় সন্ধ্যা
সজল চোখে সোনালি অতীতের ছায়া
সেই ছায়া কাঁপে কি জলে
মরা মাছগুলির শাপে জ্যোৎস্না কাঁপে
আমার ইঙ্গিতময় আঙ্গুলগুলি
আত্মাহীন সুখে-ভোগে নগ্ন সাবলীল
কেমন ধড়ফড় টেনে আনার জন্য নদীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ঘর
ঠাঁই না পাওয়া প্রাণবায়ুতে নদীও ডুবে
মরা মাছগুলির শাপে জ্যোৎস্না কাঁপে
এক খণ্ড নরকে ভেসে থাকে নদীর ভেলা
ভেসে থাকে,পথ চেয়ে থাকে
পথ চেয়ে থাকে,ফুলে থাকে
বর্ষা এলে আঙ্গুলগুলির খোঁজে আসে
ফিরে পেতে শ্বাস-প্রশ্বাসের ঘর
সেটা কি আক্রোশ নদীর
টীকাঃ
কামিহার-বুকের চ্যাপ্টা হাড়
গর্ভপাত।