|| নারীতে শুরু নারীতে শেষ || বিশেষ সংখ্যায় অভিজিৎ সাউ

অভিশপ্ত সমাজ
হে মানুষ,
তোমার সমাজে নারীরা যদি পূজোনীয়া মাতা!
তাহারা তবে হইতেছে কেন ধর্ষিতা-লাঞ্ছিতা?
মা বলিয়া ডাকো যাহারে তিনিও তো এক নারী!
সেই জননীর অপমান তবে সহিছ কেমন করি?
নারীরা আজ চলে না যে পথ একাকী নিভৃতে,
তোমার মনুষ্যত্ব থাকিলে ইহার প্রতিকার করিতে।
হে মানুষ,
তোমার জনমকালে কত জননী দিয়াছে তাহার প্রান!
সেই জননীকে তুমি কোনোদিনও করিও না অপমান।
তোমার তরে জননী অনেক ফেলিয়াছে মাথার ঘাম,
কোনোদিন কি শোধ করা যায় তাহার দুধের দাম?
যে জননীর স্নেহ-ভালোবাসায় হইলে উঠিয়া বড়,
বৃদ্ধা বয়সে তাহাকেই কেন প্রত্যাখ্যান তুমি কর?
হে মানুষ,
পণ লইয়া বিবাহ করা তো দন্ডনীয় অপরাধ!
তবুও কেন পণ লইয়া মেটাও মনের সাধ?
বিবাহ করিয়া আনিলে তুমি যাহাকে তোমার বাড়িতে,
সেই নারীর ঠিকানা আজকে কেন পতিতা পল্লীতে?
কত নারী আজ প্রাণ বাঁচাইতে বেশ্যা-নর্তকী!
তবুও তাহারা বদনাম ছাড়া পাইয়াছে আর কি?
হে মানুষ,
যদি নারী-পুরুষ সমান সমান সবাই বলিয়া থাকে!
কেন কন্যা-ভ্রুণ হত্যা কর, বাঁচাইয়া রাখো না তাহাকে?
পিতা-মাতা হইয়া তবু প্রাণ নাও নিষ্পাপের!
কন্যা হইয়া জনম লওয়া কি তাহার অপরাধের?
তোমার জন্মদাত্রী মা, তিনিও তো এক কন্যা!
কন্যা বলিয়া হত্যা করিলে তুমি জন্মাইতে না।
হে ভগবান,
মানুষ বলিয়া ভাবি যাহারে সে তো মানুষ নয়!
মুখোশের আড়ালে লুক্কায়িত তাহার কাপুরুষ হৃদয়।
নারীকে তুমি লাঞ্ছিতা হইতে দিও না গো আর,
সমাজের সব জঞ্জালদের সাফাই করো এইবার।
এমনি করিয়া সমাজকে যাহারা করিতেছে অভিশপ্ত!
সেই মানুষেরা কেন পৃথিবী থেকে হয় না চিরলুপ্ত?