T3 || আমি ও রবীন্দ্রনাথ || বিশেষ সংখ্যায় আকাশ কর্মকার
by
·
Published
· Updated
কবিগুরু স্মরণে
সারারাত মুষলধারে বৃষ্টি নেমেছে; ‘রাজর্ষি’র মন ঠিক নেই। এই একটা দিনের জন্যে তারা চারবন্ধু মিলে অপেক্ষা করে প্রতিটাবছর। নানান বিষয়ে তাদের ঝগড়া হলেও এই একটা মানুষ তাদেরকে বরাবর মিলিয়ে দেন। তবে এবারে পরিবেশটা একেবারেই ভিন্ন। একে তো এই লকডাউন, করোনা; তারপর আবার সারারাতের ঝমঝম বৃষ্টিতে চারিদিকে অদ্ভুত নিঃস্তব্ধতা। এভাবেই কিছুক্ষণ ‘ঘরে বাইরে’ করতে করতে ঘুমিয়ে পড়েছে সে; একটাই তো আশা ভোরে রবির আলোয় আলোকিত হবে তাদের সাজানো ‘মালঞ্চ’।
এ যেন ‘প্রজাপতির নির্বন্ধ’! যে বৃষ্টি গতকাল হয়েছিল ‘চোখের বালি’ আজকে তার ছিটেফোঁটাও নেই। ‘বৌ-ঠাকুরানীর হাট’ থেকে ফেরামাত্রই দৌড়ে গেল সে ‘গোরা’ কে ডাকতে; সবাই সবকিছু জানলেও এই কদিন তো আর সেভাবে বিকেলে খেলার মাঠে তাদের ‘যোগাযোগ’ হয় না। ‘চতুরঙ্গ’ এর আসর ছেড়ে গোরা আর রাজর্ষি ডাকতে গেল লাবণ্য আর অমিতকে। চারজনকে শুধু বন্ধু বললে কম বলা হবে; তার যেন এক বর্ণাঢ্য উপন্যাসের ‘চার অধ্যায়’। বেশ তারপর আর কি; এক জমজমাট পঁচিশে বৈশাখ একেবারে তাদের নিজস্ব আঙ্গিকে। রৌদ্রকরোজ্জ্বল আবহাওয়ায় আজ আর নেই কোনো ‘নৌকাডুবি’র খবর। যে রাজর্ষি গতকাল রাতে ভাবছিল এবারে রবিঠাকুরও লকডাউনে ভেতরেই থাকবেন; সে আজ ফুরফুরে মেজাজে। তারা তো বিশ্বাস করে যে এই জগৎ সংসারে একজন ঠাকুরই রয়েছেন যাঁর পুজোয় অর্ঘ্য হিসেবে নিবেদিত হয় তাঁরই সৃষ্টি; তিনি যে এই বিশ্ব সংসারের প্রতিটি সুস্থ সাহিত্য-সংস্কৃতি সম্পন্ন মানুষের অন্তরের এক চিরসত্য দেবতা, যাঁর সৃষ্টি-কীর্তি তাঁকে প্রদান করেছে অমরত্ব। যাইহোক্ মাল্যদান, গান সবই করল তারা নিজেদের মতন করে। বেলা বাড়ছে, এবার বাড়ি ফিরতে হবে। তাই এবারে শুরু হল তাদের প্রতিবারের চিরাচরিত সমবেত ‘শেষের কবিতা’ …