হৈচৈ কবিতায় অশোক কুমার ঘোষ

খোকা গেল মাছ ধরতে
‘খোকা গেল মাছ ধরতে ‘
এই বড়ো খোকা ও মাছ ধরতে গিয়েছিল,
সে এক বর্ষা মুখর দিনে।
অরন্ধন উৎসবে ,
বছর চল্লিশেক আগে
সবেমাত্র স্কুলের গন্ডি ছাড়িয়ে
বর্ষায় প্যাচপেচে কাদা মাড়িয়ে!
খোকা আর খোকার দুই স্কুলের সহপাঠী।
ছিপ ফেলার আয়োজন বড়ো পরিপাটি ।
ছয়টি হাত ছিপ,
বাঁশ বাগানের কঞ্চি কেটে
তার সব ডালপালা ছেঁটে।
সর্ষের খোল ভাজা,
এক্ঙাকী গন্ধে মজা।
সঙ্গে পিঁপড়ার ডিম
পাউরুটি মাখা গাওয়া ঘি দিয়ে।
আর নারিকেল পচা মাটির সাথে মেখে ছুঁড়ে দিয়ে ছিলাম পুকুরের জলে।
পুকুর যিনি করেন বাবার এক কৃষক বন্ধু।
যতো খুশি ততো ধরার অনুমতিতে আমদের খুশি আকাশ ছোঁয়া।
খোকা,লক্খী আর আসরাফ এই তিন বিটকেল।
অপূর্ব সুন্দর সে স্মৃতি
মনের মাঝে আছে গাঁথি।
ঝকঝকে মৃগেল একটি পর আরেকটি
কখনো বা আটশো এক কেজি রুই ,
দু একটি কাতলা।
হঠাৎ আসরাফের একটি ছিপ কে যেন টেনে নিয়ে যায় পুকুরের মধ্যিখানে।
দে ঝাঁপ ঝপাং,
লক্খী লাফিয়ে দেয় ঝাঁপ।
পুকুরের এক মস্ত বোয়াল হয়েছিল জব্দ।
সেটি ধরার আনন্দের নেই কোনো শব্দ।
নীরব হাসি ফুটে উঠলো খোকা আর খোকার দুই বন্ধুর মুখে ।
দিনের শেষে ঘরে ফিরে আসা,
মধ্যে রাত্রে একসঙ্গে কলা পাতায় গরম ভাত,হরেক মাছ ভাজা
আলু পটল কুমড়ো ঝিঙে ঢেঁড়স করোলা,
ওলের বড়া, নারিকেল ভাজা আরো কিছু,
শেষ পাতে চিংড়ি তেঁতুল আর ইলিশের মাথা দিয়ে চাটনি আর চালতা আখের গুড়ের চাটনি।
মাঝে নারিকেল গুঁড়োর মেশানো মিষ্টি ডাল আর কচুশাক ঘন্ট।
অরন্ধনের মেনু যেন শেষ হতে চাইতো না। খেয়েদেয়ে ঘুম আর
ভোরে আবার ছিপ!
বৃষ্টির দিনে এই কথাটি
বারবার পড়ে মনে। অনাবিল আনন্দে মন গেয়ে ওঠে,
‘পাগলা হাওয়ার বাদল দিনে ‘।