সকাল তখন ৭টা বাজে বিজয় উঠে পড়েছে কিন্তু রাহুল আর অমিত তখনও শুয়ে আছে । বিজয় – “অমিত এই অমিত উঠে পড় “, রাহুলের গায়ে হাত দিয়ে ডাক দিলো ।ওমা ! “রাহুলের সারা শরীর তো বরফের মতো ঠান্ডা ” !অনেক ডাকাডাকি করে ও যখন ডাকে সাড়া পেলো না তখন বিজয় অন্য বন্ধুদের ডাকলো তারা এসে তাদের গায়ে হাত দিতে সবাই অবাক , এত ঠান্ডা কারোর শরীর হয় ! না ,অনেক চেষ্টা করে ও তাদের জ্ঞান আসলো না । ডাক্তার এসে চেকাপ করে বললো তাদের ৫- ৬ ঘণ্টা আগে মৃত্যু হয়েছে !! বিজয়কে জিজ্ঞাসা করছে সবাই কি হয়েছিল , বিজয় তো কিছু জানে না কি বলবে । শুধু একটা কথা বিজয়ের মনে আসলো রাতে বিজয় তাদের কাছে মিমের ফোটো পাঠিয়ে ছিল , বিজয় কাউকে কিছু না বলে অমিত আর রাহুলের ফোনটা নিয়ে দেখলো ,না কোন ফোটো বা ম্যাসেজ নেইতো।
কিন্তুু কি হলো ওদের ? ডাক্তার ওদের শরীর ভালো করে পরীক্ষা করে দেখলো শরীরের উষ্ণতা অনেক কম , গলায় একটা সরু করে পোড়া দাগ , ডাক্তার তার ডাক্তারি জীবনে এমন ঘটনা দেখেনি । এমন রহস্যজনক মৃত্যু ঠিক কি কারণে হলো তার কুল কিনারা কেউ খুঁজে পেলো না। ডাক্তারবাবু থানাতে ফোন করে ঘটনাটা জানাতে বললো, হস্টেল সুপার এসে থানাতে খবর দিলো ,অমিত আর রাহুলের বাড়িতেও খবর গেলো । থানা থেকে পুলিশ এসে মৃতদেহ দুটি নিয়ে ময়নাদন্তে পাঠালেন । অন্য দিকে পুরো হস্টেল জুড়ে শুধু বিজয়কে দুষছে ও কিছু করেছে । আগের দিন বিজয়ের রাতে বাইরে যাওয়ার ঘটনা নিয়ে অমিত আর রাহুলের মধ্যে যে রাগারাগি হয়ছিল তাই হয়তো এমন ঘটনা , কিন্তুু সামান্য এই ঘটনার জন্য কেউ কাউকে মেরে ফেলতে তো পারে না ।
পুলিশ এসে তদন্ত শুরু করে , প্রথমে তারা হস্টেল সুপার কে জিজ্ঞাসা করে ঠিক কি ঘটেছিল। সুপার জানায় আগের দিন বিজয়ের রাতে বাইরে যাওয়ার ঘটনা থেকে শুরু করে আকাশের অ্যাকসিডেন্টের সমস্ত ঘটনা । আকাশের ঘটনা পুলিশকে আগে না জানানোর জন্য সুপারকে বকাবকি করে। তারপর পুলিশ বিজয়কে থানাতে নিয়ে গেলো জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য । অন্য দিকে ময়নাতদন্তে পরীক্ষারত ডাক্তাররা জানায় যে, “মৃত ব্যক্তিদের শরীরে সামান্যতম রক্তবিন্দু ও নেই গলার কাছে পোড়া দাগ, গলার হাড় গুলো যেন পুড়ে ঝলসে গেছে।” এমন ভাবে মৃত্যুর কারণ কি তা তারা অনুসন্ধান করে বের করতে পারলো না ।বিজয়কে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ সেদিন রাতে কেন সে পার্কে গেল ? রাতে বিজয় কার সাথে কথা বলে ? অমিত আর রাহুল কি ভাবে মারা গেলো তার সাথে শেষ কথা কখন হলো কি কথা বা হলো? বিজয় পুলিশকে মিমের ফোন করা থেকে শুরু করে দেখা করার ঘটনা সব জানালো। পুলিশ সব শুনে মিমের ফোন নম্বর চাইলেন , তখন বিজয় বলে ,”স্যার মিম ফোন তো করে কিন্তুু কোনো নম্বর দেখা যায় না ” কিছু পুলিশ কথাটা শুনে হাসাহাসি করে। নম্বর নেই,আবার ফোন আসবে কি করে , মাথা খারাপ না কি রে বাবা ।
পুলিশ অফিসার বিজয়ের ফোনটা নিয়ে রাখে , বিজয়কে পরে আবার ডাকা হবে বলে ছেড়ে দেয় ।