T3 || অবিস্মরণীয় নজরুল || বিশেষ সংখ্যায় আকাশ কর্মকার
by
·
Published
· Updated
বিদ্রোহী কবির প্রতি
বিংশ শতকের চুরুলিয়ার মেঘলা আকাশে দেখা মিলেছিল এক ধুমকেতুর,
কোঁকড়ানো চুলআলা ছেলেটা দারিদ্র্যের চাদরেই ছিল মোড়া আগাগোড়া।
কন্ঠ-কলমের আঙিনায় তিনি ছিলেন পাগলপারা,
কুহেলিকা ভেদ করে জন্ম নেওয়া এক নতুন ভোরের পথিক।
যত তীব্র হয়েছে অত্যাচার-অনাচার
আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে বিষের মরম বেদনা, কাতরে উঠেছে প্রাণ,
আরও তীক্ষ্ণতার সাথে তিনি হয়েছেন সোচ্চার।
‘খেয়া পারের তরণী’ বেয়ে নিয়ে এসেছেন আগমনের বার্তা;
কখনো তাঁর হাতে বেজেছে বীণা, আবার সেই হাতেই শোষণের বিরুদ্ধে জ্বলেছে অগ্নি।
অদম্য জেদের কাছে হেরেছে বৃটিশ, রুখতে পারেনি কারাগার;
খোলা আকাশের নীচে লেখনীর ভেলায় দুই বঙ্গেই অবারিত দ্বার।
সীমান্ত গিয়েছে মিশে শস্য শ্যামল বাংলার এক নজরুলের দ্যুতিময় আলোকে;
বুলবুলের সুরের মূর্ছনায় উদ্ভাসিত গৃহবাসী উড়িয়েছে দেখো বিজয় কেতন।
মুক্তির পৃষ্ঠায় লালিত এক সৈন্যের কলম, স্বাধীন হবে বসুধা চূর্ণ হলে জিঞ্জির;
তৃপ্ত হবে পরাধীনতার মৃত্যুক্ষুধা।
গজল হতে শ্যামাসঙ্গীত; শব্দ-ছন্দের মায়ায় বানভাসি দুকূল,
ধর্মের বর্ম ঝেড়ে মানবতার আলিঙ্গনে তিনি হয়ে উঠেছেন ঘরের নজরুল।
তোমার বাগানের সাহিত্যের আস্বাদনে মোহগ্রস্ত বাঙালির হিয়া,
যুগের আবহমানতায় অবিনশ্বর, শ্রদ্ধার দুখুমিঞা।
রাঙাজবার প্রতিরোধে প্রশমিত হয়েছে দুর্দিনের রক্তাক্ত ঝড়;
বুকে নিয়ে দাঁড়িয়ে রণক্ষেত্রে উৎপীড়ন লাঞ্ছনার তীর, তীব্র যন্ত্রণা সুনিবিড়,
সে গাঁয়ের বিদ্রোহী সন্তান, লড়েছে ময়দানে ‘একা চির উন্নত শির’ ।