নার্স মাটিতে পড়ে আছে , বিজয়ের ইঞ্জেকশন দেওয়ার সময় পেরিয়ে যাচ্ছে বিজয়ের শরীর যেন আরো খারাপের দিকে । ডক্টর অরূপের ফোনটা বেজে উঠে , ডাক্তার বাবু ফোনটা রিসিভ করে বললেন হ্যালো – ফোনের ওদিক থেকে একটা মেয়ের কণ্ঠ ভেসে আসে ” স্যার আমার বিজয়কে বাঁচান “। ডাক্তারবাবু – ” কে বলছেন আপনি ? আবারও এক কথা ” আমার বিজয়কে বাঁচান” বলে ফোনটা কেটে গেল। ডাক্তারাবু তখন হস্পিটালে সে দিন নাইট ডিউটিতে ছিলেন, ডাক্তারবাবু দেরি না করে বিজয়ের রুমে যায় গিয়ে দেখে নার্স ঘুমিয়ে আছে ,পাশে পড়ে আছে ইঞ্জেকশন, ওষুধ সব । ডাক্তার নার্সকে ডেকে তুলে বকা দেয় ” এটা তোমার ঘুমানোর জায়গা? এখনো রুগীকে ইঞ্জেকশন দাওনি” ? নার্স -” স্যার আমি বুঝতে পারিনি আমি কিভাবে ঘুমিয়ে পড়েছি ” ডাক্তারবাবু আর কথা না বাড়িয়ে বিজয়ের পরীক্ষা করতে থাকে, তাড়াতাড়ি সব ইঞ্জেকশনগুলো দিয়ে দেয় । ডাক্তারাবু কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে বিজয়ের শরীর একটু ভালোর দিকে যাওয়া শুরু করলে নার্সকে সব ওষুধ কখন কি দিতে হবে বুঝিয়ে দিয়ে তার রুমে চলে যায়। রুমে গিয়ে ডাক্তার ভাবতে থাকে এত রাতে তো হস্পিটালে কেউ ভিতরে আসতে পারে না তাও আবার যেখানে রোগী আইসিইউতে রয়েছে , ওই মেয়েটা বুঝলো কি করে বিজয়ের ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়নি শরীর খারাপের দিকে যাচ্ছে , আর আমার ফোন নম্বরই বা পেলো কোথা থেকে । যাইহোক যেখান থেকে যে ভাবে খবর পাক আমি ডাক্তার হিসাবে তাকে একবার জানানো দরকার যে বিজয় ভালো আছে ,এই ভেবে ডাক্তার ফোনটা বের করে সেই নম্বরে কল দিতে গিয়ে দেখে ওমা! কোনো নম্বরই তো নেই! ডাক্তারের খুব ভালো করে মনে আছে ফোন আসার সঙ্গে সঙ্গে সে বিজয়ের রুমে গিয়ে ছিলো নাম্বার ডিলিট তো করেনি…ডাক্তারের এ সব ভাবার সময় নেই, সে অন্য কাজে মন দিলো।
হস্টেলের ছেলেরা সব একে একে বাড়িতে ফিরে যাচ্ছে সবাই ভীত । পুলিশ বিজয়ের ফোন কল সার্চ করে ও কোনো কিছু তথ্য সংগ্রহ করতে পারলো না যা দিয়ে বিজয়কে দোষী প্রমাণিত করা যায়। বিজয়ের মা থানাতে এসে কান্নাকাটি করতে থাকে তার ছেলেকে যারা মেরেছে বিনা অপরাধে, তারা যেন শাস্তি পায়। পুলিশ তাকে আস্বস্ত করে, “অপরাধীরা ঠিক শাস্তি পাবে আপনি আপনার ছেলের কাছে যান” । বিজয়কে যারা মেরেছিলো তাদের কাছে যায় এক পুলিশ অফিসার কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য , গিয়ে দেখে দু জন ঘুমিয়ে আছে তাদের অনেক ডাকাডাকিতেও উঠছে না ভিতরে ঢুকে তাদের গায়ে হাত দিয়ে অবাক ! পুরো বরফের মতো ঠান্ডা শরীর, আর গলাতে একইভাবে পোড়া দাগ যেমন অমিত আর রাহুলের ছিলো!