কবিতার স্বর্ণযুগে শ্রী অমিতাভ কর

অবাক চোখ, নিস্পলক (অনু কবিতা)
অবাক সে চোখ , নিঘুম নিস্পলকে
কাঁদায় শুধু , আমায় সকাল সাঁঝে ,
দুষ্টু মনের আগলছাড়া কথা ,
ঘুমিয়ে থাক আমার বুকের মাঝে ॥
ফুল দিয়ে আমি সাজিয়ে রাখবো খাট ,
বাসর ভেবে আসবে কথা শুতে ,
শুধু আমি জানি , আশাহত রাত শেষে ,
আসবে মরণ , এ খাটখানা ছুঁতে ॥
আশার প্রদীপ (ছন্দ কবিতা)
একটু পেয়েই , আমি অনেক খুশি,
আশার প্রদীপ নেভেনি দমকা ফুঁয়ে,
টিমটিম করে জ্বলছে সে প্রদীপ,
আমি বেশ আছি, অন্ধকারকে ছুঁয়ে॥
সূর্যাস্তের শেষ আলোটুকু মুছে,
আজও আঁধার, নামে যে ধীর পা’য়ে,
জানি – সূর্য আবার উঠবে আঁধার ঘুচে,
আলো আঁধারি, চলবে যে গায়ে গায় ॥
বরফে থাকে – গলে যাবার আশ্বাস,
আরো শক্ত হবার, আশা যে নিস্ফল,
বুকে যদি লাগে উষ্ণতার উত্তাপ,
সে বরফ আবার, গলে গিয়ে হয় জল॥
জলকণা যদি অবিরত ঝরে পড়ে,
বজ্র কঠিন পাষাণের-ও বুক ভাঙ্গে,
চোখের জলের বিরামহীন স্রোতধারা,
ঢেউ তুলে দেয় – নিস্তরঙ্গ গাঙে॥
ঝড়ের দাপটে গাছ ভেঙ্গে পড়ে, কত !
নেমে আসে কত, হাহাকার শূন্যতা,
ঝড়ের শেষে, সব ঠিক গড়ে ওঠে,
গাছে গাছে ধরে, কচি সবুজ পাতা॥
‘সব শেষ’- বলে দেবার পরেও, যখন
মন চায় না যে কিছুতেই চলে যেতে,
বুঝতে হবে, তৃষাতুর দুটি মন – ই,
নীরব থেকেও, চায় আরো কিছু পেতে॥
জীবনের পথে হারানো অনেক সোজা,
কিছু ফিরে পাওয়া, অতটা শস্তা নয়,
সব হারিয়েও, তাইতো অবুঝ মন ,
আশার প্রদীপ – জ্বালিয়েই বসে রয় ॥
ভাঙ্গা খাঁচা (গদ্য কবিতা)
তাকে তো আমার কিছুই দেওয়ার নেই
সেদিনও ছিলো না , আজও নেই ,
এক গন্ডুষ জলে কিই বা হয় !
অনন্ত সাগর তৃষ্ণা যার বুকে ,
তাকে দানের স্পর্ধা ! !
স্পর্ধিত উষ্ণীষ আমার নেই ,
বুকের খাঁচাতে , দরজাটাও ভাঙ্গা ॥
যে , পা বাড়িয়েই আছে ,
তাকে দিয়েছিলাম মেরামতির বরাত !
আজ তাই , খাঁচাটাই নেই ! ! ! !
পড়ে আছে দানাপানি দেবার বাটিটা ॥
বড়ো অসময়ে পেয়েছিলাম তাকে ,
তাই বুকে ধরে রাখতে পারিনি ,
ভয়ে চোখের জলও ফেলিনা আর ,
পাছে গড়িয়ে যায় মুক্তো দানার সাথে ॥
অন্ধকার (গদ্য কবিতা)
অন্ধকার গাঢ় থেকে গাঢ়তর হয়,
কখন যে তর থেকে তম হয়
দেখা হয়না আর॥
চোখ খোলা বোজায় কোন পার্থক্য থাকে না,
তাই হয়তো তর – তম তারতম্য হীন,
তবে শূণ্যতা বোধ টা একই রকম॥
গভীরতার অন্ধকার থেকে
তুলে আনি ভাবনাদের,
কথার চাদরে মুড়ে নিই আলতো করে।
বড়ো লাজুক ওরা ……
একটু অবহেলাতেই এক ছুট্টে সেই ইইইইইই
দিক্শূণ্যপুর॥
তখন আবার খোঁজ খোঁজ ……
একটু অন্ধকার, ধার দিতে পারো ?