কবিতায় পদ্মা-যমুনা তে আলতাফ হোসেন উজ্জল

মুখোশের অন্তরালে সারবস্তু এটা আমাদের মুখচ্ছবি
সোনারঙ ঝিকিয়ে আমরা সবাই জাহির করি অথবা মেলে ধরি সমদর্শন স্বত্বাধিকারী,
কথার ফুলঝুরিতে হারিয়ে যাচ্ছি ভ্রমণের জোব্বা থেকে।
কথাগুলো কিন্তু মঞ্চায়নের মধ্যে
ঘামাচির মতো রুপ লাবন্য,
অদ্ভুত দর্শন শাস্ত্রে স্নাতকোত্তর জীবন শনৈ অবান্তর নয়তো মোটে।
উদ্ভট সব কান্ড করি ভোজেরগাতি নবরূপে সাজিয়ে,
ক্ষনিক সম্মান প্রদর্শনে হাততালি,
বাহবায় ভুলে যাচ্ছি জীবন্মুক্ত এ-ই শ্বেতকায়।
তথা দেখে কেউবা আরও বেশি চমকের ডিসপ্লে ঘুড়ায়।
….. কেউ বক্তৃতা,কেউবা অভিনয়, আবার কেউবা নাচ-গান, কেউবা আবৃত্তি জাহির করার প্রয়াসে,
ভেড়ার চামড়ার ডুগডুগি বাজায়,
যেন রাষ্ট্রের মধ্যে পরিচিতি পায়।
অনুকরণে শাক্ত পদাবলী অল্প স্বল্প মেধায় ছড়িয়ে অসম্ভব একটা ভিডিও বানায়,
আবার কেউ কেউ নিজেকে কেউকেটা ভেবে,
…. সৃষ্টির সোনালী সৌন্দর্য বর্জনে,
মেকাপে মুখের অবয়ব সাজায়,
নানা সাজসজ্জায় দে-শ দেশান্তরে
ফটোসেশান ভেলাগুলো,ফেসবুক বা ইন্সটাগ্রামে আলোকচিত্রের নব্যফ্রেমে পোস্ট একখানা ছেড়ে দেয়।
… কেউবা পর্দার অন্তরালে স্বপ্নের সূর্য স্নান করে! ফেসবুক চালায় ;
আরে বাপু! কি দরকার ফেসবুকে সারাক্ষণ অস্থির বলয়ে,নিবু নিবু ডিম লাইটের নিচে! রুপালী দিনরাত ভুলে ইনবক্সে রঙ খেলায় মেতে।
… কেউবা আবার পাতিনেতাদের অপরিসীম দেশপ্রেম নিয়ে,
পক্ষে- বিপক্ষে অন্যের স্ট্যাটাসে গালি-গালাজ করে,
নিজস্ব জ্ঞানে ব্যর্থ হলে, বন্ধু-বান্ধব সাথে নিয়ে গোষ্ঠী ক্ষেপণাস্ত্র অবিরাম চলে।
কিছু ডাক্তার সাহেব … রুগী দেখার চাইতে, মনোযোগ দেয় কিছু টপিক আর ভিডিওতে
যেন হতে পারে জনপ্রিয় সুশ্রুত মানবতার সেবক।
দপ্তরের একাধিক রক্ষক সুসম্পাদিত কর্ম
না করে,
তারচেয়ে বেশী সুদর্শনাদের সাথে মিটিং,সিটিং তা প্রচারে ব্যস্ত হয় তিনি,
এযেন উজবুক মানবের কর্ম কান্ড পুরাদস্তুর সেরা।
… কবি-লেখক, শিল্পী বা শিক্ষক গোষ্ঠী,রাষ্ট্রীয় অথবা কোনো পুরষ্কার আশায়,
বিজ্ঞাপনের ন্যায় উদ্দাম ধস্তাধস্তি করে
প্রখ্যাত বা অখ্যাত পুরষ্কার কোনোভাবে বাগাতে
নিজেই নিজের বিজ্ঞাপন দেয় ….
অথচ এটা তো দেওয়ার কথা সেই দর্শক, শ্রোতা বা পাঠকের।
মুখোমুখি শিক্ষক ও শিক্ষার্থী
কত-না ভাবের আবেগ জাগিয়ে তোলে ছোট্ট ছোট্ট কথা বিনিময়ে,
অথচ কোনো কোনো শিক্ষক অনলাইন ক্লাস নিয়ে ভিডিও তার দিচ্ছে ফেসবুকে,
যাদের জন্য প্রযোজ্য তারা হয়তো অদৃশ্য মৃয়মান,
আলোর দিকনির্দেশনা যাদের জন্য তাদের কাছে পৌঁছালে এরচেয়ে ভালো।
এভাবে আমরা সবাই জাহির করতে বড্ড বেশি ব্যস্ত!
কতো বেশি দামী তা নিয়ে আমরা সবাই আজ,
আমরা সবাই রাজা আমরা আমাদের এই রাজার রাজত্বে!
কেউ ভাবে না আমরা সেবক এই মানবের তরে!
আমরা ….. ভালো আছি, খুব ভালো আছি, এটা জাহির করতে যেয়ে
ক্লান্ত আমরা,অনেক ক্লান্ত এ-ই ভুবনেশ্বরে।
আমরা ভুলে যাই দুঃখ,অশান্তি, শোকসন্তপ্ত, হীনমন্যতা,হতাশা, অভাব অভিযোগ,স্বজন হারানো বেদনা,
রোগব্যাধি কত-শত নেতিবাচক মনোভাব; এগুলো করে পরিহার বলতে হবে মাঝে মাঝে আমরাও ভালো আছি,
আমরা খুব খারাপও থাকি।
মুখোশের অন্তরালে সারবস্তু এটা আমাদের মুখচ্ছবি।