• Uncategorized
  • 0

|| অণুগল্প ১-বৈশাখে || বিশেষ সংখ্যায় অয়ন ঘোষ

নতুন সুতো

“ও রেনু, রেনু, তোমার হলো। কখন থেকে বসে আছি। তাড়াতাড়ি দাও না ছাতুটা মেখে। এতোটা পথ যাবো।” বাজখাঁই গলায় ভালোবাসার ডাক ছাড়লেন দাঁ’পুর প্রাইমারি ইস্কুলের রাশভারী হেড মাস্টার পান পাড়ার মুরুব্বী শৈলেন পান।
তাড়াহুড়ো করে রেনু বালা ছোলার ছাতু গুড় দিয়ে মেখে বড় কানা উঁচু বাটিতে রাখলেন স্বামীর সামনে, বললেন “কাল পয়লা বৈশাখ, বচ্ছরকার দিনে ওদের নতুন সুতো যে গায়ে তুলতে হয়!” তিন মেয়ে দুই ছেলের বাপ শৈলেন্দ্র৷ মাস গেলে মাইনে ৫৭ টাকা পঞ্চাশ পয়সা। গতকাল গিয়েছিলেন পান্ডুয়ার মনসা বস্ত্রালয়ে। ছেলে মেয়েগুলোর ফ্রক আর গেঞ্জি কিনে যখন কাউন্টারে টাকা মেটাচ্ছেন তখনই কানে এলো “আরো কুড়ি টাকা লাগবে, না হলে এই সিল্কের শাড়ি পড়িয়ে আর বিয়ে দিতে হবে না মেয়ের !”
দুধে আলতা রঙের সিল্কের শাড়িতে ভারি সুন্দর লাগছে হারানের বড় মেয়েকে। মেয়েকে দেখে চিকচিক করে উঠল হারানের চোখ। দু’হাত কপালে ঠেকিয়ে প্রণাম করল সেই অচেনা সাদা ধুতি আর হাফ শার্টের দেবতাকে। শৈল মাস্টার মনে মনে খুব জানে, তার নিজের ছেলে মেয়েরা না হোক, নতুন বছরে নতুন জীবনে প্রবেশের সময় কেউ তো নতুন সুতো গায়ে তুলেছে। শিক্ষকের কাজই তো পরের ছেলেমেয়েকে নিজের করে দেখা।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।