ছোটদের জন্যে বড়দের লেখায় A.F.M Shebgatulla (পর্ব – ১)

সাবির সুবীর পর্তুগিজ ঘাঁটি আবিষ্কার পর্ব – ১

সাবির সুবীর দুই বন্ধু । তোমরা আগেই জেনেছো। দুজনের ভাব ও অনেক। দুজনে নিজেদের অজান্তেই জৈন তীর্থঙ্কর নেমিনাথের মূর্তি আবিষ্কার করার ফলে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাষ্টারমশাই দের সাথে ওদের বেশ আলাপ হয়ে গেছে। কিছু সাংবাদিক আর স্কলারদের সাথেও ওদের বেশ আলাপ হয়েগেছে।
সন্ধ্যে নাগাদ দুজনে দুজনের বাড়িতেই তখন রয়েছে। সবে মাত্র চা জল খাবার খেয়ে পড়তে বসেছে।কলকাতার এক নামি সংবাদ পত্র থেকে ফোন। ফোনের ওপারের মানুষটি সাবির সুবীর কেই খুঁজছে। তবে সুবীরকে পায়নি তাই সাবির কেই ফোন করেছে। যদিও ওদের কাছে সাবির সুবীর দুজনেই একই।
মোদ্দা কথা হলো সংবাদ পত্রের সাংবাদিক মসাই বলছেন, তাদের সংবাদপত্রে কিশোর,কিশোরীদের নিয়ে একটা বিভাগ আছে। এমনিতেই দুই বিচ্ছু পাড়ার হিরো। এরা যাতে নিয়মিত ভাবে সংবাদ পত্রকে লেখা পাঠান তাহলে খুব ভালো হয়। সাংবাদিক মসাই জানালেন। কিশোরদের জন্য যারা লেখেন তারা সবাই বড়ো। তাই তাদের মতন করে তাদের বয়েসের কেউ যদি কিছু লেখে বরং তা আরো বেশি মন ছুয়ে যাবে। প্রথমে ইতস্তত করলেও সাবির সম্মত হলো যে তারা লেখা পাঠাবে।
আজ টিফিনের সময় সুবীর সাবির কে বললো তুই যে রাজি হলি। এখন কি লিখে পাঠাবি? কেনো আসে পাশে যা ঘটছে, ইতিহাস ,ভূগোল, বিজ্ঞান, যা আছে ,যা ছিল, যা থাকবে, যা আছে।স্কুল ,খেলার মাঠ এই সব নিয়েই লিখবো। আর তুই সাহায্য করবি। বই পত্তর এনে দিবি। আমরা দুজনেই এক সাথে লিখবো। লেখার জন্য দুজনের নাম ছাপা হলে তো আর কথা নেই। হেড স্যার ও আমাদের ডেকে পাঠাবে বুঝলি। আইডিয়া টা সুবীরের ভালো লেগে গেলো ।
সাবিরের সেই টিংকু মামা যে কি না ইতিহাস একটু আধটু বোঝে। আর দিব্যেন্দু কাকার কাছে থেকে কলেজ স্ট্রিটের ধুলো মাখা স্থানীয় ইতিহাসের বই পত্তর আনলো। এর মধ্যে একটি বই ছিল দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ইতিহাস , ২০০০ সালের পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রকাশনা সংস্থা দ্বারা প্রকাশিত। আরো বেশ ক একটি বই। সাবিরা এই গ্রামেরই বাসিন্দা পুরুষানুক্রমে ।তাই দলিল পত্র ওদের বাড়িতে কম না। আর সুবীর তো ওর বন্ধু।
সেদিন ছিল বিকাল বেলা। ব্যাডমিন্টন খেলার শেষে যখন ওরা নিজেদের বাড়ি চলে যাবে। তখন সিদ্ধান্ত নিল। আমরা আপাতত স্থানীয় ইতিহাসের কথাই সংবাদ পত্রের কিশোর বিভাগে পাঠাবো। কিন্তু কি লেখা যায়!
এরকম ভাবেই ওরা বই পত্তর পড়ে জানতে পারলো। বিদ্যাধরীর তীরে একটা পর্তুগিজ নৌ ঘাঁটির কথা। চলতি ইতিহাস বইয়ে এই ঘাঁটির কথা বিশেষ পাওয়া যায় না। আর এই পর্তুগিজ নৌ ঘাঁটির ওপর তীরে ছিল ব্রিটিশদের জাহাজ ঘাঁটি। তখন উত্তাল বিধ্যাধরী, মাতলা,পিয়ালী। সাথেই সুন্দরবনের হাতছানি। তার মাজখানে এই পর্তুগিজ ঘাঁটি। জানা যায় আজও যারা সুন্দরবনের জলদস্যু তারা পর্তুগিজদের বংশধর। শুধু কারো কারো ধর্মটা বদলে গেছে।
বিচ্ছু দুটি বই পত্র পড়ে জানলো। পর্তুগিজরা আমাদের দেশে গ্লাডিওলাস ফুল, আলু, পেয়ারা চাষ শুরু করে। সুবীর বললো আচ্ছা আলু পোস্ত যদি বাঙালির চিরকালীন খাদ্য হয় তবে পর্তুগিজ দের বাহবা দেওয়া উচিৎ। কারণ ওরাই ত আলু ল্যাটিন আমেরিকা থেকে আমাদের দেশে এনেছে। সাবির বললো। পস্ত ও ত তাই। হয় দক্ষিণ পূর্ব এসিয়া না হয় আফগানিস্তান থেকেই পস্ত এসেছে ।
ওরা খুব ভালো করে লেখাপড়া করে পর্তুগিজ জাহাজ ঘাঁটি র সন্ধানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু কিছুতেই কোনো ক্লু পাচ্ছে না পর্তুগিজ জাহাজ ঘাঁটি টা ঠিক কোথায়? কারণ বিধ্যাধরীর তো দুটি শাখা! তাহলে কোন শাখায় ।তাহলে ঠিক কোথায় ব্রিটিশ আর পর্তুগিজ নৌ ঘাঁটি?!
হঠাৎ সাবিরের মাথায় একটা প্ল্যান এলো!

চলবে…

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *