“…ছিল বটে একখানা ওই বাক্স টিনের
তাতে সব বোঝাই করা জহর মানিক…”
হঠাৎ খুঁজে পাওয়া কয়েক টুকরো ছোটবেলা! এক ক্ষুদে বইপ্রেমীর প্রিয় সম্পদ! গরমের ছুটির দুপুরের একমাত্র সঙ্গী! সেই পড়তে পড়তে বিভোর হয়ে কল্পনায় ফেলুদার রোমাঞ্চকর রহস্য – উদঘাটন অভিযানের অংশ হওয়া! আদম আর ইভের কাহিনী প্রথম আমি পড়েছিলাম সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের গল্পসংকলনেই! রবিঠাকুরের “ছুটি” পরে যে টানা কয়েকঘন্টা মন খারাপ করে চুপচাপ বসেছিলাম; তা আজও সাবলীলভাবে স্মৃতিপটে ভেসে ওঠে! নানানরকম গ্রন্থ সেই ছোট্টবেলা থেকে আমাকে আমার চারিত্রিক গঠনে সাহায্য করেছে; বাইরের অজানা জগতকে জানতে ও বুঝতে শিখিয়েছে। বাবা সেই ছোট্টবেলা থেকেই আমার এই গ্রন্থপ্রেমকে নিয়মিত আস্কারা দিয়ে এসেছে; যেকোনো বইমেলার একদম প্রথম দিনের টিকিট আমার জন্য আগে থেকেই কাটা থাকতো। অন্তত তিন – চারদিন করে এক – একটা বইমেলায় না নিয়ে গেলে বাড়িতে দক্ষ্যযুদ্ধ বাধাতাম প্রায়! আমার বিভিন্ন বই হাতে আসার সেগুলিকে গোগ্রাসে গিলে নেওয়ার গল্প আমার মা আজও লোকের কাছে করে। অবশ্য পড়ার বইয়ের ভাঁজে গল্পের বই লুকিয়ে নিয়ে পড়তে গিয়ে মায়ের কাছে ধরা পড়ে নিদারুণ বকা খাওয়ার গল্পটা আবার কিন্তু আলাদা! তাও কি সেই নতুন নতুন গল্পের বইয়ের মিষ্টি গন্ধটার টান উপেক্ষা করা যায়?! এটা তো সবারই জানা যে সেই বয়েসে আবার ” যাহাই যতোধিক নিষিদ্ধ, তাহাই ততোধিক কাম্য ” !
আজ সেই বারণও নেই; না আছে সেই জেদী মন!
কখন যে কোথায় হারিয়ে গেলো আমার সেই ছোটবেলা; সেই বয়সন্ধিকাল! কাল রাতে জানালার পাশে বসে একটা গান শুনতে শুনতে ফেলে আসা পথের পাথেও খোঁজার বড় সাধ হয়েছিল; তাই আজ সকালে পুরো বাড়ি তোলপাড় করে এগুলো খুঁজে বের করলাম, আমার হারানো দিনের সুখ-দুঃখের সাথীদের ফিরে পেলাম। এই প্রাপ্তি অমূল্য, অতীব প্রীতিকর!