আজকের লেখায় অমৃতা ভট্টাচার্য

অদ্য যে অরণ্য ষষ্ঠী!!!!

এমন আকালের দিনে পুরনো লেখা ফিরে দেখা যাক। সময় কি মানুষকে বদলে দিতে পারে? বদলে দিতে পারে মানসিকতা? কে জানে!

আপনি হয়তো ট্রামডিপো পিছনে ফেলে গরচার মুখ বরাবর হাঁটছেন, ডাইনে ইয়াকুবের দোকান পেরোলেন, ল’কলেজ পেরোলেন, তারও খানিক পর মুন্নার মাংসের দোকান। বলতে পারেন, রেওয়াজি মাংসের শেষ কথা। না,না বাংলা মদের ঠেক অবধি যেতে হবে না, তার আগেই। ওই যে দেখছেন না, লম্বা লাইন। আহা! হোক না মঙ্গলবার, তাই বলে কি মাংস খেতে নেই? … ‘অদ্য যে অরণ্য ষষ্ঠী বিদিত সংসার।’ নীলাবতী এই বেরোলেন বলে। সে কি মশাই নীলাবতীকেও চেনেন না? তিনি যে মা ষষ্ঠীর সেক্রেটারি। কিছুই জানেন না দেখছি। তামাম কলকেতা, শহরতলী, গাঁ-গঞ্জ ঘুরে তিনি টহল দিয়ে বেড়ান। তবেই না টের পেলেন, সপ্তগেরামের রানি অরণ্যষষ্ঠীর দুপুরে তাড়িয়ে তাড়িয়ে মাছ পোড়া দিয়ে ভাত মেখে খাচ্ছেন। কী অলুক্ষুণে কথা রে বাবা। ছেলাপুলা নাই নাকি! শুনুন তবে, গপ্পো শুনুন। ওগো পানের ডিবেটা দাও দিকি।

সনোকাপুরের সায়বেনের স্ত্রী ষষ্ঠীর দাসী। তার সাত ছেলে, সাত ছেলের বউ। ষষ্ঠীর দিনে সব পুজোর উপকরণ জোগাড় করে সায়বেনের বউ চানে গেলেন।পাহারায় রইল ছোট বউ।কী লোভ রে বাবা, লোভী বউ পুজোর সামগ্রী চেটেপুটে খেল। শাউরি ফিরলে দোষ দিল বাড়ির কালো বিড়েলের নামে। আহা হা চটেন কেন? এ গল্প আমি জানি , আপনি জানেন, লালমোহনবাবুও জানতেন নিশ্চয়। ঠিক ধরেছেন। বালাই ষাট, শত্তুরের মুখে ছাই দিয়ে আমার জামাই সুখে থাকুক সহ্য হচ্ছে না বুঝি। বাজার খুঁজে তরমুজ আনলুম, লিচু আনলুম, মাগনা পয়সায় চিতল পেটি, ভীমনাগের সন্দেশ! যত্তসব মড়াখেগোর দল নাকি বলে বেড়াচ্ছে ,এসব সেকচিস্ট কাণ্ডকারখানা চলবে না, তুলে দাও এসব।

ওরে তোরা বললেই হল। মুড়ো চিবিয়ে, বিড়েল ডিঙোনো ভাত খেয়ে…ভজহরি, ৬ বালিগঞ্জ পকেটে পুরে তবে না! একখান মাত্তর বিয়ে করেছি, তা উসুল না করলে চলে! নজর দেবেন না তো। ‘খাও বাবা খাও। আরেকটা পাতুরি দেই? তোমার বাবা সেই গড়িয়াহাট থেকে কিনে এনেছে। আহা হা, তোমরা সব জোকার দাও গো , জোকার দাও’।
ত্রিভুবনে যত নারী পুত্রবতী হয়।
কেবল তাহার কৃপা আর কারো নয়।।
বুঝলে বাপু? পাঁঠার দোকানে লাইন সত্যি। ক্যাপ্টেন স্পার্ক সত্যি। ষষ্ঠী ঠাকরুণ সত্যি। অরণ্যদেব সত্যি। থুড়ি, অরণ্যদেব না অরণ্যষষ্ঠী।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।