সম্পর্কের সমীকরণকগুলো এভাবেই মুছে যেতে যেতে শুন্য হয়ে যায়। তখন ঈশান কোন বেয়ে ঝুপ করেই অন্ধকার নামে। আকাশে আকাশে তখন খেলে বেড়ায় অভিমানী তারাদের কাটাকুটি খেলা। দূর থেকে কলঙ্কিত চাঁদও হাসি ফোঁটায় আলোর বিকিরণে। রসায়নের তিক্ততায় জন্ম নেয় অবসম্ভাবী বিচ্ছেদ। আলোড়ন তোলে প্রেমের সন্তাপে। কখনো বা ক্লান্ত মনে যদিও বা ভাবার চেষ্টা করি বাঁধ সাধে টুপটাপ ছন্দের বৃষ্টি ফোঁটারা।
আকাশেও তখন ঘনায় কালো মেঘের পাহাড়। আমার বাড়ির ঝুল বারান্দায় বসে তখন আমি গুনবো এক একটা গভীর রাত। যেখানে বয়ে যায় হিমশীতল কিছু ঠান্ডা জোয়ার। বারান্দায় থাকা বেল আর জুঁই ফুলের রঙিন টব গুলোও সৌরভ ছড়াবে। পাশে রাখা খোলা ডায়রির পাতা গুলো হঠাৎ ই উড়ে যাবে এক দমকা হাওয়ায়। আমি ধরতে গিয়ে একবার ঝুকলেও, আমায় বুঝিয়ে দেবে বৃথা চেষ্টা। জমিয়ে রাখা বিষাদের ভাব ডানা মেলবে সেই হাওয়ার স্রোতে। এক লহমায় যেন উড়িয়ে নিতে চাইবে আমাকেও। কিন্তু সেই ব্যর্থ আমি বসে বসে শুধুই রাত গুনবো। প্রতিদিনের গভীর রাত আর কালো মেঘের রসায়ন বারে বারেই আসক্ত করে গেছে আমায়। আশায় থাকি রোজ একটু একটু জমানো কালো মেঘের পাহাড় একদিন ঠিক ঝড়ে পড়বেই। ভাবতে ভাবতে এমনই একদিন সকাল থেকে খুব মেঘ করবে। খালি লেগে থাকবে তাদের আসা আর যাওয়া। মেঘেদের আড়ালেই ঝুপ করে ডুবে যাবে সূর্য্য। কিন্তু না, সেদিন আর কলঙ্কিত চাঁদ মুখে হাসি নিয়ে আলো ছড়াবে না। সেদিন মেঘেদের ঝড়ে পড়ার পালা। প্রথমে কিছু গুড়ি গুড়ি দু-এক ফোঁটা। তারপরেই আকাশ ভাঙবে বৃষ্টির দরজায়। যেন বহু প্রতীক্ষিত সেই মিলন, অবশেষে মিলের পালায়। আর আমি?
আমি শুধুই চোখ মেলে সেই শব্দ শুনবো, বৃষ্টির ছাট এসে সিক্ত করবে আমায়। ব্যস্ত পরিবেশের একচিলতে মায়ায় জানলার কার্নিশ বেয়ে তখন ঝড়ে পড়বে স্মৃতিরা। আমি অমলিন তখন আকাশ পানে নিবিষ্ট। ভেঙে পড়া ও গড়ে ওঠার মধ্যে হাজার মাইলের সম্পর্কের হিসেব কষতে কষতে দূরের ক্ষীণ এক সুর শুনতে পাব ঠিক এরকমই…..
“তুঝসে নারাজ নেহি জিন্দেগি
হ্যায়রান হু মে, ওওও হ্যায়রান হু মে
তেরে মাসুম সাবালসে
পারেসান হু মে, ওওও পারেসান হু মে”………..