• Uncategorized
  • 0

সাপ্তাহিক শিল্পকলায় শিল্পের জন্য শিল্প – লিখেছেন অ্যালবার্ট অশোক (পর্ব – ৫০)

ক্যানভাস, দেহ নিষ্কাসিত পদার্থ ও তুলি ১

শিল্পীরা, জ্ঞানী,গুণী,পাগল,চঞ্চল ও অদ্ভূত, পরমুহুর্তে আপনি বলতে পারবেননা শিল্পী কি করতে পারে। হয়ত আপনাকে কামড়ে দিতে পারে, নইলে ক্ষুর হাতে তাড়া করতে পারে। নইলে নিজের বমি দিয়ে ছবি আঁকতে পারে, নইলে হাতীর বিষ্ঠা দিয়ে ক্যানভাস সাজাতে পারে।
কি সে করল তা গবেষণা বা তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের ব্যাপার সময় বলবে।
১)
পিকাশো ১৯৩৮ সালে,তার কণ্যা মায়ার তখন ৩ বছর, তার বিষ্ঠা দিয়ে একটা আপেল সহ স্টিল লাইফ এঁকেছিলেন।
Maya Widmaier-Picasso in court in 2015. Courtesy of VALERY HACHE/AFP/Getty Images. আপনি ভাবুন। এ কি সুস্থ মস্তিষ্কে করা যায়?
২) Piero Manzoni পিয়েরো মাঞ্জনি ইতালিয়ান আর্টিষ্ট, বিশ্ববিখ্যাত একটি নাম।
Piero Manzoni- Artist’s Shit (Italian: “Merda d’artista”)- 1961, Canned and sold 90 cans of his own excrement to be sold for their weight in gold
(যদিও শিল্পের খোঁজ আমরা যারা রাখিনা তারা জানিনা।) তিনি শিল্পের একটা নতুন সংজ্ঞা দেন। ১৯৬৩তে মারা যান। ৩০ বছর বেঁচেছিলেন।২৩ বছর বয়সে শিল্পী জীবন শুরু করেন। তাতে শিল্প সমালোচক থেকে সাধারণ মানুষকে শিল্প সম্পৃক্ত একটা ধাক্কা মেরে গেছিলেন। সেই ধাক্কা খেয়ে মানুষ তাকে মনে রেখেছে। তার বাবা বলেছিলেন, ‘তোর শিল্পমানে তোর গু (মল), কেউ নেবেনা।’ পিয়েরো মাঞ্জনি তার জীবনে তার গু বা মল,(Artist’s Shit বা Merda d’Artista) ৩০ গ্রাম, একটা টিনের পাত্রে ভরে যতটুকু ওজন হয় ততটুকু ১৮ ক্যারাট সোনায় কোন এক Alberto Lùcia র কাছে বিক্রী করেছিলেন। ২০০৮ সালে সোথবি ১লাখ ডলারে তেমন একটি টিনের কৌটো বিক্রী করেছিল। তাহলে শিল্পটা কি ভাবুন? পিয়েরো উচ্চবিত্ত বা প্রভাবিত পরিবারে জন্মাননি। তার বাবা মাংস বিক্রীর টিনের কৌটা কারখানায় বানাত। পিয়েরোকে মেধা ও তার প্রাণশক্তি তাকে বিশ্ববিখ্যাত শিল্পীতে নাম লিখিয়েছে। ১৯৬০ এর গোড়ার দিকে যে তিনজন শিল্পী ভাবনাজারিত বা ধারণাগত শিল্প বা conceptual Art এর জন্ম দেন Piero Manzoni তাদের মধ্যে একজন।
৩) Keith Arnatt 1930–2008, Artist’s Piss 1970, Photographs of the artist’s urine on the ground 2 black and white photographs 18 3/5 × 18 3/5 in
মাঞ্জনীর পরে কিথ আরনাট (১৯৩০- ২০০৮), শিল্পীর মূত্র কলঙ্ক ১৯৭০ সালে, মাটির উপর শিল্পীর মূত্রের আলোকছবি ২টি কালো এবং সাদা ছবি ( আকৃতি18 3/5 × 18 3/5 ইঞ্চি) করেন। তার আলোকচিত্রের বিষয় ছিল দৃশ্যে মানুষ ও বস্তু। সময়ের সাথে সাথে বিলীয়মান।

একজন শিল্পী যা ব্রিটিশ ধারণাগত শিল্পের অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব one of the key figures in British conceptual art. হিসাবে বিবেচিত। অর্ণাট প্রাথমিকভাবে তার ক্ষণস্থায়ী পারফরম্যান্স ephemeral performance ধরে রাখার জন্য ফটোগ্রাফি ব্যবহার করতেন। তারপর ভাস্কর্য নিয়ে ঘেঁটেছেন, পরবর্তী কালে আলোকচিত্রের ব্যবহার সম্পূর্ণ রূপে করেন। এবং ১৯৭০এর দশকে তাঁর ছোট আয়তনী বক্স, দেহ এবং দাফন the minimalistic box, body and burial বহুবার ব্যবহার করেন।
প্রদর্শনীতে ঢুকলে দর্শকের মনে হবে তার নিজের সত্ত্বা সময়ের সাথে সাথে অস্থায়ী হয়ে যাচ্ছে।
৪) ক্যানভাসে মূত্র ত্যাগে নকশা বানানো! সে ও দামী শিল্প! Left: Gavin Turk – Oxidised urine on copper-prepared canvas. Image via gavinturk.com। Right: Andy Warhol – Oxidation painting, detail. Image via mfa.org
১৯৭০ এর দশকের শেষের দিকে এবং ১৯৮০ এর দশকের গোড়ার দিকে, অ্যান্ডি ওয়ারহল Andy Warhol প্রথমবার বিমূর্ত ছবি সৃষ্টির অনুসন্ধানে মনোনিবেশ করেছিলেন। ১৯৬০ এর দশকে তিনি বারবার ছবির ব্লক দিয়ে নকশা করে পেইন্টিং বানিয়েছিলেন – এবং এমনকি ১৯৫০ এর দশকের কিছু প্রাথমিক পরীক্ষামূলক কাজ থেকে একটি নির্দিষ্ট বিমূর্ততা তিনি ধরে ছিলেন – ‘৭০ এর দশকের শেষের দিকে এবং’ ৮০ এর দশকে তাঁর বিমূর্ত কাজগুলি কোনও স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র নেই, একেবারে মৌলিক।
১৯৭৭ সালের ডিসেম্বরে ওয়ারহল অক্সিজেনেশন শুরু করে, তামাটে কমলা, কমলা এবং সবুজ শাক দিয়ে তৈরি অরক্ষিত ক্যানভ্যাসগুলি। আশ্চর্যজনক হল, এই ধরণের শৈল্পিক কাজে শিল্পীরা ব্যবহার করত একমাত্র ধাতব তামার রঙ the metallic copper ক্যানভাসের পটভূমিতে। আগে ধাতব তামার রঙ মেরে নিত ভাল করে। তার উপর বন্ধুরা মিলে হিসু/ মূত্র ফেলত।
ওয়ারহল তার বন্ধু এবং পরিচিতজনকে জারণ সৃষ্টির জন্য ধাতব রঙের একটি ক্যানভাসে প্রস্রাব করার আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। ইউরিক অ্যাসিড The uric acid তামার উপর প্রতিক্রিয়া করত, খাঁটি ধাতুর উপাদানগুলি সরিয়ে খনিজ লবন mineral salts তৈরি করত। কিছু রঙ তত্ক্ষণাত বিকশিত হত, আবার নীল এবং সবুজ রঙের মতো পরে হত। লাল বা বাদামী তামা অক্সাইডের উপরে on top of the red or brown copper oxides। ওয়ারহল এবং তার সহযোগীরা বিভিন্ন ধরণের ধাতব পটভূমি রং ব্যবহার করে নানা প্যাটার্ন এবং রঙ উভয় নিয়েই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছিলেন। সমালোচকরা ১৯৪০ এর দশক এবং ১৯৫০ এর দশকের শুরুর দিকের অক্সিডেশন সিরিজ Oxidation series এবং জ্যাকসন পোল্যাকের বিখ্যাত ড্রিপ পেইন্টিংয়ের মধ্যে অসংখ্য তুলনা করেছেন।
ওয়ার হলের পর অনেকেই এমন করে ছবি এখনো আঁকছেন, উপরে বাঁদিকে গ্যাভিন তুর্ক Gavin Turk, PISS PAINTING (OVAL) TITLE TBC,পিএসএস পেইন্টিং (ওভাল) টাইটেল টিবিসি, তামা তৈরি ক্যানভাসে প্রস্রাব করে অক্সিডাইজড ১১৭ x ৮৭ সেমি, ২০০৮ সালের করা।
নীচের বইটাতে সংগ্রহ করলে আপনি শিল্পীদের অনেক ব্যক্তিগত পরীক্ষামূলক শিল্পকর্মের সন্ধান পাবেন।
100 Secrets of the Art World: Everything You Always Wanted to Know From Artists, Collectors, and Curators, but Were Afraid to Ask, a new book by Thomas Girst and Magnus Resch.

চলবে

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।